অপচেষ্টা
দিব্যি ঘুম স্বপ্ন নীল প্রেমিক শিউলি সকাল ,
খড়খড়ে তাপ গতর দাহ প্রেমিক ঘামে লীন ,
এ বসন্ত মনে অনন্ত নিস্তেজ দুপুর ঘুঘুর ডিম ,
এ জ্বালা যাতনা মনে তে সহেনা রাধিকা সম মন ,
উলঙ্গ মাঠ স্বপ্নের হাট রাতে জোনাকির দিন ,
শ্রাবণে শ্রাবণে কদম ফুল খুঁজিনা প্রেমিকের গুন ,
রজনীগন্ধা আজ মুখচোরা সামনে নেই যে তার মুখ ,
অনাহুত মেঘে বৃষ্টি আসে একা ভিজতে সুখ কি আছে !
আমার হৃদয়ে তোমার খেলাঘর পুতুল বিয়ের কাব্য ,
যৌবন বারোমাস তবু হাহুতাশ মন নেই পরকীয়া সোহাগে ,
ফিরে এসো তুমি তিতিক্ষায় হৃদয় রক্ত ঝরছে অগচরে ,
আগামীর সকাল তোমার বাসনায় না এলে মরণ, সেই ভাল !
প্রতিবাদী
আমার প্রথম নেশা ছিল মায়ের স্তনে
দ্বিতীয় নেশা এল অরণ্যে দেব এ
তৃতীয় নেশা এল ফরাসী পারফিউম গন্ধে রাত ; অথচ
একদিন , এগুলো ফ্যাঁকাসে হয়ে এলো
বিহারী দারোয়ান গেট খুলে দিলে হাজার দীর্ঘশ্বাস প্রবেশ করে
নড়বড়ে কলে যন্ত্রবিদ্যা - কালা জাদু
সব লিজমের মূল টু পাইস ধান্দা ; এযাবৎ
বিকৃত বোধে জন্ম দিয়েছে শ্রেণী দখিনা বাতাসে উড়ছে পতাকা
পতাকার জন্ম শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে
রোদ বৃষ্টি ঝড়ে আমি বাহক
আমি পতাকা বাঁচানোর লড়াই করি না
কেরোসিন থেকে গ্যাসের উনুন এ আসা আমার লড়াই ; এবং
কিছু রক্ত ঝরলে কুমির কেঁদে বিষাদে রোদ পোহাই বালিতে
আমি ধর্মে -জিরাফে- বিপ্লবে বাঁশে ঘেরা সেমিনারে
বিরিয়ানি বেশ সুরেলু
বেশ প্রতিবাদী প্রতিবাদী একটা আমেজ ; অতএব
এখন বড় হতে হতে ভুলে গেছি আমার মা ছিল , অরণ্যে দেব ছিল
মুখ উঁচিয়ে , ফরাসী সুগন্ধি ষোড়শী খাতা জুড়ে ছিল ঘুমিয়ে !
বুঝি , বিপ্লব নিয়ে গেছে ক্ষিদের সঙ্গে আস্ত একটা সকাল থেকে
আমার দূরান্ত শৈশব , আমার রক্তে নাকি বিপ্লবের যোগ !
ত্রিভুজ কবিতা
তোমাকে ভালোবাসি , আমিও ভালোবাসি ;
বাবা -মা ও বললেন ভালোবাসি
ব্যাস , সুত্র মিলে গেছে ---
একটা সমকোণী ত্রিভুজ !
পিথাগোরাস এর মাথায় অনেক খাদ্য , এটা উপেক্ষায়
ছিল , আমি তুলে নিলাম ---
আচ্ছা , কতক্ষণ সমকোণ থাকবে এই কোণ তা কিন্তু
পিথাগোরাস বলেন নিই -- , ধর ,
উৎপাত শিশুর পাল্লায় আমি একটু হেলে গেলাম যে কোন
একদিকে ( ত্রিভুজ ও একটা সিস্টেম , বদলে যেতেই পারে )
নড়বড়ে ত্রিভুজের কোণ বিচ্যুতি নির্ঘাত
তবে
নির্যাতন পোহাবে কে ত্রিভুজ না শিশু !
আর নিয়মিত উৎপাতে একদিন বিসম বাহু ত্রিভুজ ---
অতীতের সুখের কোণ গুলি বিষাদ মাখা গল্প করেন --
পুরনো ত্রিভুজের কোণ ভেঙ্গে আর একটা ত্রিতুজ পাশে এলো
তার ভবিষ্যৎ ? আমার জানা নেই !
ভাবনার অন্তরালে
ভাবি দাবিহীন চলে যাই সেই পুরুষের হাত ধরে
ঐ দূরে মাইল মাইল বালির উপর সন্ধ্যা নামছে
উটের পদক্ষলণ আর কুজের বিষাদে ঘর গুছিয়ে
নিচ্ছে সূর্য দেব ! অতএব পৃথিবী গোপন কুঠরি থেকে
ছড়িয়ে দিচ্ছে চাঁদ পাতা আর নক্ষত্রের সমারোহ
আমিও আদিম গুহাবাসী শিকারি প্রজাতি স্মিত মুখে
অনাদি কালীন মানবী প্রিয় মানুষের অপেক্ষায় রাত-দিন- আঁধারে !
ভূগোল ভেঙ্গে ইতিহাস হলে পুরুষ সিংহের ত্বেজে
সনাতনী নারীর বিশ্বাসে সেই একই মুখ , শরীর যতখানি
মনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে পুরুষ সিংহ এই ভাবনায় খেলা করে
সর্ব শক্তিমানের দ্বিতীয় কালা জগত --
নারী যতখানি শরীরে ঢের বেশী আমুদে চাঁদের রাতে বাহুর
উষ্ণতায় পুরুষের বিশ্বাসে , নইলে কেন কাল ছোরার বাঁশির
সুরে অধীর উতলা রাধিকার মন !
ভাবি এভাবেই পালিয়ে যাবো একদিন সেই কাঙ্ক্ষিত পুরুষের
সন্ধানে অমরত্বের দিশায় ! আমার চেতনা ইলোপ করে হাত
বাড়িয়ে দিক অন্ধ রামকানাই -- আমিও বলবো না তুমি আমায়
দেখলে কোথায় !
ক্ষণস্থায়ী শরীরের আনাচে-কানাচে রহস্য নেই পুরুষ !
একদিন থেমে গেলে ইন্দ্রিয় অনুভব তখন ফোকলা দাঁতে পান ছাপ
সেদিন বেঁচে থাকে আমার অঙ্গে তোমার স্মৃতি সমাধি !
চেনাজানা গল্প
মেয়েটিকে আমি চিনতাম ----
যে আকাশ হতে চেয়েছিল , আর
আমাদের ছিল না হতে দেবার ইচ্ছা বা আগ্রহ ;
এক জোরা চোখ আছে বলেই না কি আমাদের গর্ব ,
আমি নাগরিক বেনে , হুন্ডির লাইনে দাড়িয়ে চাঁদ মাপি
গৃহস্ত জঞ্জালে বিক্রি করি নিজের রক্ত থেকে দেশ পর্যন্ত !
মেয়েটিকে তুমিও চিনতে ---
মুম্বাই উপকূলে বৃষ্টি এলে ভিজে যেত সমস্ত রাত - ঘুম ,
পালঙ্কের অঙ্গীকারে এক শরীর - শরীর আরাধনায় ;
মেয়েটি মেঘ বালক খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে ফিরে এলে
অনাদিকালীন শস্য ভাণ্ডার লাঙলের ফলায়
চাষ হয়ে যেত গৃহীত অধিকারের মর্যাদায় !
এর পরে মেয়েটিকে আর কোনদিন দেখিনি !
আগুনে আগুনে সেদিন জ্বলে গেছে ভাতের হাড়ি থেকে
গণচেতনা ময় নারীর লালিত্যপ্রতিভা --
অন্ধকারে মিশে গিয়ে দৃষ্টি ক্ষীণ --
খাজুরাহ কলা এবং নারী
যদি মনে মনে খাজুরাহ চেতনায় বাৎসায়ন কলা
আর এক সমুদ্র অভিমান নিয়ে একাদশী চাঁদ আসে
জঙ্ঘা জুড়ে আদি রস বিকৃত সাদা বিছানা থক থক
আঠা ঝোরে গেলে একটাই হা-হুতাস মন নেই
ক্রিয়া ভূমি বিজাতীয় অঙ্গ চালনায় প্রসিদ্ধ !
যদি গোপন খোপে লুকানো থাকে মেঘবতী কামবতী
বিদ্যুৎপ্রভা স্বকরুণ আত্মমর্যাদায় অনিষিক্তের অভিমানে
পঙ্গপালে লুটে নিলে সোনালী ফসলের ঘ্রাণ
দুধে আলতা পায়ে আজো নক্ষত্র সঙ্গম সাথী নারীত্বের
অমলিন ক্ষেত্রভূমি উপোষী থেকে থেকে উদাসী এখন !
এবার আগুনের গল্প আনো হৃদয়ে অমরাবতী হয়ে যাক
বাসর শয্যা ফুলের মৌতাতে ভ্রমরের গুঞ্জন শিরশিরে
শীতলতায় উষ্ণতার গল্প যাবে রচে নির্দ্বিধায় !
ঘুমের পালঙ্ক চেড়ে উঠে পরো পুরুষ পুরুষালী বিদ্যাতে মদন
নয় আর গভীর এক মানবিক জগতে আমাদের সঙ্গম
শুভেচ্ছা পত্র
যখন ,
স্বপ্নরাও বাস্তব বুঝে চুপ থাকে অন্তসলিলা'র মত
পথে ঘাটে ইট পাথরে লেগে থাকে সভ্যতার নগ্নতা ,
পাথর দেবতা হলে পর ভুলে গিয়ে পূর্বজন্ম মাতোয়ারা
উৎসবে রঙ্গ রসে আশ্রয় হয়ে যায় পথিকের ! অথচ
পাথর পাথরকে নমস্কার করেনি কোনদিন আর আয়নার
সামনে দাঁড়িয়ে গেলে শুধুই শরীর , কতখানি সম্মুখ দৃশ্য
গভীরের কথা বলে ! আমিও হেটে চলি সোজা ভেবে পথ
পাশের মানুষটি অচেনা দৃষ্টি নিয়ে তাকাই , আপন নয় বলে
চোখের মণি দীর্ঘ হয় মনস্তাত্ত্বিক আক্ষেপে ! একদিন
উষ্ণায়াণ মুছে গিয়ে সুখের বসন্ত , মনে মনে বৃন্দগান পাখির
কলতান নদীর বহমানতা শাশ্বত প্রবাহ ; আমাকে ক্ষয় করে
আরও একটা জন্মদিন আসে তোমাদের গোচরে , আমিও
ভুলে যায় আমার জন্ম -- আমার জন্ম পরিচয় বিভেদের
সাম্রাজ্যবাদ মায়ের মেঘলা মুখের দৃশ্য ,
লাল নিশান বুকে রেখে উদ্দেশ্য বিহীন হেসে উঠি আর
গণিকালয় থেকে আমার পূর্ব প্রজন্ম চিৎকার করে বলে , ওরে
মেয়ে এই জন্মটাও বৃথায় গেল চলে !
No comments:
Post a Comment