Saturday, 4 August 2012

আর কিছুমিছু ৩



কিরকম সমারোহে

কিরকম ইছামতীর সিগ্ধ সমারোহে প্রভাতের
মার্জিত ঈশারায় ঘুম ভাঙ্গে ; তলোয়ার অগ্রের মত
ধারালো তোমার বহু চর্চিত রুপ মাতলামি শিখিয়েছিল জনতায় !

সম্মিলিত জৈবিক ভাবনার অশুদ্ধ অন্তঃকরণে
পুষ্পিত নান্দিক ফুলের সুবাসে ও বজ্যে'র অনুকরণীয় স্বাদে
তোমার অস্তিত্বহীনা প্রতিভা'র আঁকর হৃদয়ে গড়ে ওঠে ,
যেন নিস্পিহ বিজাতিয় সন্তান পালন -- সেই মায়া কৈ ?
কিন্তু দৃষ্টি বিভ্রমে বাস্তবিক দৃশ্যকল্পে অলৌকিক হাতছানি
অথচ মৃত সে অথবা জারজ সন্তানের মত আছে তবু নেই
হৃদয়ের গোপন কপটের গৃহীত অন্ধকারে ?
পুনরায় একদিন ত্বকের ক্ষয়িত ভূমি ঘামের সংবহনে
বিমূঢ় ভাবনার জন্ম দিয়ে অনিবার্যতার সর্বনেশে বিষাদ পাখি
প্রহর গুনে গুনে খুটে খাবে হৃদ - চিন্তন ।

অথচ ফিরে ফিরে আসবে সেই হৃদয়হীনার সময়- কাল
লোভাতুর দৃশ্য দেখে বিষাদ ঝরবে লালার মত !










বন্ধু বলে কিচ্ছু হয়না পৃথিবীতে , চলমান জীবনের অন্তঃনিহিত গোপন বীজের মধ্যে রয়েছে সেই ঈশ্বরের'ই একা চলার কিছু নির্দেশ , আর জীবনে চলতে চলতে কিছু সাথী পাওয়া যায় - বন্ধু নয় , বন্ধু ত সেই তিনি , সেই পরমাত্মার অলিখিত নিয়মে যুগে যুগে সেই পরম বন্ধু , পারো ত আর গভীর করে তার সঙ্গ নাও , দেখবে সব দুঃখ হতাশা সেই পরম মমতায় তার বুকে তুলে নেবেন , সমস্ত দুঃখের ক্ষত মূলে আমাদেরই অ-মানিবিক চাহিদা , আর নির্যাতিত অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ জুড়ে কান্নার রঙ যদি এক হয় -- তবে কোন বন্ধু নয় , কোন সাথী নয় , তীব্র অনুরাগে যদি আমি ভেসে যাই তুমিই ঠায় দিও প্রিয় !




ছায়া অথবা পেত

প্রথমতঃ তুমি একা ভাবো আমায় , যেহেতু
জানানো হয়'নি প্রত্যেকটা প্রাথমিক দৃশ্যর অন্তরালে
অ-গুনিতক এক আদম্য জগত ,আর আমি পতাকাবাহী

ক্রুসেড সন্তান , পেছনে অযুত লক্ষ বিজয় উল্লাসে নাইট !
সাধারণত এগুলো দেখতে পাও না সামন্ততান্ত্রিক চোখে ,
প্রধানতঃ জমিনদার'রা নিষ্কর ভূমি নারীকে ঘোড়ায় চাপিয়ে
হারেমে তুলতে ওস্তাদ ; চিরকালীন লোভনীয় বস্তুর
দিকেই মাংসালো জিভের টগবগে যুবক নেশা ,
ধানিলঙ্কা দিয়ে যারা মহুয়া বনে দেশী টেনেছে - তারা হিসাব
বোঝেন না , বোঝেন না জীবনের ম্যারপ্যাচ , বহুফসলি
করেও জঠর জ্যোৎস্নায় মাতাল হতে জানেন অথচ রিপু রেখে
উহ্য !
দ্বিতীয়তঃ বারবার পরাজিত হলে বিশ্বাসে তপ্ত নিঃশ্বাস জুড়ে
শোকাতুর হাহাকার , আর তুমি এই নির্যাতিত সময়ে
গুছিয়ে অলঙ্কার আলতার আল্পনায় সাজিয়ে দৈহিক জগত
ভাবো সংবিধানে লিপিবদ্ধ সমগ্র চোখে যেন তোমার ইশারায় !

কথা বলা বেয়াদপি ভিন্ন কিচ্ছু নই , নির্বাক এই অচলাতয়নে
সময়ের অনুক্ষণ ধরে লিপিবদ্ধ করেছি প্রজাতি'র কামনার
রহস্য তিতিক্ষায় সংগোপনে ;
চারপ্রহর আলোর আলিঙ্গন শেষ সেই চিরায়িত আঁধার --
বল তুমি --- এই আঁধারে নিজের মুখও অদৃশ্য ছায়া অথবা পেত










ভুত ভবিষ্যৎ

অপবিত্র নয় ছায়ামূর্তি ভুশণ্ডি'র অতি বিপ্লবী সন্তান ,
এক কালে অপূর্ব জাদু বিদ্যায় স্তনে দুধ এনে
আমাকে দেখিয়ে জৈবিক উপত্যকা , কালো বিড়ালের

ন্যাজে পগারপার ...
সেই থেকে বিড়ালের সঙ্গে আড়ি ......
যদিও প্রতিটি চরিত্রই শববাহক
ডোমের চরিত্রে বৈকুণ্ঠ অধিপতি ...
আর সকলের জন্মের আগে সাতকাহন -- আর মৃত্যুর ?
তবু কোন জলে ভেজেনি শ্মশান অগ্নি ।

( ভুত ভবিষ্যৎ )

কি দেখছো তুমি প্রিয় ?
কণ্ঠনালী ভিজিয়ে নিয়েছ জলে ? এবার ষড়া গাছ প্রস্তুত ,
মটমট ঘাড় ভাঙ্গা ক্ষুধা থাক ;
আর গভীর খুধা দ্যাখো জেগে ----

বুঝেছি বুঝেছি , বারবার আমার টিনের চালে তোমার
পদধ্বনি , তুমি এক শিল্পী আমি শিল্পখানি ......
ভুশণ্ডির মাঠ কাঁপিয়ে এক নতুন অতিথি ...
আমার মধ্যে তুমি তোমার মধ্যে আমি













মহাশূন্য

অথবা কেউ জানে না - শরীরের চেয়ে নেই
নির্জন কোন দ্বীপ , অথচ আয়না মোচ্ছবে
মাতে নিথর শরীরের হিমে ;

কেননা বলা হয়নি পতঙ্গ থেকেও উৎসাহী নয়
কোন যুবক , যে আগুন ভালোবাসে , অথবা
চোখের ভাষা থেকে দুর্বল নয় কোন কথা !
দীর্ঘ চরাচর দিয়ে
ভাসমান ধূলিকণাময় রুপালী সুগন্ধি ফুল কিম্বা
শেষ হুইচালের ছুটন্ত ট্রেন
উত্তাপ চেয়েছে
ভালোবেসে দেখেছে প্রজাপতি দিনে ;

সকলেই খুঁজে নিতে চাই নারীর উষ্ণ সান্নিধ্যে বল
জলকেলি ছোট্ট নদীতে ,
সে কথা সকলেই জানেন রাগ অভিমান শোকে
ক্ষানিকের জন্য না হয় ভুলেই গিয়ে ;

সকলেই জানেন একাকীর মধ্যে এতো একাকীত্ব আছে
চুম্বনের মধ্যে বিষাদের আড়ত ;
সকলে জানুক না জানুক শূন্য জানে মহাশূন্যর কথা










একান্ন পীঠ

ধুন্ধুমার তাণ্ডবে অগ্নিশেখর , স্বয়ম্ভূ'র চোখে অশ্রু চোখে আগুন ,
নাচছে ত্রিশূল পিনাক ভেদী তোদের কি দুঃসাহস !
তৈরি পাশুপাত বাজছে বিষাণ ও ডমরু , ধ্বংস জন্ম

ধ্বংস কুলীন । চারণ কিন্নর যক্ষ গন্ধর্ব দাঁড়িয়েছে পেছনে
এবার দ্যাখ শেষের দিন । পিশাচসিদ্ধ রুদ্র শোকে সংহারক
বিদ্যা এবার দেখবি । আশুতোষ মরেছে হলহন পানে
দক্ষ রাজা'র কি এতই দম্ভ !
কাঁপছে ধরা কাঁপছে দেব কাঁপছে শয়তান কাঁপছে রাজবেশ ,
প্রিয়তমা তুই দশবিদ্যায় ভানুমতীর খেল দেখিয়ে দক্ষ রাজে
কেন গেলি ?
উঠেছে তুফান জেগে উঠেছে বীরভদ্র নন্দি- ভিঙ্গি ভুত-পেত্নি
দক্ষ রাজের মুণ্ডু নাচে , নাচে কাল তাণ্ডব নাচে ।
কাঁদে অদ্রিনাথ কাঁদে বীরিণী নত মস্তকে ব্রম্মপতি ।

ভীত সৃষ্টি ভীত বিষ্ণু ভীত জগত ভীত জল স্থল স্বর্গ প্রাণীকুল ,
এসো সুদর্শন সৃষ্টি বাঁচাও একান্ন পীঠের মহাত্মা বাড়াও !










পরিযায়ী

লাশকাটা ঘরে ঘুমিয়ে আছে স্নেহাতুর চুম্বন
তুলসী মঞ্চের ঐতিহ্য ভুলে শাবক ;
লাশকাটা ঘরের স্মৃতি বয়ে বেড়ানোর দায়ভার নেই বলে 

আক্ষেপ জনিত শব্দ নেই এখানে ; আর আক্ষেপ নেই বলে
শান্তি আছে , সমঝোতা'র কূট-কাঁচালি'র নেই প্প্রবেশ ।

অআবিষ্কৃত প্রত্যহ হৃদয়ের প্রণয়ঘটিত অভিযোজনে'র
ক্ষয়- কাশ নেই ; অথচ নিরুত্তরে'র এত ক্ষমতা --
এই অনাবাদী জমিন ভেঁজে
গৃহস্ত অলকানন্দা ধারায় !

ঘুমিয়ে আছে , ঘুমোতে দাও তোমার সন্তানেরে , আহাঃ
কতকাল হয়নি ঘুম , কতকাল সাপ - ব্যাং চুমে ,
পৃথিবীও ভুলে গেছে দিতে তাকে ঘুমের সুস্থ অধিকার --
লাশকাটা ঘর কর্তব্যে দৃঢ় অটল ,

দেবালয় পুড়ে গ্যালে অস্তিত্বহীন ঈশ্বর
লাশকাটা ঘর জীবনের প্রতীক্ষায় ---- যেন পরিযায়ী'র আস্তানা













লিখে রাখো বাস্তু ভুতের কথা

স্তব্ধ হও অপবিত্র সৈনিক , বালু ঘড়ি
জনরোষ বোঝে না --
গাছের শব্দে আছে মর্মর উত্থান-পতন ।

লীলা , করপুটে অচৈতন্য আয়ু লেখা ,
সমাধিক পরিচিত মিলন পিয়াসী রাত শ্মশানের
কিলো দরে কিনে আনা কাঠের জঞ্জালে শুয়ে আছে ---

লিখে রাখো বাস্তু ভুতের কথা !

র'চে বালির স্বপ্নিল সংসার মোহময়ী মোহন
ভোগের থালা চেটেপুটে সিন্নি পায়েস
হিতহিত জ্ঞ্যান শূন্য ; এবার জেগে ওঠো
শেষ আগুনে --

স্বপ্নের ভেতর বাড়িঘর বাতিস্তম্ভ লাল রক্ত নিশান
স্রোতের ভেতর চোরা স্রোত
শ্মশানের চিতায় আয়ু লেখা
লিখে রাখো বাস্তু ভুতের কথা !










বেশ আছি

অনেক লুকিয়ে রেখেছি নিজেকে , তুষ ভরে কুলঙ্গিতে
মা'ও লুকিয়ে রাখতেন কাঁচা আম পাকবে এই আশায় ।

আমাকে বাইরে এনো না , বলতে বল না অমোঘ গোপন
অনুভূতির কথা , এখনও হয়নি কিছু বলার সময় , কিম্বা
একদিন তুমিও জেনে যাবে পাতালের রহস্য !

ব্যাথার কাদামাটি লেপটে নিয়েছি মুখে , ঝিনুকের অভ্যন্তরে
কে আর নামে ? কেই বা শেকড় উপ্রে গাছ কাটে ?
শুধু উড়ে আসে মাছি খাদ্যর ঘ্রাণ ভালোবেসে
অতীত হতে বর্তমানে ।

মাঝে মাঝে নির্জনে মুখ তুলে দেখি যা ছিল তার চেয়ে অনেক
বেড়েছে দুষ্টু ঘাস , পুকুরপাড়ে শ্যাওলার আস্তারনে পদ চিহ্ন ,
যা কিছু ছিল আগে সেটুকু আছেই পরে
বেড়ে গেছে মুখ চোখ বারুদের গন্ধ ।

এই জল হাওয়া থেকে বেরুতে বল না , আছি বেশ , আছি
সময়ের গোপন অন্ধকারে একা তবু একা একা ,
এই দেশ-কাল পাথুরে বুক থেকে মরে গিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে
বেশ আছি , চুপি চুপি , একা একা মায়ের আচলে ।







অন্তঃকরণ

সব জ্বলে যাক , কুসুমের গহন তুলতুলে পাপড়ি
কুমারীত্ব কলা । সব স্নেহ তৃপ্তির ঢেকুর হ'তে দূরে
বহুদূরে যন্ত্রণার দায়ভার নিয়ে এসো অতৃপ্ত আত্মা --

নিগৃহীত সময়ের অন্তঃপ্রদেশে ঢুকে যাই একা , একা !
দীর্ঘ রাতে নিশীথের বুকচাপা আহ্বানে কাঁটা দিয়ে
আঘাতকারী ফুলের সৌন্দর্যে ঢের রক্ত ঝরে --
ক্লান্ত প্রাণ এক ; নিটোল সাগরের অনুকরণে অভূত
রহস্য সৃষ্টিকারী মায়া - তাকে যে নামেই ডাক
কতোটা হৃদয়ে করবে ঝুম চাষ ? প্রায় সাড়ে তিনহাত
জমিনের অধিকার পেয়ে গেলে একবার --- হা হা হা
সব ফুড়ুৎ পাখি -- বাসার সে মায়া'য় কতদিন লেখা থাকে
নাম ধাম গোত্র পরিচয় ?

গভীর অম্লান স্মৃতি -ভস্মে লেগে থেকে কৌমর্য হনন রাত
যতটা সুস্থতা দিয়েছে - বেদনার গাঢ় রঙ্গে পাকিয়ে চুল ; এবং

সব কাজ পণ্ড হলে পরে চেতনার সমূহ অন্তঃকরণ
জ্বলে যায় পুনরায় নব্য অনুরাগে !










হাইকু

হিম স্বাদে'র
শ্রাবণের বিষাদ
তীব্র জ্বলন ।







রূপ কল্প

রূপ কাকে বলে আমিও জানি তিতিক্ষায় থেকে ; অথবা
মুগ্ধতার ধারাপাতে শারীরিক পতনে ,
তোমার বিনুনি চুলে

কলশি নিয়ে পথ ভাঙো খালি পায়ে
মহুয়া হেমব্রুম ,
তোমার কাঁখের জলে রোদের শূন্যতা বাড়ায় যথারীতি !

ঐ দ্যাখো শূন্য থেকে উড়া শুরু করলো একজোরা কাক
আমিও শূন্য থেকে হাটা শুরু করেছিলাম
তোমার গন্তব্যে ;
শূন্য থেকে শুরু হয়ে দিগন্তেই মিশে যায় শূন্যতা , তাই

খাড়া খাতের নিচেই যাবতীয় রূপের বসতী ঘর...
অনির্বাণ নির্দেশে ঝাঁপ দেন পর্যটক !










লুপ্ত চেতনে'র শ্বাস

এই বুঝি প্রবীণ বৃক্ষতলে সমাধি দ্বিরাগমনের
পথ আঁকা আছে নির্ভীক নিস্তব্ধতায় ; করতলে
অখিল বিশ্ব ভূতভবিষ্যত অনন্ত বাসনা লীন হ'য়ে

কবরে,হে মার্জিত সমাজ নারী স্তনে হৃদয় দাও ,
বহুল চর্চিত ঠোঁটে গড়ে উঠুক সীমারেখা লালনের !

প্রাচীন বৃক্ষতলে নিমজ্জিত উন্নাসিকতা গাঢ় অভিমান
নেই তাদের , ম্লান হয়ে এলে সূর্য রঙ অকস্মাৎ রাতের
মৃন্ময়ী বৈভবে শরীরের খাঁজে খাঁজে উৎকীর্ণ করে দেয়
পৃথিবীর শাশ্বত কথন , অথচ কত ধীর স্থির সে, যেন
সেই নির্বাক মাছের চক্ষু শিকারি ।

আমিও সেই বিপথগামী আফিমখোর সন্তান ,
ঘুরে ফিরে মৃত্যু আসে অবহেলায় , খাদের কিনারায় এক পা ----

"" এই কবিতার একটা গল্প আছে , পরে বলবো ''''













হারানো পথের মাঝে

সন্তপ্ত জীবন এসে খেলা করে চার প্রহর ।
দেখি আলিঙ্গনে ডুবে যায় সারিবদ্ধ যন্ত্র মানব -
রহস্য মাতলামো লুকিয়ে গুপ্ত কথা 

নির্বিকারে একশত - দ্বিশত হাজার বছর ; বেদনা
একদিন আঙুরের রসে পরিপক্ষ , তাই দেখে
ক্লেশে মাথা নিচু করে সিংহ ----
চিলেকোঠা ঘর রক্তিম হ'য়ে ওঠে গাঢ় অভিমানে !

কোথায় নিভে গেছে শেষ প্রদীপের শিখা অনূঢ় কালে ।
তীব্র ভূকম্পনে কোথায় ছিঁড়ে গেছে নাড়ি ;
অবশিষ্ট নেই কেন আদর ,গোধূলিতে নেই আলোর উৎস ,
বহিঃ নির্গমনের রুদ্ধপথে দেবালয় ---
শুধু নিজের অন্তর দেখি ,
বিকল্প সঙ্কল্পেও বন্দ হয়েছে যোগাযোগের পথ --
অনন্ত জীবন হারিয়ে ফেলেছে ফিরবার পথঘাট ;
অথচ ঠিকানাতে আছে পৃথিবীর কথা !













পরকীয়া >>><<<

তোর কোন দোষ নেই জানি , ক্ষণস্থায়ী
লুণ্ঠিত স্বাদ সূর্যের মত আছে অথচ অস্তমিত সত্য ;
আমার এই অপূর্ব নেশা রয়ে গেল শত জনমেরও পরে

পদ্মপাতায় জলের উপর ,
ঘূর্ণয়মান চাকতির উপরিতলের পিঁপড়ে
কতখানি পৃথিবী বুঝেছে ?
কত টুকরো টুকরো আঁচলের ঘ্রাণে ভাসছে সেই শৈশব যৌবন
আর বৈতরণীর পাড়ে দাঁড়িয়ে
পেছনের অনল দৃশ্যে খণ্ড মুখ রাত প্যাঁচার অন্ধ কামনায় !

সন্তান মিথ্যা , পরিচয় মিথ্যা , ধর্ম জাতি কুলীন
পায়ে নাচিয়ে নির্দ্বিধায় উড়েছে কত জীবন ঝড়ে ; তবুও

রাতের নিস্তব্ধতা বুকে হাঁপরে'র টান
হাহুতাশ ;
নির্মম সত্যে অপরিনিয় জীবনের গ্রন্থিতে লেগে আছে নিয়মের রাজত্ব ;

তুমি নও , তুমি নও --------
তোমার আমার ব্যবধানে লেগে আছে শ্বেতকেতুর ছোঁয়া










আকাঙ্ক্ষা

তোমাকে ছুঁতে পারি আজও , সেই তৃষ্ণায় ;
বিকিয়ে দিতে পারি পরিচিত ঘর- আসবার- বারংবার ;
সেই লোভ গেল না আমার ---

তোমার নাভিপদ্ম থেকে উড়ে যাওয়া মৃগকস্তুরিনাভ গন্ধে
এখনও আমার শপথ আমার সম্মান !

দ্যাখো , তুমি দ্যাখো , বুকে সেই অনাবাদী জমিনের
বিধিবদ্ধ যন্ত্রণা , আর খুঁটে খাচ্ছে জোঁক
রূপরস গন্ধ -- যেটুকু টিকে আছে আজও তোমার !

চাহিদার অগ্রাধিকারে এযাবৎ তোমার নাম -------
দুর্বিনত বৃষ্টিতে একবার ভিজে যাই যদি সব অহংকার -
মেঘে মেঘে লিখে দেব না হয় আমাদের পরিচয় !










দু'ই গল্প

তারপর , লেনদেন বন্ধ করে দিল ভ্যাপা চাঁদ ,
অকৃত্রিম চাষার মুখের হাসি এনে ভণ্ড ষাঁড় দাঁড়ালো দুয়ারে ,
রাজপথ বল শূন্যগলি নিস্পলক ,

টিপটিপ বৃষ্টিতে খৈ ভাসছে , বজ্রাহত হরিধ্বনি
নিঃশব্দে দরজা খুলে তুমি বেড়িয়ে গেছো ;
অনন্তে দৃষ্টি রেখে দেখছি
তামাম বৃষ্টির মধ্যে ছোটখাটো সৃষ্টির উল্লাস ,
ঝলসানো বিদ্যুতে নিজে নিজেকে দেখছি পেত ---

অভূতপূর্ণ ভয়ে গ্রাস করেছে আমিত্ব ,
দূরে কিছু শেয়ালের তীব্র হুংকার , চেটেপুটে নিচ্ছে
লেপ- কাথা - তোষকের স্বাদ ;
সমগ্র হরি সঙ্গীত ভেঙ্গে
হরিধ্বনি , কাঁপছে লোকায়িত বাতাস ---
পুণ্যস্নান জলে মিশছে ফুল বেলপাতা দূর্বা'র কচি পাতা ---
শ্মশান বেদী'তে কিছু চেনা-জানা গন্ধ --

গঙ্গা স্নান সেরে উঠে আসছে সন্তান --- আঁতুড় ঘরে উলুধ্বনি !










সায়ক ২২

বিশ্বাসভঙ্গ একটা আর্ট ; সুদূর প্রসারী
দৃষ্টি যাদের তারা ক্ষণিক বিচলিত হয়ে পা বাড়ান
জলের উৎসের দিকে ; 

আজকের মুগ্ধতার মধ্যে যেন অদৃশ্য স্বঘন পাপড়ির
গহন অন্তঃপুরে তার বাস ; আছে বুঝি --
তবুও সেই অন্ধ ভিক্ষুকও জানেন ঈশ্বর অস্তিত্বহীন , লেকিন
ট্রেনে উঠেই দয়াময় তুমি আছো বলে গান জুড়ে দেন ।

অপ্রতুল না ভেবে সময়ের উজ্জ্বল মুখ
তাকে ছোঁয়ার ইচ্ছা গেল না ; যদিও সম্মুখের অনপলব্ধিত
ক্ষয় হাজার বছরের ছোঁয়াচে ; অজান্তেই
সেখানেই লব্ধিত যাযাবর ইচ্ছা ;

সায়ক , ভুলে যাও , সুদকষা সময়ের টুকরো ভগ্নাংশে
আসল ঘরে তুলে চক্রবৃদ্ধিতে লাগিয়ে দেওয়া "সাইলক" টাকা ;

প্রেম বল -- বল ছায়া স্বপ্ন ----
মুদ্রার শুধু দু'মুখী দৃশ্য -------

পতন অনিবার্য তোমার -- সে আজকের চুম্বনে -- আগামীর বাসর রাতে ---










প্রথম দর্শনে চক্ষু সুধা ; অন্দরে অলকানন্দা --
সময় দাও বইতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে --
একদিন আসবে হরিদ্বার --
পিপাসিত সঙ্গম কাল







কুলীন কবি

কুলীন কবি আমি ---
"তুমি কি লিখিয়াছ অনুজ প্রতিম ? ছ্যা ছ্যা ছ্যা " ,

"দ্যাখ এই ভাবে কবিতা লিখিতে হয় , আমি বুঝিব ,
বুঝিবে সর্বোত্তম জ্ঞ্যানী মহোদয় , "

লজ্জায় মরে যায় ,
গো-মাংস বিদ্যায় কিছু শব্দ আঁকি আমার তোমার ,
উচ্চকিত কৌলিন্য নেই
অপরের জ্ঞ্যানে বুঝবার অবকাশ নেই ,

অথচ ,
তুমি লেখ ---

"পিতামহের শরবিদ্ধ যন্ত্রণার প্রতিফলন --
রাত , পাশাপাশি দাহ্য ,
টিনের চালে সেঁতার ,
দুই দু'খানা আস্ত যুগ , নিরুত্তাপে ।

গরু- ছাগলের বিচরন ভূমি
হাজার নক্ষত্র সমারোহ ,
সবুজ প্রান্তর শেষে আগুন ভূমি জ্বলা ঘাস ।

চলছে গৃহের রঙ তুলে নতুন রঙের আলপনা ,
লণ্ড্রীতে দঙ্গল পোশাক- আশাক ,
রঙের সংস্করণে নব্য জীবন ;

ক্রুসেডের প্রস্তুতি সারছেন প্রাচীন সেনা , এদিকে

মৃত্যু জেনেই গড়ল পান নীলকণ্ঠের , এই তমসা ,
ঘৃণিত উজ্জ্বলতার বিরুদ্ধে সিঁধকাটা চোর ! "

আমি ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকি ------------
তাকিয়ে থাকি , তাকিয়ে থাকি










অতি আধুনিক কবিতা

পিতামহের শরবিদ্ধ যন্ত্রণার প্রতিফলন --
রাত , পাশাপাশি দাহ্য ,
টিনের চালে সেঁতার ,

দুই দু'খানা আস্ত যুগ , নিরুত্তাপে ।

গরু- ছাগলের বিচরন ভূমি
হাজার নক্ষত্র সমারোহ ,
সবুজ প্রান্তর শেষে আগুন ভূমি জ্বলা ঘাস ।

চলছে গৃহের রঙ তুলে নতুন রঙের আলপনা ,
লণ্ড্রীতে দঙ্গল পোশাক- আশাক ,
রঙের সংস্করণে নব্য জীবন ;

ক্রুসেডের প্রস্তুতি সারছেন প্রাচীন সেনা , এদিকে

মৃত্যু জেনেই গড়ল পান নীলকণ্ঠের , এই তমসা ,
ঘৃণিত উজ্জ্বলতার বিরুদ্ধে সিঁধকাটা চোর !










যন্ত্র কিংবা

অপারগতার আবেশে ঘুম ভাঙ্গে
বাস্তু ঘুঘুর , নিঃসীম অহংকারী সূর্যের সত্যসারহীন
গুণিতক কঙ্কাল , চিরায়ত ধনুর্ধর সৈনিক -

লুণ্ঠিত বধ্যভূমির স্বপ্নে ;
নিমজ্জত নিম্ন প্রদেশ অস্তিত্ব বিহীন - সেদিনের ,
মা নাম ঝাপসা ;

অনিদিষ্ট জীবন ভাসে সুরহীন ল'য়ে , অনন্ত ব্যাপ্তি ,
তবুও , অতলান্তিক জলে ডুবে আছে , যদিও
আগ্নেয়গিরির প্রতিভাছিল -- ;

পুড়ে গেছে ফসলের পুণ্যভূমি , বা যা কিছু ছিল
অবশিষ্ট ধুন্ধুমার "জাব" পোকার
চোষক মুখে
পথ ভুলেছে ফসলের ঘ্রাণ ;

উৎস মুখ বিহীন আগুনের
রসদের সীমাবদ্ধতায় , নীল হ'য়ে আছে মুখের দৃশ্য ,
আঁতুড় ঘর ভরে গেছে
যুগের নিষিদ্ধচারিতায় ;
ওহে , পরাপারের দাম্ভিক সূর্য - আলোহীন আঁধার যন্ত্র ।













দ্রোহ কাল

আত্ম হননের অপূর্ব রিপুকালে সময়ের দিকচক্রবান থেকে
ছিটকে প্রবল ইচ্ছাশক্তিনুরাগে ঢের জন্ম ফিরে আসে
তুমুল বিশ্বাসে ;

নির্বিষ সর্পের ফোঁসফোঁসে বিষহীন যন্ত্রণা তবুও মাথা তোলে
তেমনি ম্যাচিং অর্ডার প্রত্যাশী খেলোয়াড়
অনুনয়ে মার্জিত শাসনে রেফারীর সম্মুখে ;
আমারও পা থেকে মুছে গ্যাছে সব অভিমান দুধের শিশুর মত
স্তনের লোভে ;

দ্যাখো , শুঁয়োপোকা থেকে সময় বুঝে নিয়ে দাবী
মেলে ধরেছে প্রজাপতি পাখনায় রঙের উৎসব , আর
লীন হয়েছে সব
জীবনের উল্লাসে দ্রোহের কাল !

অন্তঃমূলের এই নিরিবিচ্ছিন্ন গিরিপথে ঊষা লগ্ন থেকে
সুখ পাখি দুঃখ পাখির যাতায়াত ;
সমস্ত মানবিক দোষারোফ ক্ষণস্থায়ী বিড়ম্বনা ,
ইচ্ছা - অনিচ্ছা কিছু মুদ্রা দোষ বৈ মিথ্যা স্বপ্নচারিনি ; এবং
সমস্ত দৌত্য একমুখী গৃহ আঙিনায় সীমাবদ্ধ -- সুখেরই বোধহয় !










বিষাদ পুরুষ

দীর্ঘজীবী হোক হেমলক , গাঢ় আঠার মত ঘনীভূত
হ'লে পুঞ্জিত বিষাদ --
কোন দিকে তাকিয়ো না তুমি , স্থির সোজা পথ ধরে

পেড়িয়ে যাও অমৃত মন্থিথ সমুদ্র উপত্যকা , কিন্তু
ভীতু দেবতা'র দিকে তাকিয়ো না
ওরা চির দুঃখী ; দুঃখ বিলাসী ,
ওদের দিকে তাকিয়ে হেসে নাও , ওরা ভিখারির চেয়েও ভিখারি !

ঐ দূরে নিথর ডিমের কুসুমের মত তোমাদের গ্রাম --
হাঁস - মুরগি আর লাঙ্গল কাঁধে ছুটছেন দ্যাখ দ্যাখ
কিছু সন্তান উৎপাদনের মেশিন ;
ওদের বিষাদ গাঢ় হয়নি একটুও
পেটের জন্য ;
তুমি বেশ পারো , তুমি শিল্পী , ওস্তাদ মানুষ ,
নিয়ম জনিত বিষাদের তুমিই রাজাধিরাজ !

চেতনার অন্তঃগভীরে বীতশোকের জন্মে যদি পারো তো তুমি অশোক
নামিয়ে আনো , বিষাদ পুরুষ ;
আর দৃঢ় আত্মিক বন্ধনে নিবিড় করে আত্মস্থ আত্মাকে দাড়া করাও
নিজের সামনে একবার --------

হেমলকে শুধু মৃত্যু পুনঃজন্মেরও কথা বলে !







































































































No comments:

Post a Comment