Sunday 8 April 2012


পথ

বহুদিন যাবৎ আত্মসাৎ করে প্রজাপতি রঙ
ভেবেছিল বাদবাকি রঙ সব ফ্যাঁকাসে ; আয়েজনে
মাতোয়ারা মচ্ছবে
ভোজনে রসিক নাগর । আর আশ্চর্য এক ভ্রূণের
রসে মজেছে জঠর
তারা ভাবেছিল শুদ্ধ করে নেবো বিজ্ঞানে বাঞ্ছিত-অবাঞ্ছিতের
লালন দায়ভার ।

এতদিন যাবৎ ফুলের মত যা কিছু সত্য অভ্রান্ত অনুরণনের অরুণ জেগেছিল ;
পাপড়ি ভাঁজে অফুরান যৌন সংক্রমণ , আর নিষাদের মন জুড়ে
খানিক খানিক শরীর , সব সরীসৃপ গমনে
প্রতিরাতে ভুলেছে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ ।

আজ প্রতি আঁধার রাতে মাঠে জ্বালিয়ে ন্যাড়া ; বিধর্মী যতো বক ধার্মিক
সেঁকে নিয়ে হাত-পা
খুঁজে নিক খামারের ঠিকানা ; ওরা জানে কি
কত পথ পাড়ি দিতে আছে বাকি ?

হিম মানবী

এই শীত , তোমার বুকে রেখো ; লোমশ ওমে ।
কতকাল হয়নি ঘুম , কতকাল জেগে ; কতকাল অস্থির
এক হাসপাতালে গুনাগত দিনপাত । প্রণিপাত চাহিদার
বাণে মিছে যৌবন এসেছে ফাগুণ বোঝেনি সেসব কিছু ঝাউবন ।
এভাবেই বুকে রেখে দাও একশত বছরের বুভুক্ষ ; দিনান্তে
পাখির ডানায় মুছে গিয়ে ক্ষিদের গল্প মশগুল আগামীর
গল্পে , যদিও কালকে তাকে নামতে হবে পথে ।

এভাবেই রেখে দিও , ছেঁড়া অতীতের প্রচ্ছদ ঘেঁসে জন্মগত
একাকীত্ব মেরু প্রদেশের শীতল যাপন ; সুসংবদ্ধ অভিযোগের
নামাংকৃত চাতালে যৌবনের নাম লেখা প্রাপ্তির ভাড়ার শূন্য ।

কিছু উষ্ণতা দিয়ে এই হিম গ্রহন করো তুমি পরিনামে রেখো না দাবী ।
আমাকে উষ্ণ করে দাও এইবেলা কতকাল ধরে হিমে আছি পরে ।

Friday 6 April 2012

চার



একচল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ

৪১ ছুড়ে দেওয়া শব্দভেদী তৃণ ফেরেনা শূন্য হাতে
কিছুটা রক্ত তাতে লেগে থাকে ; রক্তই দিতে পেরেছে জীবনে
নেশা অথবা শান্তি নিশান , অশোক পেয়েছেন জীবন অসুকে।

৪২ মনে রাখেনা কেউ কারুর অনাহারী দৃশ্য ; মনে রয়ে যায়
নিজস্ব একাকীত্ব সেই সব সোনালী ধানের গুচ্ছ , আমি সিওললিয়নের
এক প্রাণ আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি আমলাশোল , সাদা হাউসে মহাভোজ ।

৪৩ বরমিয়ামে স্তূপাকার জঞ্জাল ; এখানে ওখানে নরখাদকের বজ্জ্য ,
ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন ইতিহাস মন্দির চুড়ায় ভক্ত , আলী কালী
মিশে গেলে শকুনের ভাড়ার শূন্য , রক্ত হয়েছে পথ্য ।

৪৪ বধ্যিস্নু গ্রাম ছিল আমাদের আঁকরে স্বর্ণখনি ; হেসে খেলে
সন্তান উৎপাদন পুতুল নাচে মেতেছিল বেশ ; এখানকার স্বর্ণ দিয়ে কংক্রিটে
মাতল যখন নগর নাগরিক ; হাফানিতে ধুঁকছে তখন গাঁ ।

৪৫ মাঝে মাঝে নেমে আসেন কিছু ঈশ্বর মাটির প্রয়োজনে ; আর সেই অবকাশে
আমরা সমৃদ্ধ করে নিই কিছু কথা ; জনতাভীরে পাঠ করে পাড়ানি তুলে নিয়ে
সাজিয়ে নিই অঙ্গ ; ঈশ্বর বোঝেন সব ; ফাঁকি দিয়েছি নিজেকেই











এক গভীর জল
থৈ থৈ কালমাস
আমার জন্মের কিছু সুনিদিষ্ট নির্দেশ
কাঁচা আঁধারে পথ খুঁজি একা ।
কতকিছু হতে পারতো ; তবু
হতে পারেনি
তাঁরই নির্দেশে ;
কতকিছু ডেকে ডেকে ফিরে গ্যাছে আমার জন্য
তোমরা শোন না বলে ;
কতোগুলো গাছ ন্যাড়া থেকে যায়
যদিও জল ছিল আলো ছিল
হাওয়াও ছিল বেশ







গন্তব্যে

আর কাঁটাছেড়া করছিনা নিজেকে;
এবার মোম আগুনে গলিয়ে নেবো শরীর ,
সেসব জ্যোৎস্না চাঁদে উত্তাপ ছিল আগুন না , অথচ
পতঙ্গ আগুন ভালোবাসে বারবার ।
নক্ষত্র বিলাসী প্রেমিকের পায়ে ঘোড়ার খুঁড়
প্রতিরাতে পোশাক বদলে নর্তকী
দাড়িতে চাপিয়ে কাল
প্রভাতে ভুলে যায় নটরাজকলা , তক্ষুনি সম্বিৎ
ফিরে বণিতার স্তন হতে মুখ তুলে প্রেমিক পুরুষ
এক দীর্ঘশ্বাসে খোঁজে নর্তকীর নূপুর ......
সময়ে চা জমে জল হলে
স্বাদ নেই জিভে
ভীর বাস হতে লোক নামে
গন্তব্যে মনে রাখেনা রাতের ইতিকথা ।









অনিয়ন্ত্রিত

অথচ এমনতর হবার কথা ছিল না । পুংতিতেই
রেখেছিলাম এক কথামালা আর ধানকাঁটা মাঠের শূন্যতায়
ছড়িয়ে ছিলাম আগুন ; পাশের সবুজ ক্ষেত দিয়ে যখন হুড়হুড়
দখিণা পবন কোন গন্তব্যে তখন সব ছিটিয়ে ভিখারি হয়েছে
মাঠ ; দেখছি তুমি নির্দ্বিধায় মাঠ পেড়িয়ে জলের উৎসে
আর আমি বন্দী শব্দে পাজলে ; তুমি আবডালে বলো ঘরকুনো ...
আমি ভিকারি , ভিকারির চেয়েও ভিকারি ।
এই শব্দ পাজল ভালেবেসেছিলে একদিন , একদিন হাতের আঙ্গুলে
জন্মেছিল সম্ভবনা ; ছবি এঁকে ঘর বানিয়ে গাছে তুলেছিলাম নীড় ;
ফল ফুল ডিমে মেতেছিল দুপুর , এতএব শান্তি প্রস্তাবে বেশ ছিল
রঙের মেলা ; বুঝিনি ঘর খানি সব নয় ... দাঁড়াস আছে পিছে
ভালোবেসে ডিমের স্বাদ ।
এখন রোজ দিন জনতা ভেঙে খাদ্য অন্বেষণে ; দেখা হয় মাঝে-ক্ষণে
নীল অনাবৃত আবেদনে ছুটছো তুমি ; তোমার অসহ্য তারুণ্য
পুড়িয়ে দিচ্ছে আমার চোখ , বুজছি শরীর যতটা তোমাকে সৌন্দর্য
করেছে অহং বাড়িয়েছে ততাধিক ।

অগত্য বাড়ি ফিরে আসি , ফিরতেই হয় অবশেষে , শব্দ পাজল খাতা
টেনে বের করি , খাতা ভরে চাঁদ আঁকি , বাদে সযত্নে ঝামা ঘষে দিই ,
একবুক আঁধার নামিয়ে ঘরে আদিম পুরুষ আর অনিয়ন্ত্রণে প্রথম রিপু;
মাঝরাতে খেলা করে ক্লান্ত , ঘাম এসে গেলে সব মিথ্যা , চিনচিনে
যন্ত্রণা নেই আর বেগ বারে প্রস্রাবের .........











সোজা হাইওয়ে ধরে ভাঙছে সূর্য ; রোদের
চিল চিৎকার । অসহ্য তারুন্যে যুবক রোদ
কার্নিশে নেচে দ্বিপ্রহর , ধবধবে ফ্যানা তুলে সেই যে
ডাকছে হাম্বা , বাঁকুড়ার লাল মাটি ফেলে চৌচির
বর্ষা মঙ্গলে ও নেই বৃষ্টির গন্ধ বাতাস !





বৃষ্টি

শুধু বৃষ্টি এলে দুমুখো হয়ে যায় সমগ্র সত্ত্বা ;
একদিকে তামাম বৃষ্টির ম' ম' গন্ধ অন্যধারে ভেজা
শরীরে লেগে থাকে তোমার যৌবন ; আর মস্তিস্ক জুড়ে
যুবক পিথাগোরাস ; মগ্ন জ্যামিতিক বিন্যাসে । তখন
পৃথিবী জুড়ে অনাহারের গল্প উহ্য রেখে প্রত্যেকটা দুপুরে
আমি নগর প্রেমিক , অথচ যথেচ্ছারে বৃক্ষচ্ছেদনেও এই
বৃষ্টির থামার লক্ষণ দেখছিনে আর ।

ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ায় সর্বদা নিয়ন্ত্রণে সর্বশক্তিমানরায় ; নারী
প্রেম অথবা বিয়ারের ক্যান অধিকারে শুধুই ফাঁকি দিয়ে এগোনোর
গল্প ; আজীবন মানুষ নিপাট প্রেম নির্ভর , অথচ প্রেমে ডুয়েল
একদিকে ঈশ্বর অন্যদিকে আমি !

সমগ্র বৃষ্টি জুড়ে হেটে চলছে আমার যুবক ; আরো কিছু নতুন পাখি
এখনো এদিকেই দৃষ্টি রেখে ;
বিলীন হতে গেলে প্রেমে একটা জীবন যথেষ্ট নয়
তাইতো ঈশ্বর আত্মার সৃষ্টি করেছেন !


















কিছু



সংখ্যাধিক্য ভীরে হারিয়েছে শৈশব ;
যুগাতীর্ণ প্রতিভা পিঠে ব্যাগ ।
একটাও সূর্য নমস্কারের সময় দেয় নিই পিতা
মানুষ হয় নিই যন্ত্র একটা হয়েছি খাসা











বিষাদ নাগরিক

দূর হতে গোধূলি গোরুর পায়ে পায়ে নামছে
মন খারাপের সন্ধ্যা ; শ্যাপলা ফুল হতে উড়ে গিয়ে
দিনের শেষ প্রজাপতি বলল কালকে আসবো ফিরে ।
ঐ দূরে দ্যাখো চেয়ে গাঁ ; আর মা কাকামি দাওয়ায়
সোনালী আলোকছটা রাঙ্গিয়ে দিয়েছে কপোল আর
হাতে হাতে বাঁধছেন চুলে সন্ধি গিঁট , আর এওর গায়ে
ঢলে পরছে আহ্লাদী সন্তানের মতো ; কিন্তু কোলকাতা
ডুবছে বিষাদে ।
দূরে আরো দূরে পিরামিড দেশে তুতেন খামের লাস্যময়ী
পৌত্রী এক যৌবনে কখনো প্যারিস হিলটন কিম্বা মনরো
হলিউড নগ্ন করে স্যুইটে ; তারও ঠাকুমা শিয়রে এসে
বলে যায় ওরে ভোলা ফিরে চল আমাদের গ্রামে ।

ভালো নেই নগর , ভালো নেই জলহাওয়া ; একসময়
মানুষ ছোট্ট ছিল বলে বিষাদের আভরণে মনন ছিলোনা
ঢাকা ; পার্থিব বস্তু সম্ভারে ডুবছে হৃদয়ের সমগ্র অঞ্চল
আর অপূর্ণতার আক্ষেপে আমি বিষাদ নাগরিক ।







এপ্রিলের দুঃস্বপ্ন

তখন দিগন্ত ধরে রামধনু অলীক অলীক স্বপ্নের ; ঝঞ্ঝার
পরেই আগুনের উত্তাপ মনের সরণীতে রঙের উৎসব ,
তবুও ক্ষানিক পরে নিভে গেলে আগুনের উৎস জোনাকিরা
করে দিনের আয়েজন ; আর কেরোসিন শিখাতে রাতের নিস্তব্ধতা ।
ঝিঁঝিঁর কর্কশ থেকেও আরো কিছু গভীর স্বর ডেকে ওঠে
খোলা আঁধারে , আমাকে বিহমিত করে তুলে নিয়ে যায় গভীর আবেশে
তারে পারিনা ফেরাতে !
দেখি এক আঁধার আসরে মেলেছে সংসার এক অবিনশ্বর আমারই
আমার পিতা পরমেশ্বর ," বলে কেমন আছো ? " ভালো আছি
ভালোই তো থাকবার কথাছিল , যেমন পরিনত শাবক ছেড়ে
চলে যায় জন্ম পিতা ...
তুমি তো তাও করনি , অথব তোমার মনে ছিল স্বাদ পিঠে- পাটালি
ল্যাংড়া আমে জেগে ছিল তোমার স্বাদ , কত দিন খাওনি ঘৃণা করে
উপেক্ষার এই দাবাকাশে ।

তুমি নেই বলেই ভালো নেই আমি , বোধহয় কেউ ভালো নেই
তবুও সম্মুখ সময়ে ভয় লুকিয়ে রাখা চাই জয়ের জন্য ।
এখনো এপ্রিল জুড়ে তীব্র তাপদাহ কাঠফাটা শূন্যতায় ভেসে ওঠে
বোরো ধান আর তিলের শুকনো গাছের উঠোনময় জঞ্জাল ।
আমি নির্লিপ্ত অনুতাপে কাজে অকাজে এখনো এপ্রিলের দুঃস্বপ্ন দেখি
প্রতিটি এপ্রিল শুঁকিয়ে দেয় আমার এক গ্যালন জল ।











গরু খিদিয়ে খেদিয়ে পাচন হয়েছে বড্ড শক্ত
লাঙ্গল কি পারবে এই জমিতে বুনতে শস্য ?
কাক ডাকা ভোরে উঠে পরে রামকানাই
আদালতে হাজিরা নইতো হাজত বাস ।
লাঠির বারিতে গরু হয়ে যায় মদ্দ ।









আজো চমৎকার মেনে নিয়েছ প্রপিতামহ আঁধার পক্ষ আর আগুন জ্বালিয়ে
দেখাচ্ছ আলোর পথ ; চমৎকার দ্বিচারিতা প্রপিতামহ । ঐ দ্যাখো দূরে শব্দ টঙ্কার
আর কিছু পাখি পরছে খসে ; এরাও ভালোবেসে ছিল জল কিম্বা নারীর সান্নিধ্যে ; অথচ
চমৎকার মেনে নিলে দূষণের কুরুক্ষেত্র ।
চমৎকার শুলচক্রপানি মহাধিরাজ ; চমৎকার জুগিয়েছ ইন্দন খুলে দিয়েছ শকুনের
ভাগাড় ! চমৎকার হাড় দিয়ে করেছ শস্য চাষ ; ভরেছে কি ধানের গোলা ।
ওহে সঞ্জয় ! দ্যাখো তো দেখি কি ঘটছে ওখানে , সবিস্তারে বর্ণনা করো এই অধমে !
ওহে চমৎকার ! অন্ধ নওকো তুমি জ্ঞ্যানান্ধ হয়েছ আজি । ওহে প্রাজ্ঞ কোন ধর্ম বলে
ত্যাজিলে আপন স্বজন ? সমগ্র বিন্দু তোমার ধর্মের বীজ ওড়ে ?









নিঃসঙ্গ

এক উদাসী মেঘ আর নিঃশব্দে হেটে চলা এক মেয়ে
নিরন্ন সময় ক্যাফেতে ভীর বাড়ে
অঙ্গুলের ডগায় আস্ত পৃথিবী ; অধিকারে জন্ম দিয়েছে জগত
আহারের আজো দেইনি অধিকার ।
দুই আমি লাল সালোয়ার পরলেও নাকি স্পর্শকাতর যায়গা
গিলে খায় দৃষ্টি ; অযাচিত বন্ধু হেতুবিনে পথ খোঁজে মাটি খুড়ে ;
আমি যদি বলি এই পথ গ্যাছে বেঁকে , সেও বলে গ্যাছে বেঁকে
দেখছি তবু সে চোখে চশমা পরে নেই ।
তিন অপ্রত্যাশিত শার্দূলে আমার সংসার ; এখনো পশুদের মাংস
দেখলে লালা ঝরে যদিও বিবর্তনে লালা চেপে রেখেছে ভেতরে ,
সকালে পেটে ভাত পরেছে কি ? বলে না , নিজামের গল্প বলে ।
চার এভাবেই হেটে গেছেন গহরজান থেকে বিনোদিনী অথবা
আমার ঠাকুমা ; বদলায়নি আঙ্গিক বদলেছে শুধু পেক্ষাপট ;
ভীর বাস আমি একা আর নিঃসঙ্গতা ;


















চার



লাইন

অতএব এখানে ওখানে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে
রক্ত ঘামে এখনো কাজ করি পাথর খাদানে ।
রোজ রাতে চাঁদ ডুবে গ্যালে চোখের মত
এক নিয়মিত আঁধার আসে ।
ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ থেমেছে অনেক আগে
পাশের মরা গাঙের ও নেই কোলাহল ; শুধু সঙ্গী ঝিঁঝিঁ
এক কর্কশ বিলম্বিত তালে গেয়ে চলে জীবনের গান ,
দূর থেকে ভেসে আছে কীর্তনের সুর , তখনি
স্বপ্ন দেখি সেই সিঁড়িটার ।
আশ্চর্য এক আলোকচ্ছটা ঠিকরে বেরুচ্ছে সিঁড়ি থেকে , লম্বা ,
লম্বা আমাদের ঐতিহাসিক ভাইদের লাইন
পৃথিবীর সমস্ত চরিত্র জমা হয়েছেন ,
আমিও দাড়িয়ে আছি এক কোনে ।

ঐ ঐতো আমার পিতা পিতামহ ! আজো লাইনে ? ঐ তো
দূরে সম্রাট খোঁজ নিয়ে ফিরছেন লাইন কতোটা পেরিয়েছে পথ ।

ইঞ্জিনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় , আলোতে খেলছে চরাচর ।
ভাবি লাইন অনেক বড় আর আমার পরে আছে অনেক কাজ ;
লাইন গুলো এগিয়ে যাক কিছুটা দূরে
তারপর না হয় লাইনে দাঁড়াবো ধীরে সুস্থে ।











ঈশ্বর অথবা .........

অহংকৃত বিশ্বাসে ঈশ্বর ক্রীতদাস আমি
গ্ল্যাডিয়েটর । নীরো বেহালায় সুর তুলছেন
রোম আমাদের বর্তমান ।
যেদিন হারুন অল রসীদ মরেছেন মরুভূমি
জল শূন্য ; টাইগ্রিসে লম্বা লাইন নারী পুরুষের
হাসান- হুসেন কতক্ষণই বা লম্বা লড়াই
করতে পারেন !

যেদিন হতে ঈশ্বর কুক্ষিগত দানবে ; হোমাগ্নি
যজ্ঞ ডুমুরে মিডিয়াম পুরোহিত ; সতীর পায়ের
অংশে মচ্ছবের আয়েজন
বোঝা উচিত ছিল সন্তান মনুর
ঈশ্বরের ফিরবার পথ আটকে গেছে ভীরে ।















ক্ষিদে নেই

নির্বাচিত শব্দ ভাণ্ডারে সেই শব্দ আর নেই
খুঁজে খুঁজে হয়রান ; নীলে চিল উড়ে যায়
খোঁজ রাখিনা তার ।
মাঠে খুদকুঁড়া খোঁজেন আমার মা ; মাথার উপর
সমগ্র রোদ ঝরছে স্রোতের বিন্যাসে ;
উদাস হতে চেয়ে মাঠে বিকাল আসে যখন
আমার মা ঘরে ফেরেন
আমরা পাঁচ ভাইবোন
এক সংখ্যার নামতা শেষ করতে পারি না ।

তখন থেকে সেই শব্দ এখনো পেলাম না ;
ছায় গাঁদায় মৃত আগুন
অথচ আগুন মৃত নয়
অথচ খাদ্য নেই
অথচ খাদ্যর অভাব নেই ।

সেই শব্দ এখনো পেলাম না ; মা বলেছিলেন
"ক্ষিদে আছে "
আমি খুঁজছি , তামাম পার্লামেন্ট জুড়ে বলছে
দেশে ক্ষিদে নেই
সমগ্র ইতিহাস থেকে এক রাতে ক্ষিদে শব্দ গেছে উবে...
আমি খুঁজছি
তবু পাচ্ছি না , দেখেছেন আপ্নারা ?

















বা পাশ

ইন্দ্রাতিত কিছু ঐন্দ্রজালিকা ইতস্তত ঘোরাফিরা ,
এমব্দিতিয়ং স্নায়ু কোষে একমাত্র ঈশ্বর পিঁপড়ে অনুভূতি
দিয়ে এক বিন্যস্ত জাল । সরল অথচ জটিল তর্কাতিত
মোলায়ম রেশমি সুতোই বাঁধা পুতুল ; নড়নে প্রমানিত
জ্যান্ত । সংবহন তন্ত্রিক নালিকায় বৈজ্ঞানিক জৌগ
ইন্ধনাগারে এক পিপে হাওয়া রসদের আবেদনে ।
অবিশ্বাস্য শল্পিক জরায়ুতে এঁকে দিলেন শিল্প আদিমতার ;
অথচ দ্যাখো চেয়ে কমতির অনুশোচনা বিনে ইভ নিয়মিত
প্রবাহিত জাহ্নবী ।
ভানুমতী নয় এখানে , এটুকু আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের
ছাত্রের কেরামতি , গণেশ পাইন আছেন পেছনে ।
এতএব ; বুকের বা পাশে এক পানপাতা সামান্য দ্যুলোক
অথচ ধীর স্থির নিয়ন্ত্রিত এক মহাকাশ ।
এক রক্ত আর কিছু মাষের অধিকারের নিয়ন্ত্রক মস্তক ...
আর পূর্বপুরুষ হতে এক সংক্রমিত রূপান্তরে এখনো
অনিদিষ্ট যা কিছু তার নির্দেশনায় বা পাশটায় সবকিছু ।






























তিন



একটা ক্ষিদে থেকে আর একটা খিদেতে যেতে
যতোটা সময় লাগে ততক্ষণ এক পা ও এগোই নি পৃথিবী ।

গরগরিয়ে রাস্তা ধরে " দোহা " ভাঙছে পথ , সব্বাই দেখছে...
তুলছে না কেউ ভয়ে যদি চেপে বসে বুকে ।

অম্লান বদনে পরমান্ন গলগ্রহণ করে উদাস রাহুল এখনো
চাহিদা ইচ্ছার তাড়িত বেগ অপ্রাপ্তি কান্না জল ।









গৃহ

পৃথিবী থেকে হারিয়েছে কবেই
গাছপালা পাখিপাখালি
পরশুরাম নিজেই ।
এতো নিযুত কোটি হাড় ছিল আগেও
এখনো বা কাজে বা অকাজে
অথচ একটাও দধীচি
উঠে এসে বলেনি আমাকে গ্রহন করো ।

গৃহ এখনো গৃহ হয়ে ওঠেনি
রক্ত ঝরিয়ে টু পাইস
আর ওভার লোডের বোঝা বয়ে
স্বাদ আছে শুধুই
নারী বুকে
গৃহটাকে এখনো সাজিয়ে তুলতে পারেনি
গৃহর মত করে ।















না জানা খবর

জেনে গেছি সব না জানা খবর।
কেউ ভাবতে পেরেছিল
ভালোবাসার বন্ধুত্বের দেউলি হতে হবে !
ভালোবাসার ছাড়াছাড়ি হয় জেনেছিলাম এত কাল , এখন দেখলাম !
বন্ধুত্ব কি খু উ ব গভীর ছিল ?
বন্ধুত্ব ছাড়ার আগ্রহ ছিলোনা কারুর ?
সব জানলাম , মনিন্দ্র , নির্মল সব্বাই প্রতিষ্ঠিত
হবার লক্ষ্যে সঠিক শিক্ষা নিচ্ছে
শুধু আমার বুকেই একে যাচ্ছে সেকেন্ডারি পাশের মালা ।

কবে কোথায় আলাপচারিতা ,
পলিও জেনে গ্যাছে আমার ব্যর্থতা ,
ভালই হয়েছে
মিথ্যাচার অপবাদ ঘুচল এবার !
বান্ধবী শুধালে লজ্জা পেত
এখন না হয় দ্যাখা হলে মুখ ফিরিয়ে নেবে
অচেনা যায়গায় বলুকনা কবিতা লেখে
জয় গোস্বামী , গীতা দেবীর মত নিঃসন্দেহে !
ধুস ! গৃহস্ত কবিতা কৈ ?

অনেক তো হোল লেখা-লেখি
সুপ্রিয় মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে , চিঠি দিয়ে ছিল
ঝুমার পরীক্ষার খবর জেনেছি
ইংলিশে ভয় আছে ;
কাকামা যেটে বলেছিলেন
যাবো , কিন্তু কোন অধিকারে যাবো ?
অনেক পুরনো রঙ জ্বলে গ্যাছে
তবুও কি মন হাঁসফাঁস করে না ?

পারমিতার বিয়ে হয়ে গেছে , কল্যাণী থাকে ,
কোন এক কালে চিঠি দিয়ে ছিল , ভাল আছে !
স্বামী বড় চাকুরীজীবী ,
আর্তনাদ গাড়ির কাছাকাছির মানুষ , বড় সুখের !

আর আমিতো হেটে চলেছি রুক্ষতায়
বুকে কোন ডিগ্রী নেই
কবিত্ব ? কবিত্ব কৈ কবির মত !
গোমাংস বিদ্যা ; ওরা আমার খবর সব্বাই জেনে গেছে ।

আরো কতকাল জানবে ওরা ,
আমি সেদিনও যেন না জানার মতই জানি
পলি বাপ্পা দেবা'র একান্ত প্রিয় খবর ...
আমি অকবি শব্দ বিচ্ছেদ করি ।









হিম মানবী

এই শীত , তোমার বুকে রেখো ; লোমশ ওমে ।
কতকাল হয়নি ঘুম , কতকাল জেগে ; কতকাল অস্থির
এক হাসপাতালে গুনাগত দিনপাত । প্রণিপাত চাহিদার
বাণে মিছে যৌবন এসেছে ফাগুণ বোঝেনি সেসব কিছু ঝাউবন ।
এভাবেই বুকে রেখে দাও একশত বছরের বুভুক্ষ ; দিনান্তে
পাখির ডানায় মুছে গিয়ে ক্ষিদের গল্প মশগুল আগামীর
গল্পে , যদিও কালকে তাকে নামতে হবে পথে ।

এভাবেই রেখে দিও , ছেঁড়া অতীতের প্রচ্ছদ ঘেঁসে জন্মগত
একাকীত্ব মেরু প্রদেশের শীতল যাপন ; সুসংবদ্ধ অভিযোগের
নামাংকৃত চাতালে যৌবনের নাম লেখা প্রাপ্তির ভাড়ার শূন্য ।

কিছু উষ্ণতা দিয়ে এই হিম গ্রহন করো তুমি পরিনামে রেখো না দাবী ।
আমাকে উষ্ণ করে দাও এইবেলা কতকাল ধরে হিমে আছি পরে ।
















দয়াময়



তোকে দেখেই ভাবি কর্মযোগী
মর্যাদা পুরুষোত্তম
অথবা শূলচক্রপাণি ।

সব সিংহ একসময়
সিংহ থেকে শুরু হতে হতে
কেঁচোতে গিয়ে মেশে





দয়াময়

আলোক বৃত্তের পিছু ছুটে চলা কিছু মেয়ে আর এক কাল ;
সমবেত জনসাধারণ সব উপোষী নবদ্বীপ পণ্ডিত
ঐ দেখো উড়ছে দোপাট্টা ; বেশ্যা মাগী কোথাকার ।
আর তারা কুমীর পণ্ডিত ওদিকে নয় এদিকে এসো
শিখিয়ে দেবো তোমাকে জীবনের সহজ পাঠ ।
আর তারা ধৃতরাষ্ট সপাট জানালা দরজা বন্ধ এসো প্রিয়মতা
জাহান্নামে যাক সময় এখনি আদর্শ রতি কাল ।

আলোক বৃত্তের পিছু ছুটে চলা কিছু মেয়ে আর এক কাল ।
এক ভাগার আর চিলের ছো মারা দৃষ্টি ;
এক শকুন গনলাশ ভাণ্ডার ;
এক নারী শরীর অনন্ত মৌমাছি হুল ফোটানো যন্ত্রণা ।

অনেক ভেবেছি আমি মধু মানে এক শরীর অথবা যৌনাঙ্গের আধার ।
অনেক ভেবেছি আমি মধু চন্দ্রিমা শুধু শরীরের খুঁজে নেওয়া অধিকার ।

এভাবেই কিছু মেয়ে হেটে চলে রামায়ণ থেকে
এভাবেই কিছু মেয়ে আবর্জনায় খুলেছে মধুর দোকান ; দয়াময় !






অন্ধ



যতটা সময় ধরে এক চাঁদ সাম্যবাদ তার থেকে
ঢের সময় ধরে ধনতান্ত্রিক ; এক বাল্য থেকে
এক যৌবনের পার্থক্য শুধু কিছু দৃশ্যের , আর
দৃশ্যান্তরে সমগ্র কালমাস ।

দ্বৈপায়ন লুকানোর সঠিক স্থান নয় , অথবা
গহন ক্রুজ নিরভেদি বাঙ্কার ; অথচ
রক্ত চাই শান্তি , অথচ শরীর পতনে শান্তি
অথচ সমগ্র ক্রুসেড জুড়ে রক্ত ; অলীক শান্তি ।











অন্ধ

এককাল ধরে আত্মহননের পথ খুঁজে
দ্বিতীয় জনমে প্রাপ্তি ;
প্রথম জীবনে তবে কি হয়ে উঠেছিল পাপী !

বিন্দুতে মিলে গিয়ে জ্ঞ্যানান্ধ সিন্ধু চেতনা
ভাস্বর হয়েছে মুখ ;
সিন্ধু তবে কি প্রস্তুত ছিল , প্রস্তুত ছিলিস না তুই !

পূর্ণতা ব্যতিরেখে পাপের আনাচে-কানাচে
পার্থিব সমগ্র ক্ষিদে ;
মূর্খ নয়রে জ্ঞ্যানপাপী ক্ষিদে টা কমছে ধীরে !

অহং বিদ্যা অহং শিক্ষা শীতলতার রাজ্য ;
উগ্র সুখে উগ্র দুঃখে
হয়তো দৃষ্টি ভ্রম নয়তো হয়েছে অন্ধ !

শিখণ্ডী


শিখণ্ডী 

একটা আস্ত জীবন ছিল বলার জন্য তবুও বুভুক্ষ নয় ;
অজয় নদী তীরে দাড়িয়ে ছিল অনেক শীত 
তেল মেখে ছিলও প্রস্তুত শরীর 
এক ঝাঁপের অপেক্ষা করে করে ফিরেছে ঘরে ছেলে \ মেয়ে
ক্ষিদে কি ছিল না তার মনে
জলে ঝাঁপানোর চাহিদায় ! এবং

শিখণ্ডী যখন পিতৃদেব কুরুক্ষেত্র পলাশ \ পাপিয়া
মথুরাপতি হয়েছেন কাল
সূক্ষ্ম সুতো নাচনেওয়ালা নিযুত কোটি
বললেই ইতিহাস হয় না কথা কিম্বা ঘরের ইতিহাসে
থেকে গিয়ে কিছুকাল , মৃত ; আর সবুজতা বাড়িয়ে
শাখা-প্রশাখায়
ভুলে গিয়েছে সে অনাচ্চারিত ইতিহাস ! বলো

তবে বলতে পারিনি বলেই কথা কি গ্যাছে ফুরিয়ে !
বলতে পারিনি বলেই আজ আমি পিতা \ মাতা
আর দেখছি যেসব রঙ মেলেছে নতুন সৃষ্টি
হাত-পা দাপিয়ে খেলছে শ্মশান পাড়ে
এখনো আমার শিখণ্ডী ভাবছে না বটে ! ভবিষ্যতে ?

মাইকেল ২৫


মাইকেল ২৫ 

কতদিন পরে তৃতীয় জগতে , উচাটানে সেই
হাঁড়িয়া মাদল মহুয়ার রূপ ; গন্ধ-বাতাসে
পরিমিত আমন্ত্রণ যদিও নিমন্ত্রিত
অতিথি নয় পাত্র ।
সাহেব হতে চেয়ে সাহেব রঙ মেখে দুরন্ত
দাঁড়ায় যখন খাটি বেলজিয়াম প্রতিবিম্বে
এক ফিক হাসি ; বুঝে উঠবার আগেই
প্রতিবিম্ব " এভাবেই বিজাতীয় ইতিহাস
গ্রহন করে জাতি "
ক্রোধে শত্রু মুখে সঁপাটে বজ্রাঘাত
রক্তে মিশে গিয়ে বিলেতি পারফিউম ;
পারফিউম আমাদের নয়
রক্ত খাটি বাঁকুড়ার ।
বুঝলে প্রতীপ , সর্বস্ব নয় ডলারের ঘ্রাণ
প্রাগের লাস্যময়ী । একটা পিকাসো
যা পায়নি মুখ ঘসে শরীরে
হা হা হা আমি পাবো ? মরণ !
মায়া নেই বুঝলে হে ......
মালতী হেমব্রুমের সঙ্গে হাঁড়িয়া মাদলে
পূর্ণিমায় যে মরাল পিছু ছোটে , সেই
বুঝেছে রত্ন শুধু দৃশ্য গুণে নয়
অনুভবে উজাড় করে হয় নিতে !

আধুনিক কবিতা


আধুনিক কবিতা 

ফুটপাত জুড়ে নোনা বসন্ত
পিরীতি জনুতে এক আগ
রাধাচূড়া ছেড়ে সাদা বক
তেপান্তর ধরেই
বনসাই জ্যোৎস্না
দাবানল ঘরে ; ঈশারায় পাখি বধ ।

ডান হাতে কালানিশভ স্বয়ংক্রিয় ; ট্রিগারে প্রস্তুতি
স্নান ঘরে জলের পতন
মধু সময়
নিঝুম দুপুর ; ঘুমন্ত শহরের নির্জনতা নির্জনতা নয়
কাক উড়ে গেলে
পরে থাকে শূন্য আর ধারালো বিকেল
সেসময় কাপড়ে রক্ত
এখন তুলোতেই ভবিষ্যৎ ।

এক ব্রম্ম
তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক চুল্লীতে উদাহ
সাতসমুদ্র ; চক্রে নধর ভেড়া
এক জীবনে ঈশ্বর বুলেট নিরভেদি
দ্বিতীয় জীবনে পুরুষ ।

আমি ১ আমার জন্ম



আমি ১
আমার জন্ম 


এক অলক্ষ্মী সময় দিয়ে বেড়িয়েছিল যে রঙ
উলুধ্বনিতে কাঁপেনি স্থানীয় বায়ু ছন্নছাড়া বৃষ্টি
ফোঁস নাগিনী দাঁত লাল করে পানে সিঁদুরে মেঘ ঠাম্মা
ওলো নন্দা পাচু এবার ডুববে জলে ।
এক ঝড়ে বদলে যায় গৃহস্ত অঙ্গন মালসা আগুন তখনো
ধিকি ধিকি নাভি রক্তে খেলা করে কাঁঠালের মাছি
মাটি হাড়ি মুখে মা রোদনে সুর তুলেছেন মনে মনে
খুঁজেছেন লবণের ভাণ্ডার ।
জানেনা নব্য সৃষ্টি ব্যাঙ্গের ভাষা অথবা চিনি লবণের
ভেদাভেদ বোঝেনা চিটে ধানে স্বাদ নেই বৃথা হেমন্ত বাতাস
আর মেলা শেষ করে ফেরে যেসব সাইরেন সঙ্কেতে
ঘাম ঝরিয়ে কর্মবীর তাদের মধ্যেই কেউ আমার রক্ত পিতা
অথবা পিতার পিতা জন্মবীর ; সেওকি ভুলে গিয়ে জন্ম আনন্দ
মেতে ওঠে শোকে ? জন্ম তবে জন্মের সবখানি নয় !
দূরে- কাছে নিভে গিয়ে আঁধার জলে তরঙ্গ নিয়ে এক অরুণে
জেগে ওঠে সমগ্র সৃষ্টি ; দাই দুই হাতে তুলে নিয়ে বরফ
দ্যাখ চেয়ে পাচু রঙ পেয়েছে তোরই ।

কাছেপিঠে রঙের হোলিতে মাতোয়ারা মতুয়া সম্প্রদায় ডাংকায়
হরি বোল ; চুল্লীতে বসেছে ভাত আগুনের ত্বেজ আছে রাঁধুনি
মাসীমা সাইবেরিয়ান শীতলতায় ;
বলো তুমি জনম উপেক্ষার আচ্ছাদনে পাঠিয়ে আঁতুড় ঘরে
জীবনের কি স্বাদ তুই করেনিলি পূরণ ? জীবন !

চোখ

চোখ






সৌভাগ্য বশত আমার একজোড়া চোখ ছিল
হা হা হা " কি যে বলিলে তুমি ? প্রথম শুনিলাম আমি !"
বলে যখন নরেন খুড়ো হুঁকোতে দিলেন ব্যোমটান
সঙ্গে কেশে-পেদে একসা
বিশ্বাস করুন আমার আমার একজোড়া চোখ ছিল !

"কি এমন বলিলে ভায়া ? আমার কি নাই ? এখনতো
সোজা পথ এক ক্রোশ দেখিতে পায় !"
নাহ খুড়ো অন্ধ তুমি হুঁকোই দেখে গেলে
আমার পেটে ইঁদুর নাচন দেখতে কভু পেলে !

শেষ

শেষ



শেষ প্রবাহে ভাসিয়ে অস্থি গঙ্গায়
উপদ্রুত অঞ্চল ভেঙ্গে আবাদি তরমুজ চাষে
ভরিয়ে নিয়ো ফসল ; সোনালী ধানের যে ক্ষেত
হয়েছিল সূর্য প্রতিদ্বন্দ্বী সেদিনও , তার
সিমাহীন ক্ষয়ে দ্যাখো এক গৃহস্ত
এক জন্মের ঘ্রাণ আছে লেগে !
নৈঃশব্দের পীঠে চরে আত্মভোলা হরিবোল
যাপিত যৌবন ; দ্যাখো নশ্বর জমিন
হাওয়ায় পেয়েছে ভাসবার অধিকার ।
শেষ দাবানলে ঘৃতের মর্যাদার অধিকার নেই
কাঠে জল শুখিয়ে রেখো শুধু যত্নে
শান্ত হোক তাড়াতাড়ি আগ ।

আধুনিক কবিতা ০২



যদি ছেড়ে যেটে পারি এক দম্ভ
তাতে লটকে দেবো আমার পরিচয় ;
দ্বিতীয় পরিচয়ে আমি আদিম
খুলে ফেলেছি সমাজের বস্ত্রের সম্ভার ।
খোলা স্তনে হোক চাষাবাদ
আমি সাম্য ; আমি সাম্যবাদ । 









আধুনিক কবিতা ০২

উগ্র অঙ্গার অক্ষুণ্ণ মাষ
গুপ্তভূমি ছায়
দাউ দাউ মেঘ
সামনে পারদ শ্রাবণ
বাবলা দাঁড়িয়ে এক পা'য়
জলে থৈ থৈ একবুক
রাত্রি ভীষণ জ্বালায় ।

গন পিটুইটারি কাঠ কয়লা
দৃশ্য নেশা আফিম
ছন্দে ছন্দে বারোমাস
বকনার ডাক অন্যতালে
ধম্ম ওদিকে মাতাল ।

এক তেজস্ক্রিয় ধাতু
চশমা নাকে জিনবিদ
এক পরমাণু হিরোশিমা
এক পরমাণু সৃষ্টি ।

আর আবদ্ধ নাগপাশে
সেই র‍্যাটেল সর্প
সম্মুখে বিস্তর শরীর
দংশনে আদিম বিষ নেই !

Post title আমি ০২ আমার বেড়ে ওঠা কিছুটা



আমি ০২
আমার বেড়ে ওঠা কিছুটা 

তখন থেকেই নিঃশব্দে সরেছে মেঘ অপূর্ব পারদর্শিতায়
উদাসী হতে চেয়ে মাঠ প্রতিদিনে ফাটিয়েছে নিজেকেই
একান্তে ; বাবা টোকা'তেই দেখেছিলেন ভবিষ্যৎ আর
এক একর রেখেছিলেন নিজের সন্তানে ।
অবাঞ্ছিত জনমে অপূর্ণতার স্বাদ লাঙ্গলের হাঁটলে অধিকার
রেখেছে অন্য জীবন পুরুষালী , আমার নয় , বলরামের ।
হিসাবের অংক ভুলে সাগুদানা অমৃত রূপ পায় যেখানে
সেখানে কান্না জল শুধু অপরের দুর্বিষহ যন্ত্রণা ।
জীবনের দায়ভার নিয়ে এসে জীবনে লাঞ্ছিত হয়ে যায়
আমার সময় , মায়াতে বেঁধে দিয়ে দাম্ভিক ক্রোধের স্খলন
পরিচিতের , সময়ের দ্বিচারিতা ।
বেড়ে ওঠা সময়ের গ্রন্থিতে অনাসৃষ্টির মান্যতায় বিভেদের
সুস্পষ্ট অভিরূপে ভাতের থালায় যতসব উচ্ছিষ্ট ;
শুধু লবণ লঙ্কার মান্যতায় স্বাদ আছে জৌবিক লালা কোষে
তবুও আমের গুঁটির ভাগ রেখেছি আমার কাছে ; ঈশ্বর ।

অপূর্ণ রাখিনি আমি আমার মন সংস্কার বধুর সাঁজ
দোপাট্টা উড়িয়ে হাওয়া অভিমুখে গোল্লাছুট আমার জগত ।
সুখী নয় বলে ধর্ম পিতামাতা অনুযোগে গোঁটা ঈশ্বর
জীবন দিয়েছিলে ভালোবেসে সেখানে ছিল কতোটা আমার দায়
!

জাতিসত্ত্বা


জাতিসত্ত্বা 

নিঃশব্দরা ফেলে রাখে যেসব বিবর্ণ রঙ
সেখানে আমি নেয় ; খুঁজে দেখো সমগ্র
গোঁটা অতীত প্রজন্ম ওখানেই সন্তান উৎপাদন করে
তাণ্ডব করেছিল সেদিন । তারপর

এই দিকে বিস্তীর্ণ সাঁকো । বিস্তীর্ণ গণবণ্টন এদিকেই ।
আর লাইন লাইন জুড়ে সন্তান সম্ভাবা মা
খুদ আঁচলে পরিযায়ী স্বপ্নে
সাঁকো পেরুনোর অঙ্গীকার
ওপাড়েই তাদের ঘর । কিম্বা

এখানেও আমি নেই । সব পরিশীলিত মুখে
দীপ্ত স্লোগানে স্তালিনের ভাবাবেগ ;
মিছিলের এক পা ধরে হুন্ডি এগিয়ে সংসারে
দ্বিতীয় পায়ে শুঁকনো বিস্কুট ; সাঁকো যথেষ্ট পুরোনো
এবেলায় পেড়িয়ে
ওখানে গিয়েই পাবো তীর্থকর ,
এখানেও আমি নেই ; রেখে গেলাম জাতিসত্ত্বা

শেষ সম্রাট


শেষ সম্রাট 

তিতিক্ষায় শিখে নিয়ে শেষ মোগল শা হন্তা নিজেই নিজের ;
নীল নীলিমায় কিছু উজ্জ্বল ধ্রুবক পঞ্চমী কাস্তে চাঁদ
দন্ত বিকশিত নিজের সৃষ্টিকেই অবিশ্বাসের ঘোরটোপ ,
বিশ্বাস নেই জীবনে বিশ্বাস নেই রক্তে বিশ্বাস নেই যন্ত্রণায় ।
সম্পূর্ণ হিন্দুস্থান তিনহাত ভূমিকেও নিজস্বতা দান করতে পারেনি
আপনার আজো । অথচ দুই হাতে উড়িয়ে হাওয়ার অভিমুখে
বৈভব পরাজিত রক্ত লাশ ধর্ম নিশান , শান্তি নাই ।
নশ্বর কিছু হিসেবী রাতে পর্যায়ক্রমে আলেয়া ভ্রমে সমুক্ষস্থ
ব্যাভিচারি কিছু জীবন এসে সঙ্গ দিয়ে যায় যখন
তখন সমগ্র রাত ধরে এই নপুংসক মৈথুন রাগে নাচিয়ে অঙ্গ
নির্দ্বিধায় হারেমে পদাঘাত ; ওরে শরীর এখনো জাদুতেই আছিস বটে ।
বিশ্বাস গড়ে ওঠেনা কোন বিশ্বাসে ; নিঃশ্বাস ধরে সেই অতীতের
ছায় ; যা আমার রক্তে আছে আমাদের রক্তে আছে যা
থেকে যায় গভীর অনুযোগে আমাদের কোনখানে একান্তে তোমাকে
রাগাবে বলে !

সব মিথ্যা , অক্ষাংশ মেপে পথ চলা নিরক্ষবলয়ে ঝড়ের পূর্বাভাষ ?
কতোটুকু জানা হয় এক জীবনে , কতোটুকু পাওয়া জন্মে !
সেই জমি খুড়ে তিনহাতের খুপরি ঘর অথবা আগুনের পরশমণি !
খানিকটা হেমলক দাও এই বেলা ......
পরাজিত মানুষটা চিরতরে স্তব্ধ হবার আগে ঝরে তো ঝরুক মায়ের দুইফোঁটা জল ...
শেষ মোগল স্বাধীন সম্রাট তাই চেয়েছিল বোধহয় ক্ষণকাল , আমিও !



যদি ভুলে যাও এভাবেই ভুলে যেও সহজে
কত নক্ষত্র গেছে ভুলে কত ছায়া পথ
তুলে নিতে পারো এবার আমাকে ঘরে জীবন
এক জীবনেই অস্থির সময় ।











আধুনিক কবিতা ০৩

সরে আসে পতনের সূর্য
একটা মুখ হতে দুটো মুখ
রাবণ মন
ধাবমান আগুনে পতঙ্গ
আঁধারে রঙ বিছানায়
শরীরের গতিপথ
হাঁসফাঁস যন্ত্রণা ।

তিনতে সার্কাস একসময়
এক জোকারের ,
অসহ্য , নাভিতে জ্বলছে চোখ
বালু ঝড়
সালিখের দিকভ্রম ; ইতস্তত ছড়ানো খাবার
অসময় ক্ষিদে আছে ক্ষিদে নেই ।

এক নদী গর্ভাশয়
এক ঈশ্বরে বিশ্বাসহীন
এক মন সমুদ্র মন্থন অথবা বিষ
বিশ্বাস উড়ে
মন্দির মরুপথে
বিশ্বাসে ভগবানের পুষ্টি ।

অনেক


এক



দূরে নিশাচর যেন দিনের চোখ নিয়ে অধির
উৎকণ্ঠায় আমার প্রিয় স্থানে একি নতুন আগুন্তক !
আর দূরে ফ্যাঁকাসে হতে চেয়ে রাত্রির গোপনতা
পুঁই ডগায় রেখে গিয়ে দিনের মায়া ফিরছে স্বপ্নে
আন্দোলিত অঙ্গন । কাল সমন্ত্রতান্ত্রিক রাতের আঁধারে
উপেক্ষিত পরিণতির আক্রোশে নিজেই নিশাচর ঘৃণিত জীব
যেন আঙ্গুলেই ধরে রেখেছে আস্ত এক যুগ 







২   




বলিনি মনে রেখো
আমার পরিচয়
গুছিয়ে নেবে যেদিন সংসার
আমি তখনো থাকবো ইঁদুরে হাত রেখে আরো কিছু কাল







প্রলুব্ধতার চাদে নেশা
তোমার বাহুডোরে একি স্বাদ পায়
চাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে
কলিতেও রাঁধা বানিয়ে দিলে হায়





০৪




তুমি অপদার্থ বড্ড প্রেমে
কথা দিয়ে মন জয়
আমাকে রেখে গেলে শেয়াল শকুনে
এটাই কি ধর্ম তোমার















০৫


স্বভাবতয় আমি মেনেছি সময়ের ধর্ম
তুমিও মেনেছিলে তাই
তোমার এক মন রাধাগোবিন্দে
দ্বিতীয় মনে ছিল শুধুই কাম







০৬


যে বিশ্বাসে মাঝি দাঁড়টানে
পাখির ডানায় হেমন্তের ঘ্রাণ
যে বিশ্বাসে বাবাকে জেনেছিলাম
সেই বিশ্বাস দেখিনি অন্য পুরুষে আর









তীব্রতায় অহেতুক ভুল পথ
আঁধারে ডেকেছে মাঠ
আজকের বিশ্বাস
কালকের ভুল বিশ্বাসও হয় তবে



০৭










অনুভবে লেখা ছিল তোমার নাম
তামার শরীর তোমার বর্ণপরিচয়য়
পরমাণু বিশ্বাসে ওম শান্তি আর তুমি
এখন নিজেকে রাখি কোথায়





এসো অতৃপ্ত মন
কাল সলীলে ডুবে যায় একা একা
পরিচিত গনগন পরিতৃপ্তির শ্বাস নিক
এই অভাগী মিলিয়েছে হাওহায়







০৯


পুড়ে গিয়ে আমার মাষ
তবু আগুনেই করি ভয়
যে পথ একসময় গেছিলো স্বর্গে
সেই পথেই পরে আছে আমার মৃৎ পরিচয়







১০




ঝরা পাতা কথা শোনেনা গাছের
তবু তাতেই গাছের পরিচয়
আমাকে নশ্বর করে দিয়ে
এইবেলা ঘর গুছিয়ে নাও







১১




ছিন্ন হয়ে গেছে যে বন্ধ
রেখে গেলে কেন তবু পিছুটান
এভাবে বাঁচিরে রেখে
কি লাভ পেলে তুমি দয়াময়









১২ 


জ্বালিয়ে দাও অনলে
খাক হয়ে যাক ক্রন্দন
বেঁচে আছি
এর থেকে আর কত দুঃখ দেবে তুমি