Friday 22 June 2012

কিছুমিছু ১৫



মুরগি

সব পাখি ফিরে গেলে আপনার ঘরে
দরিদ্র হতে আসে যে চাঁদ
তার গায়ে এঁকে দিয়ে যন্ত্রণার আল্পনা
কল্পনায় সারি সারি মুখচ্ছবি
যারা ছিল আপন
যারা ছিল আপনের থেকেও আপন
তারা দূরে দূরের নিশিপদ্ম
থোকা থোকা ফুটে আছে
অঞ্জলির অভিপ্রায়ে , অথচ
এখানে থাকার কথাছিল - পাশাপাশি
পুংতি ভোজের আসরে
ওদের গ্রাসে ছিল আমার ভবিষ্যৎ !

দূরে গেলেই ফিকে হয়ে যায় রঙ
এই দাম্ভিক সময়ে দাড়িয়ে থেকে
যতবার শিখে নিতে চাই বিভেদের
কুটিল ষড়যন্ত্র
দেখি দূরে নির্জন একাকী মরুপথে আমাদের
মেষপালক
দুই হাতে মেলে ধরেছেন সতেজ ঘাস
কতটাই বা খেতে পারে পশু ......

ঘুম ভেঙ্গে যায় , উঠে পরি , নেমে রাস্তায়
বুঝি পায়ের নিচ থেকে সরছে পথ ......
আর সেই সোহাগী বন্ধ'র দল
এক একটা খ্যাঁক শেয়াল , মুরগি খুঁজছে ......









গুরুদেব

তুমি জানতে বোধহয় একদিন আমি এসে খুলে দেবো
তোমার শেকলখানি মরমিয়া প্রান্তিক কবি ;
যা কিছু শব্দ আছে যতখানি জানার পরিধি , আমি
আধুনিক হয়েও আধুনিকের একবালতি গোময় হয়ে আছি ,
তুমিই জানো আমার সকল কথাগুলি !
যাকিছু লিখিনা কেন ভেবে- চাবুক মারছি বুকে - কবিতা নয়
যা লিখছি কবিতা সিংহ নিনাদধ্বনি ...
না না সব ভুল - সব কথাই লিখেগেছেন আপনি , কবি !

তবুও , দেখি পরিচিত অপরিচিত জনসমাগম ছাতিমতলায়
বারুদের অস্ত্রাগার , তোমার লালিত্যভূমিতে শেয়াল শকুনের
পদচারণ , আগুনে জ্বালিয়ে সৃষ্টি সম্ভার পতপত রঙ্গিন পতাকায়-
রাজা বলছেন আমার ধর্মের বীজ বুনবে এখানে , বিদ্রোহী
বলছেন সুচাগ্র ভূমি ছাড়বে কেন আমার সন্তান !
আর জন্মতিথি জুড়ে মচ্ছবের আয়েজন-----
সবাই কে ফাকি ফিয়ে সবাই এগিয়ে যাবার লড়াই !

এইগুলোই চেয়েছিলে তুমি ? পূজা মূর্তি কাকের বিষ্ঠা !
হাজার ভীরের মাঝে হারিয়ে তুমি , কিছু ধান্দা কিছু ব্যবসা
কিছু ভণ্ড কবিয়াল তোমাকেই নামিয়ে পথের ধূলায় ...

ফিয়ে এসো কিছু যুগাতীর্ণ কবি ......
অনেক নেমেছি নিচে , আর নয় , আর নয় মিছে জন্মতিথি
তোমার জন্ম দিনে নেমে আসুক এখানে এক নতুন ঈশ্বর





বন্ধু

আমার সংস্পর্শ হতে পালিয়ে যদি বেঁচে যায়
কিছু বন্ধু - তবে তাই হোক ।
সৃষ্টি তে নিমগ্ন থেকে তারা খুঁজে নিয়ে মানসী
প্রেমিক প্রবর পিতা হয়ে একদিন-----
আমার এই ভয়ানক বাস্তব গল্প কথাও
মনে পরে একবার;
আমিও হাসি মুখে মেনে নেবো সময়ের
যাবতীয় অত্যাচার !
তবে তাই হোক , ফালাফালা করে দিয়ে হৃদয়
সময় নুন দাও কোষে কোষে
এযাবৎ ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করেছে নীল পাখি
এবার চুপ -
গান থেমে গেলে জীবনে ভূমিষ্ঠ ভবিষ্যতে
রেখোনা একটাও প্রাচীন সূর্য
নতুন আবেদনে তুলে নিও তোমাদের যোগ্য বন্ধু----

তবুও কেউ জেনে গেল না এই মাউস ঘরে বাতাস নেই
দমবন্ধ ঘরে হাজার জানালা খুলে দিয়েও
আলো নেই , নেই বৃষ্টির ঝাঁঝালো স্বাদ ...

কখন যে ভুলে গিয়েছি আমি এক মানুষ ছিলাম
কখন যে ভুলে গিয়েছি আমি এক মেয়ে ছিলাম ......
হাতড়ে হাতড়ে অবাক হয়ে গেলাম ...
আমি ধরতে পারছিনা তোমাদের ......

ইতিহাস একমুখী চলনে সিদ্ধহস্ত ......











রাতে , ঘুম ভেঙ্গে গেলেই টুপটাপ ঝড়ে পরে জ্যোৎস্না -
অতীত শুধুই দৃশ্য সুখ ,টেনেহিঁচড়ে যন্ত্রণা
শরণাগতর কাছে ফেলি না - ভাললাগে কাঁদা ঘেঁটে
গায়ে মেখে দুঃখের কবিতা লিখে যেতে !
প্রথম প্রথম সহানুভূতির চোখ গুলো মনে হয় শিল্প -
যেন হাজার বছর আমাকে উষ্ণ রাখার অভিপ্রায়ে
আর আমিও নট নাট্য গোগ্রাসে গিলে সহানুভূতি
লিখেফেলি "প্রিয়তমা এক জীবনে আর কত দুঃখ দেবে? "

রাস্তা নেই বলে থেমে গেছে যেসব হাঙর বাস
তারা ইঞ্জিনে মানুষ
দাড়িয়ে পথের অপেক্ষায় ......
তুইও তবে ইঞ্জিন হয়ে গেলি ?







সভ্যতা

ভগ্নপ্রায় সেই পাথর খোঁদলে যূথীবদ্ধ নগ্ন পা - ঈশারা সংকেত
ভীমনাদে ছুটে শিকারি- থরে থরে সাজানো কাঁচা মাংস
বধ্যভূমি উপাচারে মণ্ডিত উপঢৌকন ঈশদ খুশী চোখে
ঈশ্বর ভেট - বলি শান্ত হ এই ঝড় রাত ... এত্ত আগুন
আগুনের অভাব দাত গুলো কি গড়েছ তুমি শ্বাপদের ন্যায় !

তারপর দলে দলে বিভক্তি ; প্রকাশ্য নগ্নতা দিয়ে নগ্নতা বধ
ধনুক ছিলা পাথরের সুকোমল অস্ত্র ভাণ্ডার
শরীর খাওয়া শরীর গুলি প্রতিদ্বন্দ্বী সমরাঙ্গন রাত- ভোর আলো উষ্ণতা
থামেনা যুদ্ধ , যুদ্ধ থামলেই খাদ্যভাব !

অথচ অনন্ত শান্তি ; খুঁটে খাওয়া হাতেই সাম্যবাদ স্নেহের গল্প ,
আর আগুনের গল্প নেই বলেই
আঁধারে মুখের রেখাগুলো আমারই মত , ঐ কাছে যে বসে
আমার ভাই অথবা আমার কেউ নয়
তবুও আমারই সমব্যথী ......

এলো কিছু আগুন শিকারি খুঁজে নিয়ে আগুনের উৎস
আমাকে বন্দী করে নিয়ে গেল আগুনের পাশে
দেখি পাশে বসে আমার ভাই , চেনা মুখ তবুও চিনছে না...

আমি মহারাজ ......
নারায়ণ নয় আমি পেয়েগেছি নর সেনা
সমগ্র বিন্দু আমার ধর্মের বীজ বুনে ফিরে আসে করেনা প্রতীবাদ









সমারোহ

ঐ তো ভাব সমারোহ ; রোদে জলে পাতায় ছুড়ে দিয়ে অঙ্গ
মানুষ সৃষ্টি হ'ল ;- অনুভব খেয়ে নিয়ে পাসা
কাগুজে বন্ধনে কিছু সম্পর্ক আমাদের , আমাদের
পূর্বজীবনের ; এবার তবে কোন পুনজন্মে
রথ কলা বইচিরামের হাট
আর রোজ নিষিক্ত হতে হতে আত্মা
কোন সে জীবনের কথা বলে ?

চৌকাঠ মাড়িয়ে আঙিনায় গমন , ছায়া রোদে চিল
ধানের স্বাদ আমাদের হয় ? আমাদের
হয়েছিল কোন দিন ?
বিকৃত ক্ষয় নিয়ে আমাদের ছায়া - কল্প ইতিহাস ! অথবা
আমাদের নয় যেসব মা দেশ ভাই
তারা আপন নয় ঈশ্বরের আমাদের !

নষ্ট , নষ্ট সামগ্রিকতায় দিন রাতের উপন্যাস ......
কিছু সন্ন্যাসী যে পথে আজো
মায়া ভুলে.........
ঈশ্বর হতে গেলে বন্ধন মুক্তি .........
জীবনে মায়া অনুচ্চারিত ক্রন্দন ......






বিশ্বাসঘাতক সব মেঘরঙ ফিনফিনে শান্তিপুরী
শাড়ি , বিশ্বাসঘাতক দুষ্টু প্রজাপতি কাল
শ্রাবণ নিম্বাস মেঘের দল ......

সেই করে থেকে আগুন সংসার
এক রান্না রাত আঁধার
এক ক্ষয়
এক শরীরে হাজার পরী ...
বুনো গন্ধ
আমার কুঁড়ে কুঁড়ে খায়

ঘাতক নিজেই নিজের হন্তা সর্বদা
একটা বিশ্বাসঘাতক একটা হৃদয়ক্ষয়
 ·  ·  · May 7 at 10:48am · 

রহস্য

অতপর হারিয়ে যায় সব পরিচয় , মেঘেরাও খুলে ফেলে
রণসাজ - বাসর খেলায় মজে রাত ;
ইতস্তত সমস্ত বিভ্রান্তি সেই ঈশ্বর থেকে
ঈশ্বর থেকে দুই জন্ম এক মৃত্যু আত্মগলিত সঙ্গম.........

অপরিমেয় উষ্ণ বাদল ঝঞ্ঝা জতু জঠর ভ্রূণখোর সাপ
মৃতবৎসা'র স্তনসুধা হায়
কোন রাতে তবে ফিরে আসে পথ ভুলে জীবন ভালোবেসে
বক্ষ ক্ষেত হড়িয়ালের আমন্ত্রণে ?

নিম্নাঙ্গ জুড়ে'ই ত্রিকাল পুরুষালী শাশ্বত আত্মগরিমা ; যুগপৎ
আসক্ত নেশা নিজেকে লুকিয়ে নিজেকেই খোঁজা
মাঠকে মাঠ জুড়ে এক শূন্য
মা বোঝেনা এতশত দোষারোফে মূর্তিমান ......

প্রস্তুতি শুরু নোংরা পচা রক্ত পেছনে ফেলে সেই অতিতকাল ;
স্ফীত অঙ্গ লোভাতুর চোখের ঈশারায় নয় প্রস্তুত...
আরো গভীর রহস্য লিখে রেখেছেন সৃষ্টিকর্তা সুদূরকালে
একই অঙ্গে দ্বিধারা জন্মে আছি এবার তোমার প্রেমে খুঁজে নেবার পালা ...
 ·  ·  · May 7 at 9:27am · 





পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কৃষ্ণা
( যদি বাঁশরিয় না হয়) রেড লাইটে
নিতম্বে'র অনুচাপ
জ্যান্ত শকুন
দ্বিপদ যেকালে বিলীনের চাঁদ ,
আমি নেই তখন
হাহাকারে এক জন্ম
মা নয় , নয় বঁধু
মধু শিকারি
প্রতিটি আমি
জানোয়ারের প্রতিনিধি



রোগশয্যা

আর খানিকক্ষণ আলো রেখো জ্বালিয়ে
স্যালাইন বোতলে বিষ ঢুকিয়ে শেষ লড়াই
মৃত্যুতে নয় যত ভয় ছিল জন্মে ; অষ্টাদশ দিবস
নামলো বোধহয় , সঞ্জয় আমি কিছু শুনছি না কেন ?
সচারচর নিষ্কর জমি নারী'কে ছিনিয়ে নিতে হয়
মরণের , আর তর্জনীতে নাচিয়ে দিনকাল
অস্থাবর বাড়িয়ে কেবিনে দ্যাখো দিব্যি শীত ঘুমের
প্রস্তুতি ; ঘুম আসে ? ঘুম আসে না ?

মরণ

অহেতুক নয় বংশী , কারন আছে বলিষ্ঠ জোরালো এবার ;
অনেক বসন্তে ফলিয়ে ফসল সুখী নই ?
প্রেমে হারজিত মাপিনি বেলুনে তুলেছি নিজেকে অহরহ ,
পাইগণ্ডা ছারিনি শরিকে , সমগ্র মাঠে আমার ধর্মের
ফসল ফলিয়ে ক্লান্ত আমি ?
এখনো অনেক বাকি আছে , বীজতলা জল সিঞ্চন ,
অগ্রহায়ণে ধানের গন্ধ নবান্নের সে সব রাতে ...
এক পাগলী
আমাকে পাগল করার আগেই .........

জন্ম

ভয় নেই আকাশে ভেসে থেকে ...
কতবার পৃথিবী ঘুরে গেল আমাকে পেছনে রেখে ...
বিশ্বাস ছিল জলের কাছে মাটির কাছে স্নেহ চুম্বনে ...
ফিরে আসে প্রিয় এভাবেই
এক রোগ এক মৃত্যু এক হাহাকারে
ভুলেছি জন্ম
ভুলেছি মৃত্যু
ভুলেছি দেশ কাল পিতৃ পরিচয় ...
যত ক্ষেদ ক্ষোভ নবান্ন স্বাদ ঠোটে
খোলস বদলে নিয়ে
দ্বিতীয় জীবনে ......







একাকী সেই মেয়ে , এক বৃদ্ধর ঘাড়ে চেপেছিল
নিয়মে ; তার আপেলত্তের দিকে তাকিয়ে গোটা চোখ
নির্লজ্জ সম্মানহানি , বুড়োর কি এখনো বাহাত্তুর ধরেছে ?
কাঁকড় চালে জেগে থাকে যেটুকু ভবিষ্যৎ
অর্ধপেটে আলু সিদ্ধে জাতীয় জীবন
মাউস ঘুরিয়ে স্যানফান্সিস্ক'র রঙিন অপ্সরা - ক্যাপিটাল
ঢেকে উর্দিতে ......
এই তো দিনগুলো তে আমরা উন্নত প্রজাতি !

তবে প্রেম নয় ! আরো গভীর কিছু ক্ষত নিয়ন্ত্রণ করে
জীবন ; হাজার উপড়ানো স্বপ্নে পা মিলিয়ে
এক বুলেট -- রক্তরস আমারই ......

কেউ বোঝেনা কোনদিন গোপন ভাষা ......
মুখে'র হাসিতে কত ক্ষিদে আছে মিশে





মৃত্যু বিষয়ক ০৯

অথচ দানবেরা কতকিছু রেখে যায় - মৃত্যুর
আগে পরেও বা ;
কিছু দিতে পারিনি আমি , সোনার নেকলেস
রঙচটা বাড়ি এমন কি রেখে যেতে পারিনি
দ্বিতীয় পরিচয় , যতবার
ফ্যালফ্যালে চোখে আকাশের দিকে তাকিয়েছি
যেন সবগুলো ধ্রুবসত্য তারা
আমারই মত নির্লিপ্ত থেকে বলেছে----
সব স্তব্ধ হয়ে যাবে একদিন ;
সব রঙ একদিন বিবর্ণ পাতায় উগ্রে দেবে ক্ষোভ ।

এসো , এসো অতৃপ্ত আত্মা ----------
কাল সলীলে ডুবে যায় একা একা , পরিচিত
জনসমাগম নিঃশ্বাস নিক প্রাণ ভরে পরাজিত
মানুষটি চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেছে জেনে ...
মরণে কি সব স্বাদ যায় মুছে ?

অজান্তেই কত প্রাণ ঝোরে গেলে
কতশত অশ্রু ফল্গুধারা ............
যদি কাঁদতেই হয় মরণে --- কারুর , কেঁদো একবার...
দমচাপা ঘরে এই পাণ্ডুলিপি ভিজিয়ে দিও জলে...
অনেক আগুনে পুড়েছে শব্দ - জীবনে ......









তিন কবিতা

০১

সব বসন্ত বাতাসে নদী আপন গর্ভে
কাছে এসেও খুঁজে না পেয়ে জল - সেই নীলপরী
মৎস্যকন্যা'কে দোষারোফ করলো বটে
না পাবার যন্ত্রণায় --- আমি জানি শুধু
সব নদী এখনো প্রবাহিত গৃহস্ত সুখে !

০২

কিছু পথ ধরে আসা যাওয়া উড়িয়ে ধুলা ,বৃথা রাখাল বালক
বাঁশরিয় মন ময়না ;
খই ছড়িয়ে গোময় ছিটিয়ে পবিত্র আকাশ
না না তাকাবো না বাঁশকাঠি ধান গোলায়
এবার মায়া রেখে যাক সন্তান
গৃহ কি গৃহ হয়ে আসে জীবনে !

০৩

ভালবাসলে কেঁচো মুখ তুলে দ্যাখে পৃথিবী নেই ;
নেই গ্রাম সীমান্ত প্রাচীর উর্দির ভয় ভীত দৃষ্টি ,
সমস্ত মরাল ভুল করে পথ জল কেই করে নেয় শত্রু,
অথচ এতো সব ভুল করি
এতো মিছিলে লড়ায়ে রাজপথে আমাদের আমি ......
আমিও যদি একবার দেখতে পেতাম পৃথিবী নেই .........







স্বর্গ হতে দূরে ... ০২

০১

সেই পাঞ্জাবী আবার চাপিয়েছি
যেটা প্রিয়ছিল আগুনের চেয়েও তোমার
শুধু বিপ্লবে পরতাম
যদিও সেই সব পতঙ্গ
যারা ভাল বাসে নিজেকে
আগুন পূজারী
আমি হিম হয়ে গেলাম ।

০২

দুর্বোধ্য সঙ্কেতে
ছায়া-রণ নিজের
চুম্বনে বিকালের ঘ্রাণ ফেলে সুবেশী নাবিক
অতলান্তিকেও কি নোঙ্গর ফেলে
গৃহের ?

০৩

এদ্দিন পরে
কলজে'তে এক যুবক কাল
ঘুম ভাঙ্গেনি যেসব
রাত্রি পিশাচের
তারা তবু
এখনো চোখ উল্টিয়ে ভয় দ্যাখায় !

০৪

ভয় ছিল না জ্যান্ত জীবনে
মরণে অনেকটা বেড়েছে
নাগ ফণাতে ডরায় নিই শিশু
তখন
এখন ফোঁসফোঁস শব্দে
রক্তের গতি কমছে ।

০৫

চেনাজানা সমস্ত দরজা জানালা
গরম তেলে লাশ
ষাঁড় বাহক বিশারদ সম্মুখে
প্রস্তুতি সারছেন সময় ;
কাছে দূরে
ফ্যাঁকাসে চুলের অগ্র
খড়কুটোও হতে পারেনি
ডুবন্ত সময় ,
প্রেমে- অপ্রেমের দ্বন্দ্ব
স্বর্গ প্রাপ্তিতেই বুঝিয়েছেন দুর্বার সময় !







রংঘর

জলের বৈধ-অবৈধ প্রকারভেদে ছিনিয়ে নিয়ে প্রাণ
পয়ন্ত এক অট্টহাসি হৃদয়ের ; ক'জন বা
দুঃখকে বলে যা ঘুরে আয় হাসি পাহাড়
এখন যে অনেক কাজ বাকি । ধূধূ প্রান্তসীমা
ঘিরে সেই তো রোদের নৃত্য , লু , বালিয়াড়ি
শুকনো পাহাড়ে'র খাদে বসতঘর আজীবন
নিঙরে রক্ত কালঘাম , হাস্যবিশারদ ক্যাবারে
শোক নেই তাপ নেই , পিস্টনে চাপ বাড়ে ঘূর্ণন
শুধুই চাকা ... ঘোরে তেল রাস্তায় ... কি জানি
এই রাস্তায় কিছু ঘর ছিল একসময় এখন শূন্যতায় !

গ্রাম ঘর বসত দূরে নিথর শামুক ; প্রাচীন বিদ্যায়
মুলিবাঁশে পেরেকের আন্দোলন
সবকিছু কি ভুলিয়ে দেয় সময় ?

ক'জন ই বা বোঝেন আত্মচরিতে জল বাহক চোখ
শুধু আমার নয় , সেই হিমাংশু পট্টনায়ক কাদের মিয়া
অরুন্ধুতি সেন যেভাবে ছবি এঁকেছিলেন হৃদয়ে
আমারটাও ততোখানি ......... কিম্বা নয় !

ঘর গুলোই থেকে যায় শুধু দুর্দিনেও অসহয়তার প্রতীক হয়ে ......
আমিও অন্যঘরে রঙ মাখিয়ে
বুরুশে তুলে রঙ তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম ঘরের নিবিড় খোঁজে ...
যদি পেয়ে যায় অবেলায়





কি নাম দেবো ......

বিলতে পেরেছি বলেই , তোমায় পেয়েছি
ধরতে শিখিনি বলেই , হারিয়েও তোমায় হারায় নিই

আজকাল শব্দরা ভীষণ কৃপণ বুঝলে ,
আজ কিচ্ছু ভাল লাগছে না ,
মনে হচ্ছে আমি একা নই তবু একা ,
এক চাপ আমার বুকে চেপে বসছে ......
সরিয়ে দিয়ো তুমি আজ রাতে ......
মন্থিত শব্দ ভাণ্ডারে শুধুই একশব্দ তুমি ......
আমি নশ্বর ,
একদিন ফাঁকি ,
তোমার গাছ রাখবে তোমায় মনে ,
হারিয়ে গেলে খুঁজে দেখো আমার মাটি ,
জন্মে নয় , সমাধিতেই আমাদের পরিচয়
আমাকে নিয়ে এভাবে খেলো না সময় ,
দাসরাও দেখো দুদণ্ড সময় মাগে ,
বিসর্জিত প্রস্তুতি করেছি সারা ,
একবার ডাকলে সলীলে প্রেম ভালোবাসা
মঞ্চ আসর তাসের পার্টি হাজির ...
সংখ্যা দিয়ে রাণী বধের খেলা
চোখের ভাষায় উদাস কালো মেঘ ,
জল নামবে হয়তো ধীরে ধীরে
অনেক পতন অনেক লেখা লেখি ,
সপ্তঋষি চোখে অহনিশি
দূর্বার এই অভিপ্রেত স্রোত ,
তুমি ডাঙ্গায় আমিই ভেসে চলি
বজ্রনিনাদ শঙ্খ উলুধ্বনি , শূন্যদৃষ্টি শূন্য সৃষ্টিখানি , অতল সুনীল
গভীর মনের খনি ......






মৃত্যু বিষয়ক ০৮

ওহে নশ্বর , আগুন শ্মশান স্কন্ধকাটা শব ,
আর আমরা ,
একবাতি নিয়নে কাদের নিয়মের রাজত্ব ?
হিঁচড়ে টেনে আনবো আমি , এক লাইট পোস্ট
এক আগুন , বাদবাকি অন্ধকার ...
তোমার নিয়মে জন্ম
শুধুই হিচুর কারবারি , অথচ দালাল বেশ্যা বসতবাড়ি
রঙচঙে ট্রেনে চড়ে জনপথ ফাঁকি , ধান্দা পাইস ইনকাম
ট্যাক্স ট্যাক্সি সাটেল মোটর
ইঁদুর দৌড়ের আসর ... খোলা ইতিহাস পাতায়
রক্ত ঘাম জল প্রেম
নিস্প্রিহ চাহুনি বকুনি বেগুনী হিংসুটে পাংশুটে বিবর্ণ
মুখমণ্ডল ... অপদার্থ ,
দেখ চেয়ে ........................
শ্যাওড়া গাছে'র দায় নেই সময়ের শব্দের শরীরের মনের ...

একবার চেপে ছেপে দে নিজের শরীর প্রতিবিম্বে
শান্তিতেই সমাধি দেবতার !
 ·  ·  · May 4 at 7কবি

গত পঞ্চাশ বছর এক কলম লিখিনি আমি
গত পঞ্চাশ বছর সব কবি নিজস্ব দাসত্বে ।

আজ এক কবি মরছে হাসপাতালে তিলতিল
বাঁচা গেল , শালা খচ্চর
নিজের জলে কাঁপিয়েছে কলমদানি ফুলস্কোপ ।

শালা , গত পঞ্চাশ বছর
গত পঞ্চাশ বছর এক কবি লিখে এক মুঠো ভাত দেয়'নি
আমার পেটে
যাবো , যাবো শোকসভায় কবির ......
বিড়ি রেখেছি কানে গুঁজে
আলুরদম পরোটায় পেট ভরাবোই ভরাবো ......
লেখ কোটি কোটি কবি ......
রোজদিন শোকসভা ...... হা হা হা , পেটে ভাত

বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ কবি কবিতা লিখুন জোরকদমে
হাড়িয়া মুরমু আছে লাইনে ...
জীবনে দাওনি , মরণে দিতে চাইলে খাবার ......
আসো কবিতা লিখি









মৃত্যু বিষয়ক ০৭

অপবিত্র নয় ছায়ামূর্তি ভুশণ্ডি'র অতি বিপ্লবী সন্তান ,
এক কালে অপূর্ব জাদু বিদ্যায় স্তনে দুধ এনে
আমাকে দেখিয়ে জৌবিক উপত্যকা কালো বিড়ালের
ন্যাজে পগারপার ...
সেই থেকে বিড়ালের সঙ্গে আড়ি ......
যদিও প্রতিটি চরিত্রই শববাহক
ডোমের চরিত্রে বৈকুণ্ঠ অধিপতি ...
আর সকলের জন্মের আগে সাত কাহন
তবু কোন জলে ভেজেনি শ্মশান অগ্নি ।
( ভুত ভবিষ্যৎ )
কি দেখছো তুমি প্রিয় ?
কণ্ঠনালী ভিজিয়ে নিয়েছ জলে ?

বুঝেছি বুঝেছি , বারবার আমার টিনের চালে তোমার
পদধ্বনি , তুমি এক শিল্পী আমি শিল্পখানি ......
ভুশণ্ডির মাঠ কাঁপিয়ে এক নতুন অতিথি ...
আমার মধ্যে তুমি তোমার মধ্যে আমি 







অর্ধ মৃত

পারতো আলিঙ্গন করে নাও ভালোবাসা , অনেক
পুড়েছি ; রাজী আছি শিকার হতে , দেখে নিও শুধু
তৃণে যেন না থাকে পুরনো রক্ত !
একবার ধুলিজন্ম , এক পতন , এক স্রোতে
প্রবাহিত ধারা ধরে ভণ্ড জোঁক
ছারবেনা আধিকার সে ......
পারতো উষ্ণতা দিয়ে লুকিয়ে রেখো !

তবে তাই হোক ! আসমান জমিন ফারাক আমার সঙ্গে আমার
শরীর কতখানি শরীরের
মেধ চাবকে তুলে মাষ
দ্যাখ ভেতরে থরে থরে হেমলক রস ...
তাই
নিমজ্জিত জগত আমার , আমি নিজেই প্রজা নিজেই অধীশ্বর !

তবে ভুলিনি কেন এখনো ? তোমার ধাতু দিয়ে আমার ভবিষ্যৎ !
ওরে মরণ শান্তি নাই ......
অর্ধ মৃত
জীবনের থেকে ভয়ংকর !









ফিরে আসা

এক মৃত্যু ফেলে আসতে পেরেছি বলে
কিছু আধপোড়া ছায় দেখেলে এখনো ভয় পায় দ্বিধা'রা

অবিনশ্বর শস্যগোলা থেকে গন্ধ মেখে
আমার জন্মের আগে
আমার জন্মের পরে
শাদা শাদা মাখনপাখি উড়ছে
হয়তো দ্বিতীয় গোলাতে পরিয়ায়ি ......
আধখানা সিগারেটে পুড়ছে সময় ......

বল তবে কে মৃত্যুঞ্জয়ী সময়ের ? বিশুদ্ধতার মিশেলে রঙ মশলা
উড়ন্ত চাকতিতে কিছু জন্ম
এক ব্যাধি
ভালো লাগেনা শব্দ ঝংকার
পাঁচফোড়ন ঝাঁজ , যন্ত্রণা





















:55pm · 




























































কিছুমিছু ১৪



অভিষেক

কথা ছিল শেষ হলে যাত্রাপথ অনাহুত
মেঘের মত উঠে পরবো রথে -
কতক্ষণ ধরে ব'য়ে বেড়ানো যায় বোঝা !
অপার বিস্ময়ে পারাপারের খেয়া খই ছড়িয়ে
পথঘাট গোময় আল্পনায় উঠোন
বিচ্ছেদ হয়ে যাবে মদন- জতু সংসার !
ভুল জমেছিল যেসব ভুলে , সন্দেহ কৃত্রিম
অনুশোচনা আবেগ বিষাদের জন্ম কুঠি-
নিরুত্তর প্রশ্ন উত্তরহীনতার ভরাডুবি !

ধরো , যদি ছুঁয়ে ফেলি নির্বাসিত এই জীবনের
রহস্যখনি ; যদি বশীভূত হয়ে তুলে নি
আমাদের সন্তান আপত্য স্নেহে ,
দিকবিদিক শূন্যতায় ডাকবে কাঁক ?

ভয় নেই কোন যন্ত্রে মানবে , অপরিমেয়
ক্ষতি পুষিয়ে এই বসন্তে
দূরে ছুরে ফেলেছি আমার সিংহাসন
এবার তোমাদের রাজা খোঁজার পালা !









মাতৃ দিবসে দুই কবিতা

০১

অনেক গুলো ক্লান্তিকর দিন
শেষ হয়ে এলে
আনন্দে হেসে ওঠেন ঈশ্বর ;
সুনিপুণ হাতে কারিগর দীর্ঘ
সময় ধরে
দূর কোথা থেকে খুঁজে এনে
চোখ বসিয়ে দিলেন
আমি দেখলাম আশ্চর্য এক
মহিমান্বিত জগতসভা
তোমার ঘরদোর সাজানো
শস্য ভাণ্ডার অফুরন্ত খাবার !

এদিকে তুমিও চুপ থাকো নি ...
প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে
জলে সিক্ত করো চারা
নিড়ানির অভিঘাতে উপ্রে আগাছা
শ্যামল রাখার চেষ্টা !

যতবার লাফিয়ে উঠি আমি শব্দে
গানে ভয়ে
লাথি মারি কষে বক্ষ জুড়ে
তীব্র যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠে ও
হেসে ওঠো
ধন্যবাদে গোলা ভরিয়ে নেন ঈশ্বর !

মা ,
ওরা জানে না কতোগুলো বিনিদ্র রাতজেগে
কতরাত অভুক্ত থেকে
কত যন্ত্রণা হাসি মুখে ঢেকে
তুমি ফলিয়েছ ফসল

তোমার অস্তিত্বেই থাকবার কথা ছিল জন্ম
ভুলে গিয়েছি সেই ইতিহাস
জানোয়ার ও মাকে মনে রাখে আজীবন !

মা ০২


তোমার কি দোষ মা ?
তোমার কোন দোষ নেই মা ,
যুগে যুগে কত মা কতো মনু সন্তান ভাসিয়েছেন জলে
কতো মা ফেলেছেন চোখের জল চুপিসারে
রাতের অন্ধকারে একাকী -
আর হাতড়েছে জীয়নকাঠি
আমাকেই ভালোবেসে ,
তোমার কি দোষ বল মা ?
তুমি তো
তোমারই দুই-চার শাখা প্রশাখার জন্য ভাত চেয়েছিলে
আর আমাদের ছিল না ইচ্ছা বা আগ্রহ
তুমি তো শীতের উষ্ণতা খুজেছিলে
পুরনো কাপরে লেপ কম্বলে
সর্ষে দানায়
তেলের অপূরণীয় ভাণ্ডার
দু একজনে হাতেই আদি কাল থেকে বন্ধি
সে ভোজনে বা তেল মর্দনে ;
আমাদের শরীর হারিয়েছে সে অধিকার
জন্ম ধুয়াসা তিথি ক্ষণে !
তোমার কোন দোষ নেই মা ,
মা,মনে পরে সেই সব তুবড়ে যাওয়া মায়েদের মুখ
ভাঙ্গাচোরা মন , অন্তঃসলিলা বুকফাটা আর্তনাদ
শুঁখিয়ে যাওয়া বক্ষ সুধা ,
প্রতিরাতে
খুন করে নিজেকে
সকালে হাস্যমুখে "তাহাদের পদসেবা"
গল্প করে তোমার সাথে ?
আমার কথা বলে ?
মনে পরে মা আমার কথা.........
তোমার কোন দোষ নেই মা
তোমার কি দোষ বল মা ,
তুমি তো জানো না
আমাদের এখানে খিদে পেলে কাঁদতে নেই
আমাদের বুকে হাপরের টান এলে ওষুধ চাইতে নেই
আমাদের শীত পরলে কাপতে নেই
না হলে রঙচঙে সেমিনার সভা হবে কি করে ?
কে শুনবে ওদের কথা......।
বল মা ?
মা তুই আর কাঁদিস নে......
মা আর চোখের জল ফেলিস নে
এই বধিরদের সামনে
তুই কাঁদলে
তোর চুপসে যাওয়া মুখে
আমি প্রত্যেকটা শুঁকনো কাষ্ঠ খণ্ডে দেখি
খ্রিস্টের মুখ.........







ছোট তবু ছোট নই

০১

নিষিদ্ধ হতে আসা সব জন্ম
পূর্ব জীবনের ঈশ্বরের সন্তান
অহং বাঁধ ভাঙলে
আকুতিতে অন্য এক জীবন !

০২

দ্বিতীয় বিশ্বাসে নারী কিম্বা মা
প্রথম বিশ্বাসে শূন্যতা
মহার্ঘ্য ভাতা তুলে নাও শুধু
নির্জনে দেবালয় !

০৩

বিন্দু মানচিত্র এক নষ্ট নীড়
খামারে শুয়োর পালন
ইতিহাস পুনরাবৃত্তিতেই সিদ্ধহস্ত
আমরা ভুলে যায়
দ্বিতীয় অভাবে প্রথম অভাবের ক্রন্দন !

০৪

অনেক ইজ্জত আমাদের
থাপ্পড় ঘোমটা ইজের আঁচল
পা থেকে মাথা পর্যন্ত ইজ্জত
চেয়ে দ্যাখ
দৃশ্য বাদ দিয়ে
একটা মনও আছে !

০৫

জানালা দিয়ে কাছে তুলো গাছ
উড়ন্ত অবহেলায় প্রাণ
উড়ছে শিবু মাঝি
হেলিপ্যাডের প্রস্তুতি শেষ হয় !

০৬

ইতিহাস হয়ে যাওয়া চরিত্র
ইতিহাস হতে চাইনি কোন দিন
ঘাতক সেনা ইতিহাসের ছাত্র নয়
অণুঘটক রয়ে যায় !

০৭

শব্দ ভাণ্ডার কিছু শব্দ উদাহ
প্রতিপক্ষ নয়- শত্রু
জমিনের নির্দেশে
আমার ভাই --- আমি শত্রুনাশক !

০৮

দেশ কালের সীমানা ভাঙছে ক্ষিদে
দেশ প্রতিবেশী নিরন্ন বছর বছর
সাপ- নেউল হতে পারলে উপর উপর
শাসন ক্ষমতা বর্তায় !

০৯

প্রেমের কথা তুমি লেখো কবি
হাজার হাজার বছর
আমি হৃদয়ে হৃদয়ে উষ্ণতা এঁকে দিতে
খুঁজে নেবো আমার শহর









পুনরুথ্থান

পুনরুথ্থান মুখে'ই যতোসব অমীমাংসিত ঝড় ;
দ্বৈপায়ন হ্রদে'র অনিবার্যতায় এক সত্য অবিনশ্বর
ঘুম নেই মৃত্যু'র , খণ্ড অভিমান নিয়মের রাজত্বে
নয় বন্ধি , সংশয় পাপ আত্মবিশ্বাস একমুখী
পরাজিত ভয়ে নয় শঙ্কিত !
শরবিদ্ধ যন্ত্রণা কেন আরো কিছু মুহূর্তের ভিক্ষা মাগে
কোন উষ্ণতার অভিলাষে ? পতনের রথে চেপে
বাঁচার সুতীব্র কৌশল আত্মস্থ করেছিল যা মন
সেও নির্লিপ্ত চোখে রণবাদ্যে'র সুরে খুঁজেফেরে
বিজয়ী পতকাবাহক জীবনের ...
অথচ সেসব অক্রূর সবাক চালচিত্রের দর্শক
প্রতিনিধি , রক্ত হিম হন্তক সময়ের কথক ঠাকুর
গল্প করেন নির্জনতায় উত্তর পুরুষে
জয়-পরাজয় সবই পূর্ণিমার চাঁদ আঁধারের আগের চরিত্র !

সময়ে নেই চিরন্তন কোন সত্য ...
কল্প দৃশ্যে নিমজ্জিত ইতিহাস শুধুই ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যাবার
লড়াই , পুনরুথ্থান আশ্চর্য মায়াবী ফলের অপ্রাপ্তি নেশা
আঙ্গুরের রস অন্দরে উপরে শুধু দৃশ্যকল্প আর লোভ ।









কাল

গ্লভ মানচিত্রে চোখ নামিয়ে খুঁজি কোথায় আমার দেশ ,
কোন অক্ষরেখা নামিয়েছে উষ্ণতা ,
অবজ্ঞায় ক্ষয়ে গেছে কোন সীমান্ত প্রাচীর
কালো কালো লিলিপুট ঐ মানুষ কার ভাই ,
বেলা বেড়ে রাতনামে গঞ্জে , কুয়াশার আভরণে
ঢেকে যায় গৃহের অস্তিত্ব
পরিযায়ী পাখির দল শেকল খুলে প্রস্তুতি করে সঙ্গ
ফসফরাস চোখে শ্বাপদ
রক্ত আর নেশার অভিমুখে , এখনো !
একবার আঙ্গুলের চাপে ঘুরিয়ে মানচিত্র
আশ্চর্য
রঙ্গিন রঙ্গিন সীমান্ত রেখা গায়েব
এক পৃথিবী ঘুরছে
আমাদের গ্রাম ঘুরছে
আমাদের দেশ ঘুরছে
কিন্তু ঠাওর করতে পারছি না কোনটা আমার দেশ
আমার জন্মভূমি সব ৬৬ ডিগ্রী'র পরিমিত দৌড় !

যদি মুছে ফেলে দেওয়া যায় মানচিত্রে সীমানার রেখা চিত্র ?
আমি দেশ খুঁজে দেখবো না , গ্রাম খুঁজে দেখবো না ,
কায়াকে চরে আমাদের মৎস্য শিকার
হাইতি'র প্রসূতি
জন্ম দেবে সন্তান
এখানকার মাতৃসদন নিচ্ছে তারই প্রস্তুতি !











মেঘ করে এলে খুলে দিও জানালা
বৃষ্টি খেলে যাক পরিপাট শয্যা প্রচ্ছদে ;
চৌকাঠের মান্যতা মুছে ফেলে
ডুবে যাও মন্ত্রণার আঁধারে !

তুমি কতকাল নামোনি জলে ,
কতকালের এই ধুলি জন্ম ,
কতবার এসে ফিরে গেছে উদ্ভ্রান্ততার মূর্তমান ছবি
আমি নাম দিয়েছিলাম প্রেম
তুমি ভেবেছলে তোমার প্রতিদ্বন্দ্বী !

অক্ষরবৃত্তে ধার করা শব্দ নিয়ে কবিতা লিখি
উত্তর গোলার্ধে নেমে আসে বসন্ত
পঙ্গপালে খেয়ে যায় সম্পদ
সেই বোধিবৃক্ষ বৃদ্ধ
প্রতীক্ষায়
পাশ কেটে তুমি পগারপার ......
প্রেম চেননি প্রেমে ।।







অলৌকিক এক যানে উঠেই পরলাম , আমার অজান্তে ;
ফিক করে হেসে উঠে ঈশ্বর
বললেন " স্নান করে নিস প্রতিদিন , আবর্জনা " তারপর
থেকে জল খুঁজছি অবগাহনের......

চাঁদ যেবার মামা হয়ে ঘরে এলো
আমাদের ঘরে শুধুই নতুন ধানের গন্ধ ; হুলোটাও চেটে চেটে
থালা , অতিরিক্ত উগ্রে দিতো ঘাসে ...
চাঁদ নিয়ে ফুটবল খেলতাম কতো ......

এখন আর বাড়িতে চাঁদ আসতে দেখিনা ...
অন্য ঘরে নিমন্ত্রণে
আর আমিও ভুলে গেছি জল চাঁদের কথা ,
হাসছি ......
ঈশ্বর আবর্জনা চোখে পরছেনা কেন ?









সেদিন থেকে কলেজস্ট্রীট পাড়া শুন্য
কবিতা গুলি এদিক ওদিক কাতরাচ্ছে দেখে
ঘরে ফিরি
আলট্রাসনগ্রাফি দেখে ভ্রূণখোর
নিজের সৃষ্টি খেতে মজা আছে
নগ্নতা আঁধারেই ভাললাগে !

দ্বিতীয় জন্মে আমি প্রকাশক
রবীন্দ্র রচনাবলী দিয়ে
শীতের উত্তাপ
নীল হয়ে উঠলে শিরা
খুঁজে নিয়ে সম্ভোগ বিছানা
খুন হয়ে যাক দুষ্টু কবির দল ।







চাকা

সময় বাড়তে বাড়তে অবশেষে এক চাকা
বহু চর্চিত হয়ে উঠলো জীবন
বাতি ঘরে শুরু হল আগুনের খেলা
নাকের কাছে চোখ এনে কেউ লিখল ইতিহাস
পরিব্রাজকের রাজন্য ভাতা বৃদ্ধি পেল
উঠে এলো রাজকীয় সাতকাহন !

শরীরে তেল মেখে এগিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ
তার পেছনে ছুটছেন আমার প্রথম পূর্বপুরুষ
পাখি-পাখালি গাছে গ্রাম ছিল তাদের
এখন দশ লক্ষ্যর রঙ্গশালা
শাদা জামা গুলতে রক্ত দাগ আছে তবু অদৃশ্য
ভানুমতীর খেল ......

তখন থেকে দৌড়াচ্ছেন বলে আমার পূর্বপুরুষ
ক্ষিদে বাড়ছে আমার
তেলের গ্যালনে টাকা
তাক লাগানো ধংস ভাণ্ডার ......

চাকাটা চিরতরে ভেঙ্গে গেলে বেশ হয় ......
নিজের হাতে নিজের খাবার মন্দ নয় মন্দ নয় ।







চিঠি

রাণী ,
সময় করে উঠতে পারিনি উত্তর দেবার , বল কেমন আছ ? মনে হচ্ছে তোমার কাছে চলে যায় , সারাদিন রাত তোমার কাছে থাকি , নদী নীল সাগরে ভেসে চলি আমরা দুই জন , তোমাকে
ছুঁতে চাওয়ার কি নিদারুণ ইচ্ছা আমার
জীবন অনেকখানি চাই ...... অনেক দিতে ইচ্ছা করে নিতে ইচ্ছা করে ঢের বেশী , কিচ্ছু ভাল লাগছে না , জীবনে শুধুই শুন্যতা
মনে হচ্ছে আমি তুমি দূর কোন পাহাড় সমুদ্র জঙ্গল ঘেরা কোন দেশে যায় , সারাদিন টো টো করে ঘুরবো দুজন , আর সেই নাম না জানা পাখি যখন ঠোঁটে করে নিয়ে আসবে প্রিয়ার খাবার দেখব দুই চোখ ভরে , আমি তুমি ক্লান্ত যখন -- রাত অন্ধকার কোন এক নির্জন কুঁড়ে ঘরে আমাদের আস্তানা ... তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চেটেপুটে খেয়ে নেব তোমার সব ক্ষিদে ... সারারাত ঝির ঝির বৃষ্টি জেন আমাদের জন্য আমাদের ভালবাসার জন্য ... তোমার সঙ্গে মিশে আমিও শুন্য .................................

কালের সীমাহীন এই ক্রন্দনে মুছে যাক যাবতীয় রহস্য হাসি , দূরে যে ফাঁসি কাঠ এখনো প্রস্তুত মিলনে , তার নিচে দাড়িয়ে খুঁজে নেব না হয় জীবনের মন্ত্র ধ্বনি ,
এখন চুপ থাক সময় , অপরাহ্ণ আসুক দূরের বাঁশ গাছে ,এখনো প্রস্তুত নই এভাবে ক্ষয়ে যাবার , ঢের জন্ম এসেছিল আগে ঢের জন্ম পেছনে ফেলে দ্যাখ দাঁড়িয়েছি আমরা দুইজন... সবই মিথ্যার অভিপ্রায়ে ?

রাণী ---- খুলে ফেলেছি জীবনের রণসাজ , সত্যি বলে যদি কিছু থাকে বেঁচে সেখানে এই উভচরী প্রাণ হাঁসফাঁস ... গলবন্ধে তাবিজ-কুবিজ অনেক চাপিয়ে দেখেছি এতকাল , শান্তি নেই , সেই এক জন্ম এক মৃত্যু এক সন্তান জন্ম দেবার মেশিন , অনেক ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত , মথ থেকে এবার প্রজাপতি হবার পালা

কাটাকুটি খেলিনি নিজেকে নিয়ে , নিজেকে শুধু স্রোতে ভাসিয়ে চলেছিলাম এতদিন , যেদিকে মধু সেদিকেই ছিল জীবনের গতি ... এই অসময়ে বলছি- বিশ্বাস করো ঘেন্না ধরে গেছে জীবনে , এতদিন প্রাপ্তির ভাণ্ডারে কিছু সংখ্যাতত্তের ভীরে নিজে হারিয়ে এখন ভেসে উঠতে চাই তোমাকে ধরে

রাণী , যদি ভুলে যেতে চাও আমার বান্ধবহীন অস্তিত্ব , যদি ভুলে ভুলে যেতে চাও সময়ের বন্ধন , যদি ভুলে যেতে চাও আমার চোখের বিশ্বাসযোগ্যতা , তবে যেও আমিও দেবনা বাধা কিছুতেই ...
রাণী , তুমি জাননা বোধহয় বন্ধন মুক্তি নেই মৃত্যুতেও , মৃত্যুতেও নেই শান্তি প্রলেপ ... যতসব শাদা বক পায়রায় ঠোঁটে দ্যাখ লেগে আছে বিগত জীবনের স্বাদ , এই অবেলায় বুঝি একটা জন্ম যথেষ্ট নয় জীবনের জন্য , দ্বিতীয় জন্ম তৃতীয় জন্ম পেলে বেশ হত ... গুছিয়ে আবিস্কার করা যেত তোমাকে ।
ফিরে এসে পুনরায় বুকে তুলে নাও এই জীবন , দ্যাখ এখন হ্রদয়ের প্রতিটি হ্রিদপন্দনে তোমার সুর ই বাজে একতালে এক লয়ে
তোমার প্রতীক্ষায় রেখে গেলাম এই স্মৃতিসম্বল , বুকে আঁকড়ে রেখে
ভালোবাসায় তুলে নিও আমার হৃদয় ......











হীন

বুদবুদ থাকে যতক্ষণ-- আমি মায়াতে নিবদ্ধ থকি ।
সম্পূর্ণ দিয়ে তাকে ভাবি বাকী রইলো কি কিছু তবে !
আমার সম্বল বলতে একটা হৃদপিণ্ড , তাকে জল
আলো নক্ষত্রের সমারোহে সমৃদ্ধ করি , প্রস্তুত করি
আর প্রতিধ্বনি তুলবার জন্য ----
কিন্তু ঐ পর্যন্তই , তাকে আর ধরতে পারিনা,
সে ভেসে চলে গ্রহ থেকে গ্রহন্তরে ।
দেখি বালিয়াড়িতে সূর্য ডুবছে নির্দ্বিধায় , আর অক্লেশে
পেরিয়ে যাচ্ছে দিন বন্ধুর দল ,
এই দূরে থেকে নির্লিপ্ত চোখে শিখে নিতে চাইছি
বদলের ঘোড়ায় চরার রণকৌশল !

বন্ধুত্ব কি খুব ঘনিষ্ঠ ছিল ? বন্ধুত্ব হয় না মানুষে মানুষে ?
বন্ধুত্ব তো কিছু অনুভূতি ভিন্ন কিচ্ছু নয় !

আমি একশত বছর ঘুমিয়ে থাকতে চাই ......
ঘুম ভেঙ্গে যেন দেখি সব স্তব্ধ হয়ে গেছে ... , আর
আমি হাত চাটছি রাহুলের ......
একশত বছর আগের সেই রাহুল কি ?









প্রেম ও গল্প

এই ছেলেটা
তুই কেন আমার বাড়ির সামনে দিয়ে বার বার
পাক খাস সাইকেলে ,

তুই জানিস না মামনি চলে গেছে গত সাতদিন ,
যাবার সময় চুলের ফিতে , চিরুনি
ফেলে গেছে ,
কই বলেনি তো যাবার সময়
এগুলো গুছিয়ে রেখ ;

বলেতো যাইনি
"এখানে মনটাকে ফেলে গেলাম
তাকে বলে দিও আসবো ফিরে......"
এই ছেলেটা ফাঁকা ছাদের দিকে তাকিয়ে
কি দেখিস ?

এদিকে আয়
আয় আমার কাছে ,
দুপুর বেলায় বেলকুনিতে এসে দাড়ায় ...
আমরা দু'জন
তারপর মিলেমিশে
মামনির চুলের ফিতে
ফেলে যাওয়া প্রসাধনী
ওর আয়নায়
ওর ঘরের গন্ধে
ওর ড্রেসিং টেবিল
খুঁজে দেখি,
ফিরবার কোন লক্ষন থাকে যদি বেঁচে ?

বুকের বা পাশ শক্ত করে ধর
ডাকটা যদি শুনতে পায় -----
"দাদু ওকে বলে দিও আমি আসবো ফিরে "











পাপ ০৪

আগুনখোর

আরো জটিল আকৃতি নিয়ে মত্ততায় শিকারি চোখ
রাতের গহন বনে খুলে ফেলে নিজস্ব অভুরুচি ইচ্ছা
ঈশ্বরের সংবিধান হতে প্রেম শব্দ ছুড়ে দিয়ে নির্জনতায়
ধুম্রকাশে ন্যাড়া জ্বালিয়ে মোম গলানোর অভিপ্রায় !
স্বয়ংসিদ্ধ হয়ে ওঠা ধ্যানস্ত ঋষি কি জানি কোন পাতায়
টলোমলো , কোন উজানের হাওয়া এসে নারিয়ে অস্তিত্ব
ঋষিও ভুলে গিয়ে ঈশ্বর মুগ্ধতা নিতম্বে জল খাই !
পার্থক্য খুঁজে দ্যাখে পাগলা ভবানী , এই জন্মে মানুষ ছিল
কিছু শেয়ালের সহবস্থানে - অথচ ন্যাজ নারিয়ে রক্ত
অভিমুখে শেয়ালের ছুট - ছুঁৎমার্গ এই নর রক্তও খুঁজেছে
খুঁজেছে ঈশ্বরী , দিয়েছেন নাভিপদ্মে হাজার চুম্বন সোহাগ
রতি বীর্যের উত্তাপে ফসলের মায়া-মমতা ......
গলে যায় হাজার বছর তপস্যায় ঈশ্বর ... দানব দেবতা
হয়ে চাতুরী , বন্দী করেছেন যে ঈশ্বরে
সেই এই আঁধারের ভাষা বোঝেন ঈশর, ঈসদ হেসে ঈশারায়
বলে যায় সহচরে -- ওরা জানে না , মূর্খ ,
মুর্খামির সীমারেখা টানিনি আমরা এখনো !

তার পর হতে আগুন পিছে রেখে জনতা ন্যাড়া খড় নিয়ে
টানাটানি ; দৃশ্যাতুর অনুতাপে জ্বালিয়ে অঙ্গ
পোড়াতে চেয়েছেন নারীর মন ...
বন্ধু মহুয়া হেম্ব্রুম , বলে দাও তাদের , পোড়াতে চাইলে হৃদয়
মনে আগুন হয়ে ওঠো ......
এককাল ধরে বুঝে নাও আগুনের ব্যবহার ...
আমিও প্রস্তুত আছি পুড়তে









সাগর ০৪

সম্পর্ক গুলো সব এলোমেলো হয়ে গেছে সাগর ;
তুমি দায়ী নও বা সময়ের বজ্রপতন
উদাস হতে চেয়ে নিজে ডুবছি দ্যাখো সকলের
উদাস চোখের অন্তরালে ; তবে বল-- আমাদের
বন্ধুত্ব কি শক্ত বন্ধনে ছিল যেমন স্তনের সঙ্গে শিশুর !

সাগর অনেকখানি জ্বলেগেছি দুর্দিনে ; এবং মাছরাঙ্গা
দৃষ্টি নিয়ে যতক্ষণ জল দেখেছি
সেই অবসরে কয়েক কোটি গ্যালন জল ফারাক্কা ত্যাগ
করেছে , একটাও রঙ্গিন মাছ দেখিনি
যাকে ছোঁ মেরে তুলে বলবো চল আমার সাথে
তোর আমার মিলনের কথাছিল এই রাতে !

ভুলে যাও , যেমন করে কত সন্তান ভুলেছে পিতৃ পরিচয়
গ্রামের নামধাম মায়ের চোখের জল ; আর দানবেরা
তুলে নিয়ে মৃগ কস্তূরীনাভি পড়ন্ত বিকেল নারীর অহংকার
শরীর দিয়ে এঁকে গেছেন জীবনের ছবি !

ফিরে এসো না তুমি এই দ্বিতীয় মরাচাঁদে , ছাদের কার্নিশ
বেঁয়ে যে পরগাছার পাতায় রোদ নাচে মতমে ,
ক্ষণস্থায়ী , এই দৃশ্যকল্প আমি ......
ক্ষণিকের ছিলাম তোমার মনের স্বপ্ন চারিণী !







( পেটেন্ট থাকলে বাদ দেবো নাম , হা হা হা , এটা আমার এক
বন্ধুর কবিতায় আঁচর কেটে বেড়িয়ে এলো , ধন্যবাদ মিলন )

মায়া ছিল তোর ঠোটে
ছিল ছোট ছোট ঝর্ণা
আমার ছিল এক রণ পা
কতবার ভেবেছি এক ঝাঁপ
যেখানে ফেনিল
সেখানেই পরবো জানতাম
আর
তুই ও প্রস্তুতি নিয়ে
অনন্ত প্রতীক্ষায়
দ্যাখ কৃষ্ণা
তার পর থেকেই
ঘন মেঘ করে এলো
এক ঘূর্ণি
উড়ছি , এখনো উড়ছি
ঝাপসা হচ্ছে দিনকাল
এই তিনকালে এসে ঠেকে
বিশ্বাস কর
তোর ছায়াকেও আর ধরতে পাচ্ছি না
কানামাছি খেলায় তুই হাত পাকিয়েছিস বেশ !











আমি কবিতা লিখতে পারি না ...
গাছ , জোনাকি দেখে যতটা না রোমাঞ্চ জাগে
তার থেকেও ঢের বেশী জাগে ক্ষিদে , এরাই বেঁচে থাকে
বেঁচে থাকে চোখ যন্ত্র আর যান্ত্রিকতা !
সামনে থেকে সরছে যে সময় আমার , অথবা আমার নয়
নতশীরে দাড়িয়ে খাদ্য লাইনে যুগের ভবিষ্যৎ
ভবিতব্যে আমার মরণ মায়ের দীর্ঘশ্বাস
জানো না তুমি দেশ ?
কেন অর্ধাহার ক্ষেতখামার চাষার ছোট্ট মেয়ে ?
আমি প্রতিবাদ শিখিনি
প্রতিরোধ শিখিনি
এক অনন্ত সময় বেঁচে থেকে ভাষা শিখতে চেয়েছিলাম ......









জন্ম

তুই বিশ্বাস করবিনা কোনদিন এই রাহুকালে
পরে আছি যখন তুই এক মাসের ; অনেক গুলো
পানিপথ সংগঠিত হয়েছিল তুই আসবার আগে ,
অবশেষে জলেই ভেসে গেল আমার সত্ত্বা আর
নারীর চোখের জলে তোর মঙ্গলশঙ্খ ধ্বনি ,
এখন প্রতিরাতে বুকচাপা যন্ত্রণা অসহ্য , তুই বুঝবি
না কতোটা নিচে নামলে জলে অন্যকে ভাসিয়ে
রাখা যায় ! প্রত্যেকটা ডাক্তার যারা এক একটা
বাছুর খাওয়া কুমির তারা লম্বা হা করে গিলে
নিয়েছেন তোর মায়ের দুল আমার বিয়ের সাইকেল
যাতে করে তোর মামা বাড়ি গেছি বার কয় ......
আর সামনের লাইনে রেখেছি স্মৃতি আংটি বাবার
রুপোর হুঁকো আর ১০ পারসেন্ট সাইলক মহাজন !

তুই জানিস না -- আমার এই ছোট্ট মুদি দোকান
পাঁচ পেট , তুই বল তোর যায়গা কোথায় ?
আকাশ ছোঁয়া এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটন- অঘটনে নিঃস্পৃহ
হরতাল - তালে তালে আখের সমৃদ্ধি তাদের , অথচ
ঘন ঘন আর্তনাদ গাড়ি - শ্লোগান গরিবি হটাও !

আমার বাবাও আখের গোছাতে জানতেন না বলেই
বি এ পাশ করে আমি হরি মুদি
আমিও তো বাবার সন্তান ---- দৌড় বুঝে গেছি নিজের !

তবে বল পাঠক -- জন্মের আকুতি জঠরের কান্না সব মিছে ?
জন্ম বলতেই কি সুযোগসন্ধানীর সব আত্মসাৎ
আর এক পেট বুভুক্ষ নিয়ে আমার সন্তানের জন্ম ...
আমরা উন্নত গণতন্ত্র !

শোন , শোন বেয়াদপের দল ------------
যতই আসুক ঝঞ্ঝা বাতাসের রুদ্ধশ্বাস
যতই আসুক বছর জুড়ে শুধুই চৈত্র মাস
জল আলো বাতাসকে সাক্ষী রেখে নামিয়েছি পৃথিবীতে তাকে ...
আমার সন্তান যেন বেঁচে থাকে বেঁচে থাকে বেঁচে থাকে !





পাপ ০৩

সুসংবদ্ধ গভীর খাদ , চাপা অন্ধকার ; তাই
যে স্থান অদৃশ্য থাকে সেখানেই সমস্ত কৌতূহল , এখনো !
সমতল ভূমিতে মাঝ বরাবর ভাগ করে দুই পাশ দিয়ে
উঠে গেছে দুই ভঙ্গিল পর্বত ,
যতো পর্বত প্রেমী সেদিকেই ,
সমতল ভূমির নিম্ন প্রদেশে এক নতি গভীর হ্রদ
কতশত পিপাসা পাখির আস্তানা ,
সমতল ভুমি উপরে যেখানে শেষ --- সেখান থেকে
এক নৈসর্গিক দৃশ্যর শুরু , আকাশে দুই চাঁদ অবিরাম
আর সাজানো বাগানে ফুলের নির্যাস দিয়ে
অফুরন্ত অমৃত ,
সমতল ভূমি নিম্নে যেখানে শেষ হয়েছে --- সেখান থেকে
সুজলা সুফলা ভুমি
জল বাতাস পরিচর্যার আবেদনে দাড়িয়ে আছে আজো
সেই পাথুরে জীবন থেকে .........

এই পর্বত এই নৈসর্গিকতা আর উজ্জ্বল ভূমিভাগে
বসত গড়ে পাখি ......
সারা দিনরাত খুটে খেয়ে চলে ফসল
বাধা দিতে মন চাই না মহুয়া হেম্ব্রুমের !







পাপ ০২

ফিরিয়ে দিয়েছি অমরত্তের প্রস্তাব ;
গলিত-স্খলিত শব ধুন্ধুমার রিপুকাল
নরম উপত্যকা ধরে কৃষকের ঝুম চাষ - এইভাবে
গহন উস্নায়নে কিলবিল কিছু জোঁক রক্ত লালাসায়----
সম্মুখের বোধিবৃক্ষ শূন্য !
সমগ্র পা ভাঙছে পথ নরম চরের দিকভ্রম দিশায় -
সমবেত দুই অভিগত গোলক স্বস্থানে
পত্রভ্রম নাবিকের দিশা এদিকেই ; জলন্ত বাতিঘরের
মায়া আর সর্বগ্রাসী এক মাতোয়ারা গন্ধ
আবেশ - ঘুম এসে যায় ক্লান্তিতে !
অধিকাংশ মানবের পথ এসে মিশেছে
একমুখী গহ্বর সম্মুখে , আর চাপা ফুলের
গন্ধে যখন ভয়ানক নিশা লাগিয়ে খুলে দেয়
অহংকার , নরম বিছানায় খেলা করে পরিতৃপ্তির চাঁদ
ঈশ্বর ছুড়ে দেন এক মুলো - খেয়ে নিয়ে
এই আবর্তিত জনজীবন !

এবার দ্বিতীয়বারের মত ফিরে গেল অমরত্তের প্রস্তাব
মহুয়া হেম্ব্রুম - এলিয়ে দিয়ে চুল বিছানায় , শোনে
কাছে দূরে শ্রাবণের শব্দ বারোমাস
আর প্রতিটি রাত গোপনতায় ডুবে যায় অন্ধকারে !










পাপ

ঘুমিয়ে আছে সুবিন্যস্ত দিঘি বিবর্ণ শ্যাওলা
একটু নিচে গেলে
ধাঁধা শূন্যতা
আর দুষ্টুছেলে ডাংগুলি প্রস্তুত রেখে এখনো
দিঘিজলে ভাসানোর নিদারুণ অভিপ্রায় !
অমরত্তের প্রত্যাশায় উপাচারি সুমিষ্ট রসালো
ফল আমন্ত্রণের অপেক্ষায়
লালা ঝরিয়ে ফেলে যে দেবতা যে পশু লিকলিকে
জিভ নিয়ে পর্বতে মুখ রাখার আবেদনে --
কালো সাঁওতাল মহুয়া হেম্বম এর নাভি যেখানে
শেষ নিচে অনন্ত আবাদি আপেল ভূমি...
সোজা গাছটির খাঁজে খাঁজে অতিরিক্ত বাঁকল
সেই পাখিগুলো উদাসী চোখে
আর সাদা বকের গ্রীবায় যখন টুকরো ঘাম
অপরাহ্ণে দাওয়ার মাদুরে রোদ সরে আঁধারের
আয়েজনে দক্ষিণের হাওয়া দিলে লোমকূপে জল
এসে ভিজিয়ে বিছানা ...

সোহাগ চারমাস বনবাসী কংক্রিট অরণ্যে ...
এবার
যদি রাতে আঁধারে পাঁকে পাপে পিছলে পরে মহুয়া
ঊর্ধ্বাতনে রক্ষিবে ঈশ্বর !
 ·  ·  · May 8 at 9:30pm
মড়া চাঁদের গল্প- এক ছবি

উদ্দেশ্য ছিল গোপন তরবারি অগ্রে রেখে মায়া
বহুখণ্ডিত চাঁদের এক টুকরো তোর মুখে তুলে বলবো খা , হরির লুটে
বিসর্জন দেবীপক্ষের ।
সেই তো ধার করা শরীরে রঙ মেখে বাস হাতলে জ্যান্ত বাদুড় , উঁই মাটি
খুঁড়েছে ভেতরে জানি না ? গাদাগুচ্ছ প্রেসক্রিপশনে মেডিক্যাল স্টোর
বাছুর খাওয়া কুমীর প্রভিডেন্ট ভেঙ্গে শ্রাদ্ধবাসর , এই দেখেই রোগ চিনেছো !
রোগ বোঝো নিই !

আর সংরক্ষিত অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ে ঠাই দাঁড়িয়ে দুই পা আর কিছু শব্দ
যে বাস্তিল জনতার সেই স্বপ্নে আমি হেটে যায় রাইন বরাবর
নিঝুম উপত্যকা দিয়ে সেই ইতিহাস
কবরের ভুমি শ্মশান ক্লান্ত
ইতিহাসের গতি পরিবর্তন হয় কি স্বপ্নে ?

প্রতিদিন রাঙিয়ে সকাল অভিমানে নচ্ছার বারবণিতা লাইনে
লজ্জা নেই , কুয়াশাভেদক আলোর রেশ্নায় ক্ষণিকের খুশী করে
নাগরিক ;

ইতিহাস হতে সরে গেল যে পাখি আলোআবডালে
সেও খুঁজে নিয়েছে কোন স্বজাতি খাদ্যভান্দার ।

দূরে ফিকে হয়ে আসে যে চাঁদ
তাতে এককালের মায়া ছিল

এক যৌবন দাড়িয়ে ছিল প্রতীক্ষায় ।







কিষাণ ...

টুপটুপ খসে পরে বৃষ্টি সেই অক্ষরেখায়,
মালকোঁচা মেরে ,
চাপিয়ে মাথালি পথ ভাঙ্গে সমগ্র শ্রাবণ কিষাণ ,
পোয়াতি বধু তার নির্জন অবহেলায় ঈশ্বরে নিযুক্ত দেবদাসী ,
ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে উল্টে মাস- বছর
এসে ফিরে যায় গাছের বয়স বাড়িয়ে ,
আল,নালাকেটে ভ্যাপা বৈশাখে "ভগিরত" কিষাণ জলসেচন ,
জীবনের হিসাব বড়ই গোলমেলে ,
ঠিক সময় ঠিক রকম বস্তু হস্তগত করে নিতে হয় ,
নইলে পস্তাতে হয় দ্বিতীয় দিনে ।
সম্বল বলতে মাত্র ক'বিঘা সাধু জমিন ,
জমিন নয় মা ,
সারাবছর মুখের হাসি ধরে রাখতে পেরেছে এই মায়ের জন্য ,
আসলে চাহিদা এক ফাঁকা চেক ...
সেখানে সংখ্যা বসানোর অভিপ্রায়ে কত জীবন
ভেসেছে গাঙে ইয়াত্তা নেই ,
কিষান বোঝেন না এতশত ,
গোগ্রাসে সকালের খাবার মুখে দিয়ে
ছুট - এক ছুটতে ছুটতে ঘোষ'দের সতেরবিঘা ধানী পেরিয়ে
মহেন মণ্ডলের পটল ক্ষেতেঁ যখন পা রাখে তখন
সূর্যি টুকি দিচ্ছে ,
আজ কি তবে দেরী হয়ে গেল ?
জীবনে কতকিছু দেরী হয়ে যায় -
কতকিছু সময়মত হয়না বলেই সময় বলে আসি ,
আবার দেখা হবে অন্যকোন খানে ,
বেশ ছিল কিষাণের জীবনের সন্ধ্যা রাত ,
রেডিও তে নিয়মিত সংবাদ যাত্রা নাটকে
আর সঙ্গিতে আবসরে আর কি চাই .........
জীবন শোনে না জীবনের কথা খুঁজেও দ্যাখে না জীবনের মানে ,
জীবন ধরেই শোকসভা আর যবনিকা পতন দৃশ্যের ,
অথচ দৃশ্যান্তরে'র যে জীবন থাকে তারা রাত্রি গভীর
হলে কেঁদে নিয়তির সাথে খোঁজ রাখেনা কেউ !

যাদের যেখানে থাকার কথা থাকে
তারা সেখানে থাকে না চিরকাল ,
যাদের থাকার কথা নয় তারা থেকে যায় নির্দ্বিধায় ,
আর সংবদ্ধ তিন চারটে প্রাণ তাকিয়ে থাকে যার
চোখের ঈশারায় ,
দেখে সেই মানুষ এক দিন ফানুস হয়ে উড়ছে দিগন্তে .........
এই শূন্যতা ,
এক গভীর শূন্যতা
কিষাণী বধু অবলুপ্তির এই বিশ্ব প্রতিনিধি হয়ে দাঁড়ায় যখন সমাজে ,
লোভী চোখ দৃশ্য ধর্ষক ,

হা করে তাকিয়া আছে কিষাণের ভূমি ,
ভূমিপুত্র নেই বলে কি দুঃখ আছে মায়ের !
কোদাল ভালোবেসেছিল কিষাণ,
হাতের পেশীতে অসুরের ত্বেজ ,
কিষাণ নেই - কিসানি ও বুঝে গেছেন জীবনের রহস্য ।

" মা আসছি " " হা দেখে শুনে যাস "
বেশ কাটছে সময় এই দুই কামরার ভাড়াবাড়ি ,
প্রতিদিন খাদ্যর লাইনে এবং একটা অপরিচিত শরীর বাড়ে বাসে ।

কিষাণ দেখে যেতে পারেনি তার সেই ছোট্ট মেয়ে কতাখানি
বড় হয়ে গেছে এই কংক্রিট জঙ্গলে ,
কিষাণের মেয়ে কৃষি শেখেনি এমন কি বোঝেনি জলের রূপভেদ ,
শুধু বুঝেছেন
এই সময় শুধু ফাঁকি দেওয়া
আর ইঁদুর দৌড়ের আসরে মত্ত ভগবান !