Thursday, 23 August 2012

দশ ১


শত্রু

পতঙ্গের চেটে নেওয়া ফুলের সুগন্ধ দৃশ্যে ব্যথা দিয়ে যায় ,
ঘোরতর ব্যথা সূর্যের আস্তরাগে ভ্রান্ত দিশা দিয়ে গেলে
পড়ে থাকে বিসম মুখ সন্ধান পর্বের বেলা ।
বলিষ্ঠ ভাবে সকলেই সকলকে ব্যবহার করে যায় স্তন্যপায়ীর
মত , তারপর নিদ্রাপর্বে অনিবার্য শিহরণ , সূচনার গর্বিত
অভাবনীয় উল্লাস ক্লান্ত করে দিলে মূল্যায়নের খাতায়
শূন্যর সংখ্যা বৃদ্ধি । ভালোবাসা পরাজয়ও মানে , হরিণের
পায়ে পায়ে বেঁচে থাকার নক্ষত্র গতি শ

ার্দূল ভয়ে যেবার স্বাধীন-
ভালোবাসাও তদ্রূপ পরাজয়ের মধ্যে গুছিয়ে রাখে আগামীর প্রতীক্ষা ।
উন্মাদ গ্রস্থ হৃদ স্রোতের মত ডানা মেলে কার কাছে যেন
আশ্রয় চেয়ে যাই , অথচ অদ্ভুত সকল পুরুষ মাংসের লোভে
কার কাছে বারবার সর্বাত্মক দ্বার খোলার আহ্বান রাখে ,
যথাযথ প্রবেশের অধিকারে উন্মক্ত করে নিজের পেশীবহুল
অহংকার , আর এভাবেই পরিনাম লেখা থাকে
পূর্ণতা - অপূর্ণতার অনিচ্ছাধীন আড়তে !
এভাবেই প্রলুব্ধতার আতশবাজি প্রতিনিয়ত রঙ মাখিয়ে দিলে
সমস্ত অপ্রাপ্তিই যেন বিশ্বাস ভঙ্গকারী শত্রু !








স্ট্রিট লাইট

দৃশ্যত অদৃশ্য মনে হয় না , অদৃশ্যর মধ্যে
সব দৃশ্য ঢুকে গেছে তোমার ।
যেটুকু সার্বজনীন সেখানে সোনার নেকলেস স্লিভলেস ব্লাউজ
সুদৃশ্য নদী বাঁক অশ্বখুরাকৃতি গ্রীবাতে
রোদের উজ্জ্বল্য মন বিভ্রামের যাবতীয় সামগ্রীর বিজ্ঞাপনে
মহাপ্রলয়ের সংকেত ।

সিক্সলেন ওয়ান ওয়ে পিচ রাস্তা ধরে সকালের রোদ খেলা করে
জল-পাতার প্রতিবিম্বে , মাঝে মধ্যে শহুরে ধূলিঝড়
ম্যাড়ম্যাড়ে বৃষ্টি শহরের সেক্স সিম্বল নায়িকাকেও কাঁপিয়ে দিলে
তোমার শরীরের মধ্যে কাঁঠাল পাকা গন্ধ ওঠে
বুঝিনা , কোন খানে আছো তুমি
নহবৎে না জমকালো পার্কস্ট্রীট হেডিঙে মোচ্ছব রাতে ।

জোয়ান চাঁদ যৎসামান্য আলো ঢেলে দিলে পাতার ফাঁকে ফাঁকে
নীলরশ্মি সর্বভুক খিদে বাড়িয়ে
রাতের উপপাদ্য জুড়ে নিজেকে প্রমাণের ইচ্ছাতে সর্বাধিক প্রিয় শব্দ
তোমার দিকে ঠেলে দিয়ে
শরীরের ভাস্কর্য খুঁজি
তামাম স্ট্রীট লাইট যেমন অন্ধকারের প্রত্যাশায় দিন গুজরায় !








আততায়ী

তবে কি বিভক্তি লেখা হচ্ছে ভেতরে ভেতরে !
ভুলে যাচ্ছি এই অমোঘ বাস্তবের
অন্তরালে যতখানি সত্য তার চেয়ে প্রভূত উচ্চাকাঙ্ক্ষায়
দাসত্ব ঘনীভূত হচ্ছে তোমার বিনুনি চুলে ।

মহুয়া হেমব্রুম , সরল স্বীকারোক্তি'তে ব্যক্তি স্বাধীনতা লিখে রাখছি ,
আগামীর কাছে যা কিছু বিন্দু বৈ উপাঙ্গ প্রদাহ

দিয়ে গেলে তুমি লোকায়ত আড়ালে মিশে যেও ,
স্রেফ কাগজ কলমের অথবা বেকার সময়ের প্রলাপের কাছে
নামিয়েছি দেখে ঘৃণা করো আমায় ,
সার্বজনীন দেবীর মত তোমার মুখে সহজ- কিম্বা সমাজতান্ত্রিক এত ভীড় --
দেখে ক্লান্ত জোঙ্গাল কাঁধে চাষার মত পিপাসা বাড়ে
মাঠের খনন বিন্দুর স্থানে
আমার অনুপস্থিতি যেভাবে শস্য উৎপাদন ঘটিয়ে দিতে পারে
ভয় লাগে , বড্ড ভয় লাগে

দুর্বার এই দৌড় , ঋতুর অরণ্য ছোবার আগে
তোমার সীমান্ত পৌঁছানর ইচ্ছায় নেপথ্যচারিনি হয়ে
আততায়ীর ছুরির ফলার রক্তে লেখ আমার নাম ।










উত্থানপতন

প্রতিটি চলে যাওয়া দৃশ্যর অভ্যন্তরে
আদম্য লিপ্সা রেখে যাও ;
নিয়ত নীরব থাকি বলে ভাবো এ অসুখের লক্ষন নয় ,
যেভাবে ঢুকে যাও তুমি গ্রহান্তরের পর্দাশিনে
দেখে আমি জানালা খুলি
বুকের মাতমে হাত রাখি
কতখানি তুলে নিলে এই আকাশ তোমার দাসত্ব মানে
আর আঙুরের খেতে পৌঁছেও বারবার টক ঢেঁকুর উদ্গিরন

তমাম জীবনের প্রচ্ছদে
ছিন্ন-ভিন্ন সব আমারই মূর্তি ।

তোমার উন্নত শীরে নত হয়েছিল একদিন জীবন , এখন
চর্চিত জীবন নীরবতার ভাষা খুঁজে পেয়েছে বলে ভেবো না
গাছের ছায়াতে বসবার ইচ্ছা নেই ,
জেনো , যতখানি চুপচাপ থাকি
সেই নীরবতার মধ্যে তোমার উত্থানপতন ।










আগুন পিপাসা

এই পথে দ্বিরাগমনের সমুদ্রপিপাসা রেখে
পুনর্বার কি জন্ম পাওয়া যায় !

বলিহারি তোর স্বভাব ! নির্লজ্জ অন্ধকারে গলিমুখে
স্বভাবভীতু পিশাচ-দানব , পাশে উল্টে বিয়ারের ক্যান
আধপোড়া সিগারেট টুকরো , আর তুই অগোছালো রক্ত মানবী
রাতের লক্ষ্মণগন্ডি বুঝে নে ,
এখানে তাবৎ রাত জুড়ে সীতাহরণ পালা 

পদস্খলন শব্দে হাসবে সব জ্যান্ত শব , না আছে জটায়ু
বলিদানের কৃতসংকল্পে !

সব ভুলে যাওয়া যেত যদি , যদি সমস্ত নিষেধ নিমেষে
উবে যেতো , যদি ডাকতে পারতাম , মা
সমগ্র পথ তোর ,
আমি সমাজ , আমি তোর বর্ম --------- তবে

আমি মেয়ে , দ্বিরাগমনের পথে পথে আবাল্য হাসি রেখে
নিরস্ত্র খেলতাম ঈশ্বরের সাথে ।









সংলাপ প্রলাপ 


পিপাসার লম্বা হাতে দরপত্র উঠানামা পণ্যের ,
রাহুকাল , সঙ্গম পিপাসা , রতি আহূতি জানান দেয়
অনুশাসনের সীমিত অধ্যায়ে
পিপাসা ছড়িয়ে যৌন বৃক্ষ নতজানু ,

ওঠাপড়া বোঝাপড়া দৃশ্যকল্পে সুদৃশ্য সবাক চালচিত্র
মতি বিভ্রম , রতি বিভ্রম দিয়ে গেলে
আধুনিক প্রঞ্জলে 

জন্ম মৃত্যু সন্তান উৎপাদন , অথচ স্বর্ণ খনিতে
শরণার্থী বিক্ষোভ ।

শ্বাসরোধী সেই অহংকার কৈ , যে জীবন চিনেছিল
মরণের আগে ;
গলিত শব দুর্গন্ধ বৈ যা রেখে পুনর্জন্ম প্রত্যাশী সেখানে
বিশ্বাস নেই , আছে ধাতু রোগের প্রলাপ সংলাপ ।







মহাজন 

অগ্নি বলয়ের মধ্যে সেই চোখ , যা ভাবলেই
আশ্চর্য এক আবহের মধ্যে ডুবে যায় , আজও
ভেঙ্গে পড়ে যাবতীয় নিজস্ব সুরক্ষাবলয় ,
বোধন আর বিসর্জনের অদ্ভুত তারুণ্যর সামনে
সেই তুমি , তুমিই দাঁড় করালে আমায় ?
সময়ের মুন্সিয়ানায় আজন্ম বড় হচ্ছি হরির লুটে
আগ্রাসী হাত রাখছি , বদলের ঘোড়ার পিঠে
চেপেছি , গড়গড় গড়িয়ে যাচ্ছে বেলা ।


এবার সহজ সাবলীল ভাষায় প্রতিবাদহীন
বৃক্ষের মত স্থিরতা দিলুম ,
অলৌকিক মাঠ কে মাঠ রবিশস্যর গন্ধে
হে পিপাসা
ঈশ্বর চেন , প্রত্যাশায় কাঙ্ক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত
রূপভেদের গল্পপাঠ উহ্য রেখে
জন্মান্ধ জন্মে যষ্টিতে রাখো বিশ্বাস ।

আটপৌরে হও , শ্যামলী বঁধুর মত সিঁদুরের মান্যতায়
শেকড় আরো গভীরে ঢুকে গিয়ে
মরমীয় জল আনো , আদ্ভুত গোধূলি আর ধানের খেত
পিছু ফেলে ছুটবো যেদিন
মহাজনের দরজায় কার ছায়া ? তোমার ?





 মৎস্য শিকারি 


নিয়ত জাতক বলয় টপকে রুপালী স্বাদু মাছ
গভীর প্ররোচনায় কেন উঠে আসো স্রোতের বিপরীতে ,
এখানেই বুঝি আঁতুড় ঘর ?
এখানেই বুঝি সমস্ত মৎস্যকন্যা গর্ভবতী হয় ধর্মে- অধর্মে !

তুমি জানো না । শিলালেখ মুছে গেলে শুধুই পাথরের কাঠিন্য
হরদম পাথর ভাঙ্গাকলা সক্রিয় হ'লে
অজন্তা ইলোরার স্মৃতি-বিস্মৃতির গর্হিত কোণে 

প্রলাপের মধ্যে আসুরিক উন্মাদনা ,
চাক্ষুস তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ধরেছি স্বাদু জলের মাছ , আর বিভ্রম নয়
বলে দিলাম ।

আর উপেক্ষার কথা নয় , তোমার সেই মেধাবী পুচ্ছ
যা হালধরে , পেটের চর্বির মুগ্ধতা , আহা , খিদে
রাক্ষুসি খিদে বাড়ছে , বাড়ছে পড়ন্ত যৌবনে ।
এবার বলতে পারবে না তুমি পুনরায় জাতক বলয় দাও
সর্বনাশী শরীর রেখে যাচ্ছি ,
তুমি বলতে পারবে না এই অজ্ঞাতবাসের কথা ,
আমিও ভণিতা শিখিনি , বলে দিয়েছি
অতীত হতেই আমি চমৎকার মৎস্য শিকারি ।









No comments:

Post a Comment