Monday, 12 March 2012

অনেক গুলো


‎...... রূপমতি ২৪

যতদূর জানি আকন্দ দুধে
ন্যাংটো বেলা
শামুখ খোলে ইঁদুরে দাতের
বেলা ,
চিটেগুর আর চুল্লু ঠেকে
আমার কিশোর বেলা ......
রূপমতি তোর বুকের মাঝে
আমার যৌবন ,আমার পড়ন্ত বেলা ।

রূপমতি তোর নিটোল কালো চুলের বেণী
রূপমতি তোর সিঁদুরে আলতা চরণখানি
রূপমতি তোর পাইন সদৃশ শিরদাঁড়া টা
রূপমতি তোর শরীর বেল ফুলের সুবাস মাখা
রূপমতি তুই ধর্ম হবি
রূপমতি আমি জিরাফেও আছি ।













নক্ষত্র বলয়ের ওপাড়ে

ভয়ানক রাত্রের পেশাদারী নক্ষত্র তার নিচে আধো ঘুম
জাগরণে সওয়ারি বুড়ো ঘোড়া ,
একুশ বছরের পর্ণমোচী জীবন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত
দাড়িয়ে আছে একই ভাবে ,
নীল ফ্রকের স্কুল মেয়েটি নিজস্ব চোখের সামনে দিয়ে
দ্রুত ভাবে বেড়িয়ে গেল ,
ওদিকে বুড়ো নদীটার এক কোনে
বালির পাহার জমিয়েছে বালকেরা
সকালের তেজস্বী রোদ ছড়িয়েছে হাসি ; এখানে
আমার অসংখ্য মুহূর্ত পরে আছে
এখন আমার বুকের পাথর সরাবে কোন সাহসী ছেলে !

এখন আমার বুকের বা পাশটা দপদপ করে
খাবি খেয়ে নাচছে নিজস্ব ঢঙে
চোখের মণি উঠছে হঠাৎ নামছে , কপোল বেয়ে
দরদর করে ঘাম নামছে চিবুকে
পাতলা গোঁফ ভিজে সপসপ , এখন আমার
লক্ষ- কোঁটি স্রোত সারা দেহে , ভাসবে প্রিয়া ( ?) ,
এসো ভেসে যাও !
তবুও স্রতের প্রতিকূলে দাড়িয়ে আছি
একান্ত স্থির দাড়িয়ে আছি
এডস রুগীর মত নিঃশব্দ মৃত্যুর কাল গুনে
দেখছি জীবনের পরমায়ু ।

নিদিষ্ট একটা মালগাড়ি হেলে দুলে সাপের মত ছুটছে
টিভি তে মুহুমুহু সতর্ক সংকেত গুজরাট উপকূলে সাইক্লোন ঘূর্ণি ,
এখনো সামনের বাড়িটা অন্ধকারে ডুবে আছে
কোন সময় প্রিয় কেউ ছিল
এই নিশুতি রাতে আর ভয়াক্ত হবে ঐ বাড়ির সব মৃত অলিন্দ ,
প্রিয়স্মৃতি কোণ গুলো ভরে যাবে পাপে ,
এখন এই সময় নিঃসঙ্গ নক্ষত্রটি রাত জাগা মেয়েটির মত ধুঁকছে ,
এই মাত্র আমি ক্লান্ত , তপ্ত ধাতব খাঁচায়
গুম হয়ে পরে আছি
নক্ষত্রের ক্ষীণ আলো অসংখ্য বেত চালাচ্ছে
আমার বুকে পিঠে ,
এই বিনাশ্য আকাশে জলজ্যান্ত পাশবিক অনুভূতি
ধিরে ধিরে জমাচ্ছে একুশের ব্যর্থতা ।

গভীর রাতে সুয়েজখাল একটা পালতোলা জাহাজ যাচ্ছে ভেসে
তার দেহে মিটমিট আলো ,
এই অন্ধ খুপরিটায় থেকে থেকে বেশী অন্ধ হয়ে গেছে হৃদয় ,
নীল ফ্রকটা একটু একটু করে ঝাপসা হয়ে আসছে ...
আমার ঘুম আসছে এবার
আমি ঘুমোতে চাই এবার , কতকাল হয় নি ঘুম
মহাকাশের নিচের নক্ষত্রটা একটু দুলে উঠলো বোধহয় !

















।।
মধু সনেট ......

এক সনেটে নিবদ্ধ মধুকবি রাতে
উথাল-পাথাল ঢেউ আছড়ে মাতাল
করির হৃদয় বিচূর্ণ হেনরিয়াটা
আর কিছু কচি হৃদয় এই দেশের
জল হাওয়ায় বাড়ছে অনাহারে ,
স্বপ্ন জুড়ে শুধু উচ্চাকাশ মহাকালে
উচ্চারিত হোক আমি সম্রাট যুগের ,
দীনতা মুছে দিয়ে স্বপ্নের কারিগর ।

ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া সুরে তুলেছি বীণা
নবপল্লবে পল্লবে কূজনে কুজনে
সাথিহারা মেঘে সাথিহারা ছিল ভাষা ,
এবার ত্যাজিল জাতি বন্ধনের নাড়ি
আমিও ভুল দিশায়ি খুঁজে পেলাম
স্বপ্ন সারথি আমরি বাংলায় গতি ।















পূর্ব ভগবান

যোজন যোজন ব্যাপি সাতসমুদ্র থেকে ভেসে ওঠে এক সুর
শান্তি ।
হঠাৎ এক দমকা হাওয়ার অভিঘাতে ক্রুশ থেকে খসে পরে যীশু ,
শান্তি ।
মাথালি বদ্ধ মাথা থেকে কিছু জল গড়িয়ে ফসলের উত্তাপে ঘরে ঘরে নবান্ন
শান্তি ।
বন জ্যোৎস্নায় এক চিতল সারারাত নির্দ্বিধায় প্রান্তিক চাষি সন্ধানী মহারাজ
শান্তি ।

সুবিশাল জলপ্রপাতে সংগ্রামী পাথর নতজানু ক্রীতদাস
বিভেদের দুই চাঁদ
এক চাঁদে আমার রুটি
আর এক চাদে আমার স্বপ্নকবিতা ।

এক খণ্ড পাথর ছুড়ে দিই মহাকাশে
আমারই মাথায়
তবু
বুক চিতিয়ে লড়ে যায় পূর্বের ঈশ্বর ।















‎...... পরকীয়া

নির্জনতা ছেড়ে কিছু পরকীয়া
মেঘ অভিমুখী
চলমান অশরীরী যেন ,
বিক্রম তুলে নেন শরীর
"শোন তোকে প্রেমের গল্প বলি "
পথ যাবে কমে
বিক্রম ।
বড় স্বাদ ছিল মনে
অভার চতুর্গুণ
কাম ছিল
ভালোবাসা বা ক্রোধে ,
বিবাহিত জীবন মন্দ নয় প্রেমিকের
প্রথম তিনটি মাস
বঁধু ছিল
মধুও ছিল পাশে ,

বল বিক্রম
তবে কি দেখলাম আমি ?

বঁধু কি মনের সবখানি হয় ?

মনের সুপ্ত গহ্বরে গোপনে যে বীজ থাকে
সে বীজের বিকশিততায়
দ্বিতীয় আমি
সেখানে ডাকি
আয় সখি
আয়
আমি তুমি ভেসে যায় অকূল দরিয়ায় ।

সে তখন বিপরীত
অভিমুখে
মনের দ্বিতীয় মরণে ।

উত্তর দাও বিক্রম......
আমি কি ভুল ?
অথবা আমার স্বপ্ন
অথবা স্বপ নারীর সান্নিধ্য !











‎....পাগল

তারপর থেকে তুমি জাল বুনে চলো
রঙের বিচিত্রতায় , ছায়ার অন্তরালে ঝুপকরে নিরালা সূর্য
মুখ লুকিয়ে টুকি টুকি
তুমি হেসে ফেলো
আমার কাজ পণ্ড হয়
জালের মহিমা দিয়ে আমাকে জড়ানোর তোমার ভীষণ প্রয়াস ।
আমি পা ফেলি স্বর্ণ নৌকায়
বিবর্ণতায় গ্রাস করে নেয় আলোর উৎসমুখ
রঙ ক্ষয়ে ক্ষয়ে ঝরে পরে
তুমি টুপ টাপ তুলে আঁচলে
ছুড়ে দাও বেশী অন্ধকারে
যেখানে অতীত বর্তমান ভবিষ্যতে কিছু অন্ধকার এসেই যায়
এসেই যায়
আমরা পারিনা সরাতে ।
পরিবর্তনে ভেসে ভেসে উঠি যখন
তখন কিছু সূর্য আমার চোখের সামনে
তোমাকে দেখিনা
আমি বনে-বাদারে ছুটি পাগলা হাওয়ায়
যতো সামনে এগোই
পেছনের মাটি তত সরে যায়
আমি চিৎকার করি
তুমি কোথায় তুমি কোথায়
জনমানবহীন প্রান্তরে কিছু শব্দ প্রতিধ্বনিত এগিয়ে চলে......
আমি থামি না
ঐ তো তোমাকে দেখছি
ন্যাংটো
দল বেঁধে তোমরা এদিকেই
হাতে কি ? 













চুল্লি

বৈদ্যুতিক চুল্লিতে যে ত্বেজে জ্বলছিলে তুমি
তার থেকে ঢের বেশী তাপে জ্বলেছিলে তুমি এখানে ,
তাই যন্ত্রণা একটু কমই লেগেছে
শ্মশানে বল ?
প্রথম প্রথম যখন জ্বলন শুরুহয় তখন জ্বলন একটু বেশী থাকে
ফোস্কা পরে ভোগায় অনেকদিন
তার পর থেকে গা'সয়া হয়ে যায় ফোস্কা গুলো , সুনিপুণ ভাবে
পশ্চিম বস্ত্র আভরণে ঢেকে দিয়ে
যখন ৪৬ বাসের হাতলে হাত রাখি
তখন পৃথিবী ১০ টা - ৫ টা ছুটছে
আমাদের গরমে বাস ভ্যানিসের পথে ।

বল তুমি শান্তিতে দাড়িয়ে আছো এখন !

হ্যা দাড়িয়ে আছি বসন্তে ।
জীবনের পোড়া দাগ মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে ,
তুমি সহ্য করে নাউ কিছু উত্তাপ
সহ্য করো কিছু উস্নায়নের তিনকাল......
শ্মশান প্রশস্তিতে আমি আছি
বৈকুণ্ঠ সিঁড়ি ভাঙবো একসাথে আমরা দুজন ।












পৃথিবীর রঙে মুছে দেয় আমার বিলীনের স্বপ্ন
ভাস্বর এই অধিষ্ঠানে আমি পতনের মহারাজ ,
নির্লিপ্ত চোখে দীর্ঘশ্বাস তবু ভাললাগে জেনেটিনিয়াস
বিষধর র‍্যাটেল সর্পের ন্যাজে পা রেখে আমি বলি ...
প্রভু মরেই তো আছি , মরণে আর কি শাস্তি দিবি !













গল্প পুরুষ

প্রথম পুরুষ ......

বার্থরুমে জলের উপত্যকায় স্পর্শ পরলেই
নাভিপ্রদেশে কেন্দ্রবিন্দু তৈরি করে এক শিরশিরানি অনাহুত উল্কা
এক ঝাক্কাস ধাক্কা
মাঝ দরিয়ায় পাল খুলেছে মাঝি বৈঠা উঁচিয়ে রেখে
নিরুদেশের যাত্রী ।

দ্বিতীয় পুরুষ .........

হাত রেখে দেখি আগুনে জ্বালাবে কতোখানি মোম
কতখানি দহন গুনে আগুন শক্তিশালী ,
চোখ দেখি , যেভাবে ডাক্তার দেখেন কতকাল হয়নিকো ঘুম
অথবা নিঝুম ঘুমে সারারাত ,
একটা সন্ধানী কুকুরের স্মরণ মহিমায় আমি খুঁজি
আঁধারে ঢিল মেরে জলে কি কম্পন ওঠে
আমি প্রেম
সে আমার দ্বিতীয় পুরুষ ।

তৃতীয় পুরুস............

স্বপ্ন বলতে ছাতের কার্নিশে বটগাছ উপড়ানো দিনরাত
প্রথম আগাছা দ্বিতীয় আগাছা পরিষ্কারের আগেই যেন তৃতীয় আগাছার জন্ম
আমি আস্ত একটা বাড়ি অথবা কর্ষণে কর্ষণে প্রস্তুত আবাদি
আমার বুকের বা পাশ থেকে একটা নদী বেড়িয়েছিল অনেক আগে
পূর্ব থেকে পশ্চিম অথবা উত্তর থেকে দক্ষিণ
ভীষণ স্রোতে ভেসেছে অতলান্তিক নাবিক
সে সব এখন পেছনের সারির গল্প
যা হোক
আমি তৃতীয় আগাছা পরিস্কার করিনা আর .........
তার নরম লোমশ বুকে মাথা রেখে সুন্দরের চাঁদ দেখি ......

এবং পুরুষ .........

আমি বছর বিয়োনো পুষ্ট গাভিনি ,
কিছু জন্ম আসে প্রতিরাতে
কিছু জন্ম নলকূপে পরে হাফিয়ে অর্ধমৃত পালিয়ে বাঁচে ,
আমি হাত রাখি প্রেমিকের বুকে...... সে
হ্যাপিস
তার দুঃখ দিয়ে আমাকে সুখ নিয়ে যায়
আমি প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে প্রেমিক খুঁজে যায় অথবা প্রেমিকার খরিদ্দার ।













‎...... জাতি

নিরন্ন যাযাবরে পরিযায়ী জন্ম আর ইতিহাসে দৌড়ানো
অস্থির সময় , মন খনিজ সন্ধানে নিবিড় উত্তাপহীন বন শ্বাপদ সঙ্কুল পাথুরে
রুক্ষতার প্রাচীর ধরে আমি হিন্দ নদী কূলে
হয় বাহিনীর পিঠে কোলের সন্তান গিরহস্ত হাঁস মুরগী
আমি বাদামী চুলের অভিযাত্রিক , এই দেশে ।

কিছু জংলী জানোয়ারে সাপে মহামারী তাপে সেখানেই ,
অর্ধ উলঙ্গতার অভিবাদনে আমি সম্রাট বটে ।

প্রবাহিত ধমনী রক্তে না বাদামী চুল না কালো চুলের অস্তিত্ব ,
জংলী গুলোকে সর্ষে তেল মাখিয়ে
গন্ধব বিবাহ পর্ব
সে ছিল আমার পিতা অথবা মাতা ......

জন্মগর্ভ আমার কাছে চিরকাল ব্যাঙ্গাত্বক ।
তুমি কি বলতে পারবে রক্ত
তুমি বিশুদ্ধ যৌনচারণে তুমি সিদ্ধহস্ত !









‎... শরণার্থী ......

নিয়ম বহিঃভূত এক নিয়মে
আর কত শেখাবে মেঘমল্লার ঝোড়ো বাতাসে বৃষ্টি গান , তৃপ্তি নয়নে
আমি ভগবান , সমূলে উৎপাটনে বটবৃক্ষ ,
কত কাল আগে আরো কতকাল পরে দাড়িয়ে থাকে ভালোবেসে নদীর গন্ধবাতাস
তুমি জানো না ?
আমি কাজ করি হাতুড়ী শাবলে
আমি কাজকরি সংঘবদ্ধ হাতে হাতে জন্মের আগে জন্মের পরে অথবা
ঈশ্বরের জন্মেরও কিছু আগে এখানেই
তুমি দ্যাখো না , তুমি দ্যাখো না বলেই ঘাম দিয়ে চরণামৃত বানিয়ে
আমি খেয়েছি আমার পিতা খেয়েছে এবং আমার সন্তান ।

আমি অগ্নিবলয়ে , অগ্নি উপত্যকায় খেলছে কিছু যীশু নগ্ন পায়ে...
স্বর্ণ রথে তুমি চলছো সুদূরে
আমাকে দেখতে পাচ্ছ না উপর থেকে
আমি হাত নাড়ছি
" শুনছেন , শুনতে পাচ্ছেন আমার কথা , বলে দেবেন তাকে , যুগে যুগে আমরা
শরণার্থী , সে দয়াময় ছিল কবে ?













‎......... বিদূষক

প্রথমত বিদূষক আমি
যখন ছোঁয়াচে রাগে মাঝিমল্লা দখিন দরিয়সায় নংপুংসক রাত্রি উপভোগ
যখন আমি খোলা কাছাধরে সম্ভোগে সমুদ্রের পোয়াতি ঝিনুকে বুক রাখি
যখন সাদা বক চুমু খেয়ে প্রিয়তমা ঠোটে বাঘের প্রতিদ্বন্দ্বী মাতলা নদী ।

আমি হেসে উঠি
হেসে ওঠে পূর্ববর্তী "নলের" বংশধর আমার
সমুদ্র মন্থনে অমৃত , বিষ নেই ত্রিভুবনে আর ।

আমি বিদূষক থাকি না
একটা বুলেট এফোঁড়- ওফোঁড় ভগবানে বুকে তির তির রক্তে মন্দির ।











‎......বর্ষা আসে বর্ষা যায়

ঠিক এখনো আকাশের বুকে কালো মেঘগুলো জমেনি
বাতাসের গায়ে চৈত্রের ভ্যাপসা গন্ধ ছুটছে
তীব্রদাহে লালমাটি ফেটে চৌচির , এক মনে
ভুবনমোহন বিচুলি কাটে ,
বাঁধে যে বিপদসীমা থাকে তার অনেক নিচদিয়ে
বইছে জল , বিখ্যাত নদীর মগ্নচরা ফুলে ফেঁপে উঠেছে
সওদাগরী জাহাজ বিকল্প হলদিয়ায় , প্রান্তিক চাষির ঘরে
কোন দিন আগুন জ্বলছে আগুন জ্বলছে না ।
দাদুরির ডাক এখনো কানে আসেনি দাঁড়াসের
শুধু মেঘের ঝড়ে গাছ ভেঙ্গেছে এখানে ওখানে কিছু
বৈদ্যুতিক খুঁটি ভঙ্গুর কিছু চাল উপ্রে গেছে
প্রভাতী দৈনিকের এক কোনে খবর কালবৈশাখী ।

এরপর ছড়িয়ে থাকা সমগ্র ব্যারেজ গুলো , যেগুলো
এতদিন চুপসেছিল তারা সকলেই এখন পৃথক পৃথক
বাছুর খাওয়া কুমীর ,
ফিস ফিস কথা বলতে বলতে ঢেউ গুলো ঢিমে তালে
গ্রিহস্ত বাড়ি , আবাদি জমিকে ভাসিয়ে
জাতীয় সড়কের উপর ১ ফিট ,
রাজপথের উপর থেকে ডাকছে আকাশ , জল চারিদিক জল ।
তখন সরকারী গুদামে অন্ধকার ঘরে
কালো ত্রিপল , খাদ্য যেখানে সঞ্চিত থাকে
সেখানে ইঁদুরের বাসা পোকা ধরা চিরে গুর ,
সরকারী ওষুধ গুলো তদারকি সরকারী কর্মচারীসহ নিঝুম ঘুমে ।

বুদ্ধিজীবী বাসে ট্রেনে বন্যত্রানের অভিযোগ ,
বহু পরিকল্পনা করে যে জলটুকু ছাড়া হয় , সেই জল
জলের সঙ্গেই আরো কিছু নিয়ে গেছে ......
তখন ভাসছে মৃত দেহ , দ্রুত ভাসছে গবাদি পশু
পাগল প্রেমীদের গল্পের গায়গা
বাউন্দুলে কবির পাণ্ডুলিপি , গদ্যময় দুপুর এবং
অন্ধকার গায়ের রাত সোনালী ফসল ।
এখন দিকে দিকে দরদী মেঘনাথের হাতের স্পর্শ ,
পরিকল্পনা এত ব্যাপক তা কার্যকরী ২-৩ পার্লামেন্টের পর ।

এই সুযোগে নদীরা বাড়িয়েছে ত্বেজ , হাসছে আহ্লাদীর মত
মেঘেরা গাইছে পপ সঙ্গীত ।
তবুও আকাশই চাইবে চোখ , নির্মম অহংকার
ভাঙবেই অবশেষে ,
মৃত্যুর কিনারা থেকে উঠে এসে মানুষ দাঁড়িয়েছে আবার
শালীনতার ভোর
এদেশে মানুষ মরে
তবে বর্ষা আসে বর্ষা যায় ।









সে আছে সেখানেই

এই অন্ধ খুপরিটায় বন্ধি করেছি নিজেকে ,
বেশ কিছু জীর্ণ মায়া অহরহ তবুও এসেই যায়
পারিনা সরাতে ,
ক্ষণিকের উদ্দাম ঝড়ে ভেঙ্গে পরে বহু শ্রম, ঘামে ভেজানো
পাখির শান্তি নীড় ।
যেভাবে রক্তের উষ্ণতা জিইয়ে রেখেছিলাম এতো দিন
তোমার অভিপ্রায়ে , যেমন
ভেঙ্গে যায় রোজ রাতে মন
সকালে জোরা লেগে যায় চায়ের কাপে আবেশে ।

কতো কিছু পারিনি বলে
কতো কিছু হাতছানি দিতে দিতে দূরে , নাগালের অনেক দূরের
রক্তিম প্রজাপতি ,
যে সব মনে
বৃষ্টি ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ
লেগে থাকে
মৃত্যুর আগে
পরে ও বা !
তারা জেনে গেল না তবু
মায়াবলে আছে কিছু বেঁচে !
এই প্রেমে নেই কোন জয় পরাজয়
যখন বুঝতে পারি
তখনো আমি মরীচিকা আশাবাদী ।

জীবন যৌবন স্রোতের অনিবার্য আকর্ষণে সৃষ্টির নিয়ম ব্যঙ্গাত্মক
উগ্র সাহসে , ভেবেছিলাম যা পেয়েছি তাকে দূরছায় রাখবো
আমারই মতন ,
সরে যাবে কিছু দিনে অমর্যাদায় ।
তবুও তাকে পারিনা সরাতে
আমি যে দিকে যায়
সেও সেই মুখে , বাঁকে গিয়ে বার বার দেখা হয়ে যায় ।









‎......আকাশে উড়বার গল্প

আকাশেই তো ভেসে যাচ্ছিলাম ,
তবু কাটা ঘুড়ির মত পাক খেতে খেতে
মাটিতে নেমে আসতেই হল...
মাটির মা মা গন্ধে না তোমার
হাতের লাটায়ের টানে , কে জানে !
নেমে আসতেই হ'ল ,
তোমার মায়াবী দুটি রাক্ষুসি হাত যুবক বয়সের
কব্জি চেপে ধরলো , হাতের চাপে লাল নীল
শিরা উপশিরায় ছবি ভেসে উঠলো হাতে ,
তাতে বেনুনি নদী অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ , পাহার পর্বত সমুদ্র অথবা
পৃথিবীর মানচিত্র উঠে এলো নিমেশেই , তার পর
শেষ প্রণয়ের গারহ উচ্চারণে তুমি উচ্চারণ করলে
অশেষ দুঃখ আছে জীবন ভর
অনন্ত গভীর দুঃখ
নদী কিম্বা মেঠো কথ
ফুরতে চাইবে না কক্ষনো !

ছোট্ট মেঠো পথ ধরে হাঁটছিলাম
হাফিয়ে গেলাম হাঁটতে হাঁটতে , তুমি
আমার পেছন থেকে উড়ে গেলে কিনা বুঝলাম না ,
ভয়ঙ্কর অন্ধকারে কালো হয়ে গেল
পৃথিবীর সব রাস্তা গলি
মনে করতে চাইলাম তুমিই কি প্রথম
শিখিয়েছিলে প্রদ্ধতি
নির্ভয়ে আকাশে উড়বার !

উড়তেই যদি সত্যি শিখে থাকি
তবে বাঁধা কোথায় পাহার সমুদ্র নদীর প্রাচিরে...
নাই বা পেলাম পথের শেষ
পথ না ফুরনোর গ্লানি কি বা এসে যায়
আমার জীবনে , জীবন তো স্বপ্নের , পলাশ ,
তুমি
প্রথম প্রণয়ের গভীর আবেশের চেয়ে
আর কত বেশী দুঃখ দেবে ?











‎.....গোপনে

আমরা অবশেষে এ- ওর মুখ চাওয়াচায়ি করলাম
তবুও হারানো কথা ফিরে এলো না ভাষা হয়ে ।
এখন প্রত্যেকের কাছে সকালে পৌঁছে যায় ৪-৫ টি
প্রভাতী দৈনিক , আমরা প্রত্যেকে খুঁটিয়ে পড়ি এবং
অবশেষে বুক চাপড়ায় ... রক্তের গতিকে ঠিক রাখতে !

ইতিহাসের পাতা চোখের সামনে ঝলসে ওঠে ,
পোড়া মাংসের গন্ধ ওঠে , যেন রক্তের আদিম যুগ
আদিম রক্ত কথা কই ,
আমরা পেড়িয়ে এলাম বিরামহীন পথ , তবুও এখনো
আদিম বর্শাফলক শোণিত ধারায় স্নাত হয়,
ভাইয়ের রক্ত পান করে ভাই ; অথবা

আমরা যারা কাণ্ডজ্ঞ্যানহীন অসহয় ভাবি , তারা প্রথম প্রথম
নাম , তার পরে জায়গার নাম মনে রাখবার
ভীষণ প্রকট চেষ্টা করি
তার পর দেশে বন্যা , ভূমিকম্প কিম্বা খরা এলে ভুলে যায় , যদিও
দোকানে দোকানে পশরা তার নিজস্ব তালে শেষ হয় !

পৃথিবী এখন তার পাশবিক খেলায় মত্ত ;
এখেলায় ভাইয়ের রক্তে ভাইয়ের স্নান হয় ,
আমরা যারা বুদ্ধিজীবী , যারা কাগজে উক্তি দেন ,
যারা প্রবন্ধ লেখেন , এবং তারা , হায়
গভীর মনস্তাত্ত্বিক দুঃখে ভোগেন !
আর যারা দেখেও না দেখার ভাণ করে
সন্তানের সুখ স্বাচ্ছন্দ এবং ইত্যাদি নিয়ে আছেন , তারা
প্রত্যেকেই কুম্ভকর্ণ ঘুমে সুখে আছে , এবং
সত্যি সুখি !

অবশেষে আমরা মুখ চাওয়াচায়ি করি ,
আমরা প্রত্যেকে নিরবে হাসি ? গোপনে ? ভীষণ গোপনে ?











বিনুনি দেখা

বর্ষা ঋতু শিখে নিতে হয় ; এখন নিচ্ছি ।
যে গৃহ অঙ্গনটাকে পরিত্যাক্ত ভেবেছিলাম মনে , তার অনাবৃত বুকে
সারাদিন রাত এতো এতো অনাবৃত বৃষ্টি ছুটে এসে ,উড়ে এসে পরে , দেখি
এবং মাটির মোটা দেওয়ালের ক্ষয়িত মাটি
ভেসে যায় , নদী জলে মেশে , আর
রিমঝিম শব্দ গুলো সব নিস্তব্ধতায় , আমি
সারারাত শব দেহ কোলে করে একা বন্ধী হয়ে থাকি ।

সাধারণত নিজের ঘর নিস্করজমি খুঁজে নিতে হয়। দেখি
কাছে তরুণ গাছটির নরম ডালে একজোড়া
শালিখ গভীর আগ্রহ নিয়ে এসে বসে ,
ভিজে শয্যার প্রচ্ছদ ঘেঁসে তামাম বৃষ্টির গন্ধ ঠাওর
করা যায় , বুঝি বিশুদ্ধ গন্ধ , মাটির কাছাকাছির ।

উঠোনে ডাই করে সাজানো মরা গাছের কাঠ
উলঙ্গ বৃষ্টির সাথে ক্ষমতার লড়াই করে ,
আমার মনে পরে যায়
আমার জন্মের প্রত্যন্ত জন্ম সময়ের বৃষ্টি রাতের
আগুনের গল্প কাঠের ।

আমার ফেলে আসা গ্রাম দূরে কুসুমের মত
নিথর নিস্তব্ধ একা পরে আছে ,
গ্রামের পুরনো মন্দিরে
নিথর রাত্রে ঘণ্টা গুলি নিরালম্ব বাজে একটানা
নিঃসীম দমকা হাওয়ার অভিঘাতে ।
সব শুনতে পাই , বুঝে নিই , দেখি আমি নিজে হাতে ঘণ্টা গুলি
চাতালে নামিয়ে রাখছি ,
যেহেতু কাজ করছি তাই অন্ধকার রাত্রে বৃষ্টির
ম, ম্‌ , বুনো গন্ধ আমার সারাগায়ে লেগে আছে ...

আমি বৃষ্টির রাতে অনন্ত মেঠো কাঁদা পথ
মারিয়ে সীমান্ত পেরুতে চাই ,
তার পর আর কিছু নেই ।
এর পর বেশী চাওয়া শূন্যতার , প্রতিশ্রুতি তো দেইনি
এই বর্ষার রাতে মেঠো পথে জমা হবে একা ...
সুতরাং কান্তারে এসে দাঁড়ালে ... তখন দেখা যায়
কালো অন্ধকারে কালো মেঘের মাঝে
কালো চুলের বিনুনি






সময়ের বৃষ্টি

প্রেম ! হাঁ প্রেম !
কতকাল পরে ভাবতে বসেছি
সত্যি ভাবতে সময় পেলাম কৈ ,
টারবাইনের বেগে ছুটছে জীবন
মনে পরেনা কবেকার দেখা
কচি মুখ আরক্ত চোখ ,
সব পেরিয়ে গেছে চাকায় চাকায় আর
টাকায় চক্কর খেতে খেতে ।

আঃ কতকাল পরে বন্ধু গুলো
একপাতে বসেছি
বিক্রমের হাত চাটছি , বরফের মাছের
আঁশটে গন্ধ গ্লাসে ,হাতে ,
আহা এমন একটা নিজস্ব দিন দীর্ঘ হোক ।
এমন দিনেই তো বন্ধুর হাতে হাত রাখা যায়
মুখদিয়ে মুখ আয়রন করা যায় , কিম্বা
দেবিকার কথা বা
মুখ গভীর করে চল পালায় ।

মনিকারে মনে পরে না ?
ছোট্ট বয়সের গভীর মনের বড় মনিকা ,
পঞ্চায়েতের রাস্তায় কত সাইকেল চেপেছে ,
মনখুলে হাসতে পারতো ,
আজ গ্রিহস্ত সুখে হাসে নিশ্চয় ; হাসে না !

আমাদের সময় কম , আরো কম ভালোবাসা , বেড়াতে যাবার
একান্ত নিজস্ব একটা দিন ,
চল এবার বাস্তুভিটার মরচে সাইকেল গুলোকে নিয়ে সবাই
পুরনো রাজবাড়িটার অলিন্দ
ক্ষয়ে যাওয়া জানলা-কপাট
নিরেট একটা দিন ধরে দেখবো
শেয়ার করা সিগারেট টানবো
হাসবো প্রাণ খুলে হাসবো ,
দেবাশিস আজ একটা সময়ের বৃষ্টি হোক
ষোল থেকে বাইশের
মনের বন্দরে একটাও চল্লিশ আসবে না , মনে
প্রেমের বাজনা এলে নতজানু চেয়ে নেবো
আর একটা সময়ের বৃষ্টি ,
এই বৃষ্টিতে হাতে হাত ধরবো্‌ , নিসচুপ ,
চুরি করে গারহ চুমি দেবো
রক্তজবা চোখে তাকিয়ে দেখবো
ফ্রকপরা মামনিকে নিয়ে কবিতা লিখবো
মাননি সংসারী নিশ্চয় ?
হোক ! আমরা গাড়িতে কতপথ ভেঙ্গেছি
মানবিক পৃথিবীও হয়তো
বার কয় পাক খেয়ে গেছে
এবার খুজে আমি পাবোই তাকে ; পাবো না ?
গোপাল এমন একটা দিনে তুই সংসার আনিস না ,
স্ত্রী বায়না , পুত্র ভবিষ্যৎ ,
এমন একটা দিনে শুধু নিরেট প্রেম
শেয়ার করা সিগারেট
আর সময়ের বৃষ্টি ,

আঃ কতকাল পরে একপাতে হাত রেখেছি ।









‎......নিয়ম

তারপর আলোকপাতের দিকে মুখরেখে বসি
যেমন করে আমার তৃতীয় বা চতুর্থ পূর্বপুরুষ অথবা আমার গ্রাম
এখনো বসে
এখনো বসে আছে স্থির প্রতীক্ষিত আলোর দিশায় ।
এখনো ঢের কিছু জন্ম
এখনো ঢের কিছু মৃত্যু অন্ধকারের পথে ।

আমাকে মনেপরে প্রপিতামহ তৎ প্রপিতামহ ?
এখানকার জল হাওয়ায় বেড়েওঠা প্রতিটুকরো সময়ের স্মৃতি
তোমাকে এখনো কাঁদায় ?
এখনো কি লবন জলে স্নান অথবা সমাধি ?
এখনো কি আমার জিহ্বায় তোমার স্বাদগ্রন্থি ?

প্রপিতামহ তৎ প্রপিতামহ ,
মনে পরে আমাকে ? চেন কি আমায় ? তোমারতো চিনবার কথাছিল আমাকে
অথবা তোমাকে চিনবার আমার...
তোমাকে দেখিনি আমি
যেমন দেখিনি কতকিছু আমি......
গল্পেও খুঁজে পায়নি তোমার আদলে আমার মুখ
খুঁজে পায়নি তোমার পেশীবহুল শরীরে আমার শরীরের মিল......
তবু

শ্রুতি গল্পে শুনেছি
তুমি পাগলছিলে !
তোমার মধ্যে আরো একটা আস্ত তুমি ছিলেনাকি তুমি !

প্রপিতামহ তৎ প্রপিতামহ ,
তুমি পাগলছিলে কেন ? তোমার গোলাভরা ধান ছিল , হাঁসের ডিম ছিল
বাঁধানো পুকুরছিল , সুন্দরী নারী ছিল !
বল তুমি আজ ? তবে কি প্রেম বিবাহ ভালোবাসা নারী
জীবনের সবটুকু নয় ?

প্রপিতামহ তৎ প্রপিতামহ !
রক্তেরগুণ তবে সংক্রমিত ব্যাধি ?
যা আমার পিতামহের ছিল না
যা আমার আমার পিতার ছিল না......
তা আমার মাঝখানে বিদ্যমান .........
নিয়মের রাজত্বে নিয়ম বুঝেনেন তবে হিসেবনিকেশ নিয়মেই !










দুরন্ত দানব ছুয়ে দিয়েছে আমার যৌবন পাঠশালা ,
আমি একটি রাতে দুটি রাতে
আমি তৃতীয় রাতে নারী থাকিনা
আস্ত টাটকা শরীরের চারপাশে ঘিরে থাকে হায়না ।
সংঘবদ্ধ অভিমানের চাঁদ উঠে চারিত্রিক আকাশে
এক সময় আলো ছিল এখানে
কোন সময় আলো ছিলোনা এখানে ।

















পতনে আমি

অনাহুত নক্ষত্রপতনে ঢের কিছু জন্ম এসেই যায় ভালোবেসে জল আলো অথবা মাটির গন্ধ ভালোবেসে । জীবনের অন্তরালের জীবন কিছু ভোগে ভেসে ভেসে অবশেষে কূল খুঁজে যখন হন্য , তখন উপরের নির্দেশক দুষ্টু হেসে এমনটাই তো হবার কথাছিল বন্ধু ! এমনতরো হবার কথাছিলোনা তবু হয়েই যায় । রোদ বৃষ্টির মিলনের গল্পখুব কম , তবু পথ চলতে চলতে পাশাপাশি অনিচ্ছাসর্তেও অযান্ত্রিক নিয়মে কখন মিলনের মর্যাদার ঈশ্বর তুমি করতে পারো কি অস্বীকার ? গল্পের প্রয়োজনে জীবনের অস্তিত্ব শূন্য , জীবনের প্রয়োজনে গল্প বা সত্যাচার । জীবনতো কিছু ব্যতিক্রমের যুগলবন্ধী সমাহার , যন্ত্রণা পেড়িয়ে পেড়িয়ে নিয়মের রাজত্ব ভাঙ্গবার সখ আমার সেদিনও ছিল আজো আছে । চলতে চলতে ভুল পথে চলছি বুঝেও হঠাৎ থাকা বড় মর্মবিদারক , কিছুটা পথ চলতেই হয় সামনের পথ বোধহয় মসৃণ ভেবে ।

বেশছিলাম "শান্তিবালা মডেল হাইস্কুলে " সহকারী বাংলা শিক্ষিকা হয়ে বিগত সাতাসবছর । কোন শোক নেই আর , প্রতিদিনের যুদ্ধে জয়-পরাজয়ে কি করে যে অনিমেষের নাম পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলাম এখন ভাবলে আশ্চর্য লাগে । অনিমেষ আমার প্রথম পুরুষ , চলমান স্বপ্ন বিয়ে করেছিলাম কয়েক যুগ আগে ভালোবেসে , পতনের সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক নিবিড় , চিরকাল পতন ডাকে আয় আয় আমাকে গ্রহন করো , আর আমরা অনিশ্চয়তার দিকে পা বাড়িয়ে সূর্য প্রতিদ্বন্দ্বী ।
যে জল আলো বাতাস উত্তাপ পেলে তিরতির করে বেড়ে ওঠে বৃক্ষ সেই গুলোই অনুপস্থিত ছিল আমার বিবাহিত জীবনে , অল্পদিনে আমি সন্তান জন্মানোর মেশিন হয়ে প্রজ্ঞান কে নিয়ে এলাম এখানে , ভেবেছিলাম এবার স্থির হবে অনিমেষ , পেলাম না , আমি যেন কানামাছি খেলছি , হাতড়ে হাতড়ে ধরতে পারছিনা অনিমেষ কে ।

অগত্যা বেড়িয়ে আসতেই হোল , শান্তিবালা স্কুলের কাজতাই বাঁচিয়ে দিলো আমায় , জীবনের লক্ষ বলতেই শুধু প্রজ্ঞান , ওর মুখেই আমার জগত , আমার হাসি আমার কান্না আমার অভিমান সবখানি ওকেই নিয়ে । সময় বড় বেয়াদপ মানে না কারুর কথা , কখন যে আমার চুলে পাক ধরেছে বুঝতেই পারিনি , বুঝতে পারেনা বোধহয় কেউ ! প্রজ্ঞান এখন হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ছে , ওর ভবিষ্যৎ চিন্তা আমাকে অস্থির করে তোলে নিয়ত , সদা সতর্ক থাকি , অনেক আগে পারমিতা দি ( আমার স্কুলের শিক্ষিকা ) বলেছিলেন " ছেলের সাথে বন্ধু হয়ে মিশবে , তাহলেই আবিষ্কার করতে পারবে ছেলেকে ) আমিও চেষ্টা করি বন্ধু হতে , বলি যা করবে আমাকে বলবে ,
কিন্তু আমি কি পেরেছি বন্ধু হতে ? আমি নিজেই বলতে পারিনি আমার কথা আমার সন্তানকে ...

সেদিনের কথা আজো মনে পরে , রবিবার , সারাদিন কাজ , টুপ টুপ বৃষ্টি ঝরছে , হঠাৎ প্রজ্ঞান হাজির সঙ্গে এক ফুটফুটে শ্রাবণ , আমি ব্যস্ত হয়ে উঠি , আমার ছেলে তবে এবার বড় হয়ে উঠেছে , হেসে ফেলি , প্রজ্ঞানকে ডাকি একান্তে , কি করেছিস ? মা ওর নাম প্রিয়ংবদা , আমি ভালো বাসি ...... আমি মনে বলি পাগল ছেলে আমার ।
প্রিয়ংবদার কাছে এসে বলি । নাম কি তোমার " প্রিয়ংবদা সেন ? কোথায় থাকো অশ্বিনীনগর ... আমার বুক ধুরপুক শুরু হয় , (এখানে কেটেছে আমার তিনটি বিবাহিত বছর ) নিশ্বাসের বেগ বাড়ে , বাবার নাম " শ্রী অনিমেষ সেন......... আমি অনিমেষের মুখ খুঁজি .........




















































No comments:

Post a Comment