Monday, 12 March 2012

কিছু কবিতা


কেউ পড়ে না শুধু আমি পড়বো

বিষাদপুরী থেকে ওঠে এক বলিষ্ঠ ঢেউ , কেমন আছিস ?
আমি দুই- চার কলম লিখি বলেই ভাবেছিলাম
আমার ক্ষুধা পাঠাবো রঙ্গিন খামে তোমার ঘরে ;
শত চেষ্টা করি তোমাদের ঠিকানা জোগাড়ের
কিন্তু ঐ পর্যন্তই , আমি হাতরে হাতরে ধরতে পারিনা তোমাদের ঠিকানা
যেখানে থাকবার কথাছিল তোমাদের তোমরা নেই সেখানে
যেখানে থাকবার কথা থাকে সেখানে থাকে না কেউ !
শুধু জন্ম- জন্মান্তর ধরে আমার এই ধুলি জন্ম
আমি উড়ে চলি নদী মুখে হাওয়ার বিবর্তনে ,
ফিরে আসি গোরুর পায়ে পায়ে গোধূলি রঙ মেখে প্রথম জন্ম স্থানে ,
বন্ধু , ফেলে রাখা নর্তকীর স্মৃতি সম্বল লাল চেলি
নলকে , দীর্ঘশ্বাস অবহমান বিষাদ বায়ুর ,
সঙ্গী নেই , বান্ধবহীন তৃতীয় জীবন
গচ্ছিত কপ্পুর উবে গেছে সন্ধানী সূর্য ত্বেজে ,
জানা কথা গুলোও অজানা লাগে
জানা ভবিষ্যতও অজানা মনে হয়
যখন তোমার বাহু ডোরে আমার শারীরিক পতন ।

















যৌথ খামার

এমনভাবে দুঃস্বপ্নের মধ্য গগনে ঢুকে গিয়ে রোদের গান হয়ে
ঝরে পরুক আশা ; এমনটি চেয়েছিলাম আমি কাব্যিক সুরেলা কথা ছেড়ে
তরঙ্গ তরঙ্গিত পুরুষ কণ্ঠে মেঘের গান নয়
তাণ্ডবে গলা ছেড়ে গেয়ে উঠুক সালিখ পলয়ের গান ।

বিষাদের কালক্ষণে তুমিই তো চেয়েছিলে ধুলি পাথর ঘামে
হোক স্বপ্নের অপমৃত্যু ; ধনাত্মক অনুভবের কানাপুকুরের পানা জলে
আর একবারও কাঁপে না যেন যৌথ মূর্তি ;
একবারও শিরা উপশিরার বিদ্রোহী রক্তরসে যেন না থাকে অনুভব
অষ্টাদর্শী নূপুরের রিমঝিম নিস্তব্ধতা্র ।

পেড়িয়ে এলাম বিরামহীন কক্ষপথ অতীতের ; ঘৃণা উপেক্ষিত
মল মাসের সঙ্কটের উপোষী পূর্ণিমা ,
ক্লান্ত নয় তবু ; ভুলিনি এক জীবনী মাদারি খেল ,
সময় অফুরান নয় পলাশ ;
যে স্বপ্নে তুমি ছিলে শুধু আমি নয় সেখানে তুমি জীবন্ত ;
এবার দাঁড়িয়েছি জনতা আদালত ভীরে
খুলে ফেলেছি বর্ম একমুখী জীবনের
কত দুঃখ দেবে তুমি আর
আমি খুঁজে পেয়েছি রাহুলের মাঝের জীবনের সারংসার......
শুধু দুঃখ কে ভাগ করে নাউ জীবনের যৌথ খামারে ।





















রামায়ণ

এক মুঠো গোলাপি আতরে সূর্য স্নান গোধূলির ,
তুমি সাদা হাঁস রাঙা জ্যোৎস্নায় আয়নার সুন্দরীর প্রতিদ্বন্দ্বী ,
খুলে ফেলে রাত পোশাক ঝর্ণা সাওয়ার হয়েছে নারীর ,
দিব্যকান্তি জ্যতিপ্রভা মোম আলোয় স্বপ্ন ফানুস উড়িয়ে
তুমি দাঁড়াবে যখন প্রেম বাসন্তিক রঙে কৃষ্ণচূড়ায়
আমি নির্জন অগ্নি স্রোতে দুই কূল ভাসায় ।

নির্জনতার বলিরেখায় আক্ষেপের বিমূর্ত ছায়ানট কাব্যিক সনেটে ,
হিতকারী গাছের গহ্বর কোঠরে এককালীন কুঞ্চনের সঞ্চয় ,
এক পেয়ালায় সূর্য তারা ভালোবাসা নারীর উষ্ণতা চুমুকেই ,
ঋতুসরণী ছায়া পথ শরীরের নব্যতায় মননের দিশা এক ভাবে একপথ ,

জৌবিক ঠোটে লেগে থাকা কাঁঠালের আঠা রস বার্ধক্যের কাশি
ঘুম ঘোরে পান্থ নাবিকের সমান্তরাল রোম বন্দর পশরার কীর্তন ।

একমুখী গমন আলোর সুতীব্র রেস্নাই নারী মুখি প্রত্যাগমন ,
বাল্মিকি স্তুপে ওম শান্তি রামায়ণ লেখালিখি ।















‎.মৃত্যু

কচ্ছপের খোলস বদলে বদলে
এক হৃদপিণ্ড ;
তবু সোজা পথে গমন
মৃত্যু জেনেও ;

বা পাশে এক চাপরে উপ্রে আসে আমার হ্রিদ
বাঁকা পথে গমন
মৃত্যু জেনেও ;

মৃত্যুর পথ ভিন্ন , কিন্তু
মৃত্যু বিশ্বাসযোগ্য , বাবার মতন আজীবন ।

শৈশবের শেষ পায়ে পতনের কলকাঠি নড়াচড়া ...
আমি যুবক \ যুবতি বা মৃত্যু ।















হেমলক

তবু একবার সঙ্গে নিয়ে চলো এই তপনে ;
কোজাগরী পূর্ণিমা বিন্যস্ত ছড়ানো ছিটানো
শঙ্খ কাচ দাঁত ভাঙ্গা চিরুনির হাতল
থাক ওখানেই , আমি ভুলে গেছি ঘুঘু ডাক
হাঁসের প্যাঁক প্যাঁক কচি ডাবের নোয়ায়
মিষ্টতার সুদীর্ঘ দুপুর ।
এই মুখোশ , এই মুখোশ নাগরিকের সম্মিলিত হৃদয় যেন
তাদের নয় , অতীতের স্মৃতি ঘ্রান অথবা পানের বরজ
অথবা কোদালের আন্দোলনে ক্ষয়ে যাওয়া আয়রন
আমার নয় , নয় কোন পূর্বপুরুষের , নয় কোন জাতির অথবা
নয় ঈশ্বর আল্লার ।
বলো তবে , ঐতিহ্যে শালীনতা আমার রক্তের আশ্রিত
যুগের বদঅভ্যাস , হাতের পায়ের গরিমা সব মিথ্যা !
সবই কি মিথ্যা হয়ে গিয়ে থেকে সুগন্ধ নারী শরীরে
প্রথম রিপু তাড়িত একাকীত্বে !
বলো তবে , উত্তরাধিকার ধানগোলা নিড়ানির হাতলে
সোনার আকৃতি
সব মিথ্যা কংক্রিট অভিযোজনে নারীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে !

আমাকে নিয়ে চলো তপনে এবার......
আমার পিতা পারেননি মায়া রেখেছিল আকর্ষী হয়ে ধরে এখানে ...
আমাকে নিয়ে চলো প্রেম
মুকুট খুলে রেখেছি পাশে সৎ চাষি ঐতিহ্যের , নাগরিক রন্ধ্রে রন্ধ্রে
ছুড়ে দিয়েছি আমার সাবেকী সাজ , বঁধু
যদি ঘুম না আসে কোন এক রাতে উজানের স্মৃতি মেদুরতায়
ভয় পেয়ো না তুমি
হেমলক বিষ রেখেছি পাশে মুখে তুলে দিয়ো ।











রঙ

বিবর্ণ , মুছে গিয়ে প্রসাধনী রঙের বাহার
অতীতে রঙের যাদু
অসহয় ,
আমি চোখ রাখি নীলাকাশে
ফ্যাঁকাসে
পশ্চিমে লাল নিয়েছে গারদে স্থান ,
আমিও খুলেছি দৃষ্টি
রঙ কে হাতকড়া পরানোর বড় প্রয়োজন ।

বিবর্ণ , শহরময় ব্ল্যাকআউট
ঝাপসা ,
টহলদারি সেনা
দ্রাম দ্রাম
ধুলো উড়ছে চামড়া বুটে
আমি জন্ম চাই
কিন্তু মরণ দেখছি নিশ্চিত !
এক টান
হুমড়ি খেয়ে পড়লাম ভেতরে
নিকষ কালো মেয়ে এক ,
সেদিন থেকেই কালোর অনুগত ।

বিবর্ণ , আসলে শূন্য গল্প
যে রঙ থাকে মন জুরে
তাতে আমি থাকি না ,
পৃথিবী রাঙ্গানোর জন্য রঙের সৃষ্টি
সেখানে আমরা ভুয়ো দর্শী ,
যে রঙ্গে নেই আমার অধিকার তাকেই বলি বা !
রঙ আবিস্কার করলে
লাল নীল সবুজে কি এসে যায়
আমি রঙ তো পেয়েছি খুঁজে ।

































হৃদয়

আজ উড়িয়ে প্রেম স্মৃতিকথা
পূর্বরাগের রাধাচূড়া গাছের কথা
বলিষ্ঠ হতে শিখে নেবো বিহনে ।
সে সময়ের আত্মিক বন্ধনে লিপ্ত ঠোটে ঠোটে
মাঘি পূর্ণিমা জ্যোৎস্না
সময়ের পরতে পরতে
হৃদয় মিলনের ধ্বনি ভোট আর
রজনী মেলা ।

গৌরিক বিকালে পেঁজা মেঘ ছুটে চলে
হৃদয়ের আমন্ত্রণে সীমাহীন ভালোবাসার সীমানায় ,
বাইরে দাঁড়িয়েছি , এসে দ্যাখো ,
তোমার কালো কেশে লুকিয়ে আমাকে নিয়ে চলো
অজানায়
আমাকে নিয়ে চলো অতলান্তিক প্রশান্তে রূপাচ্ছাদনে
হৃদয়ের ।

হাত তুলে দাঁড়িয়েছি দেখো জনতায় ;
পাতায় নিমজ্জিত নিমগ্ন শিশিরে শিশিরে অণুপ্রেম
থাকতে দাও আরো কিছুক্ষণ উষ্ণতার বিপরীতে
ভালোবেসে জীবনের ঘ্রাণ ,
ফেলে আসা সময়ের স্মৃতিময় আবেগের লুণ্ঠিত সময়
তুলে আঁচলে মরমিয় বঁধু
আমি খুঁজে নেবো প্রতিটি নারী অঞ্চলে ফুরিয়ে যাওয়া
আমার ভালোবাসার ছোট্ট হৃদয় ।











পৃথিবী

বিস্মৃতির দ্বিপ্রাহরিক দুপুরে হেটে যায় পৃথিবী
সনাতন চালে পা বাড়িয়ে ; রেখে গিয়ে কিছু মায়াবী
শরীর আর মুঠিবদ্ধ হাতের অহংকার , শেষ বিকেলের ।
তখন খাতার মধ্যখানে চাঁদের গলিত ছবি এঁকে
আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী
রঙ মিশিয়ে ছড়িয়ে দেবার প্রতীক্ষায় , জনতায় ।

পায়ে পায়ে মিলিয়ে গেল স্বপ্ন মিছিলের প্রথম ভাগ রাজপথে ;
স্থবির শব উপেক্ষিত রংবে রঙের হলি খেলায় , ফাগুনের ।
যদিও প্রেম , অহংকার , অলঙ্কারে বকধার্মিক আত্মিক আত্মা
প্রথম থেকেই শুরু করেছিলো বুঝে নেবার খেলা যে কতটা রঙ মেশালে
জলে নারী বিহমিত এবং নিজেকে রাখা যায় পর্বতের
প্রথম ধাপে ঝুম চাষে ; আজীবন ।

এভাবেই ইতিহাস ভেঙ্গে ইতিহাস ; পৃথিবীর ।
এভাবেই ভেঙ্গে ভেঙ্গে মন আরো ধারালো তীক্ষ্ণ বর্শা ফলক
প্রেমে ; চটকে চটকে হৃদয় মায়াহীন গল্প শাইলক , পৃথিবী
গভীর সংক্রমণে নিবদ্ধ পাক জলাশয় মশকের জন্মদাত্রী ; প্রেম নেই ,
প্রেম বিহনে জ্ঞ্যান নেই ; লুক্কায়িত ভাগাড়ে শকুনের বংশ বৃদ্ধি ।

দ্যাখ দ্যাখ পৃথিবী পালিয়ে যাচ্ছে এখানে নিরন্ন রেখে অন্য নবান্নে ।
দ্যাখ দ্যাখ কুকুর সাতটা বাচ্চা জন্মদিল সবকটা কে খাওয়াচ্ছে পেটভরে ।
কুকুর মা বটে ! তুমি পৃথিবী ?











জ্যামিতি

হাতের রেখাতে
তিন জ্যামিতিক চিত্র

এক ...আমার রক্ত দাগের আগে ঈশ্বর
গোল্লাছুট ,
রাজা রানী পুতুল বিয়ে
ফুল শয্যার প্রচ্ছদ খাটে ঘুমন্ত নায়ক ,
বিনুনিতে আঁকা নদী
উলঙ্গ জল সাঁতার ,
পুঁটুলিতে কাঁচা আম
বিনুকের তরবারি লবণ লঙ্কা গুঁড়ো ।

দুই ... রক্ত রাঙ্গানো দিনকাল
গুরু মেঘে বুক কাঁপে
অযথা শিহরণ ,
উচ্চ হুল্লোড়ে
ঠাকুমার বকুনি ,
একা নিশি ভালো লাগে
স্নান ঘর আয়না ,
কোকিলের ডাক শুনে
মনে আসে বাজনা ,
মেঘ বলে আয় ছুটে , দ্যাখ ঘরে
ঘুমিয়ে পরেছে সব ,
আঁধারকে ভালো লাগে
মনটা সইনা
উথাল-পাথাল ঢেউ
ঘরে মন আর বসে না ,
রাখালিয়া বাঁশি সুর
প্রিয়তম প্রিয়তম ।

তিন ... রক্ত ক্ষরণের স্তব্ধতার অণুক্ষণ ,
স্থির হয়েছে মধুমক্ষির প্রদক্ষিণ কিছুক্ষন আগেই
ধাতব ধর্ষণে শব্দ নেই নিয়মতান্ত্রিক বিবর্তনে
চাঁদের ছ্যাকা বুড়ি বয়সে নুজ ,
অতীতের রঙ ফ্যাঁকাসে , শব্দে নেই
মধুরতা ,
দীর্ঘ হিমের উপত্যকায় ঝরিয়ে পাতা
গাছের মর্মবিদারক আক্ষেপ
এক সময় পাখি পাখালি শাখা শাখালি
রংছিল ,
ইজি চেয়ারে দোলকে দোলকে দিন আসে নতুন রক্ত নিয়ে
অন্যপ্রাণে ,
ছলকে ছলকে জলে ভরে অন্য কলশি ওপাড়ে ,
পিপাসী পথিক তীব্র দাহে আশ্রয় খোঁজে অন্য ঘরে , তবু
আমার হৃদ ভেসে যায় অলকানন্দার ঐ জলে ।













হীন

যদি আমি ডুবে যায় এখনই তোমার রূপ জলে
তুমি কি অল্প বুকে চাপ দিয়ে জল বের করবে...
না বলবে বেশ হয়েছে
কত নাবিক যায় ডুবে , কে কার খোঁজ নিয়েছে
কোন কালে ?
জানো , যেবার রাতে অর্ধেক পৃথিবী কামাতুর ঘুম
ভেঙ্গে জেগে উঠে
ফনি মনসা পাতায় মধ্য রাত্রিক রন্ধন , আকন্দ দুধ
রস পড়ছে টুপ টুপ বিকালের দুষ্টু বালকের অত্যাচারে
নক্ষত্র রঙ খেলছে পাতায় পাতায়
তুমি বলেছিলে এখন আমার স্তনে হাত রেখে দ্যাখো
পুরো পৃথিবী ভালাবাসায় মাতোয়ারা হয়ে যাবে প্রিতম ,
হাত কি রাখতে পেরেছি প্রিয়তমা...
পারিনি কোন সুবস্তু আপন করে নিয়ে , ভালোবাসার
সাঁতার জানিনে বলে ভেসে ভেসে
মনে মনে কূল খুঁজি প্রত্যেকটা নারী স্তনে
প্রত্যেকটা সুগন্ধি চুলের ঢেউ এ আমি ভেসে চলি ভেসে চলি...
অজানা রাতের আঁধারের দিকে...
তুমি খোঁজ নিয়ে দেখ , যেখানে যত দীর্ঘ ছায়া পরে তোমার
সেখানেই আমার আস্তানা
দিনের প্রদীপে খুঁজে মরি আমি আর একবার যদি তোমার
দেখা পায় , প্রিয় সখি ,
আমার মরন নেই , মড়ে ও শান্তি নেই । 

















ম্মম্মম্মম্মম্মম

ছায়াপথ আলো আধারি প্রবঞ্চকতা
স্বপ্ন অঙ্গনে নতুন কিছু ধুলি জন্ম ।
নিজের হৃদপিণ্ড তুলে নিয়ে চটকে দুই হাতে
আজ নিজের রক্ত
নিজের আকুতির হৃদ
বেইমান বটে !

হে নশ্বর জন্ম , বধিরের বিহ্বলতায়
তিল তুলসী যজ্ঞডুমুরের
আয়েজনে ,
অগ্নি সাক্ষী ,
আমি বুক পেতে দিয়েছি
শূন্য হতে গেলে যতো গুলো শূন্য লাগে
বাড়িয়ে নে
আমি পতনে রাজী এই বেলা ।




































No comments:

Post a Comment