শব ব্যবচ্ছেদ
আমি শবচ্ছেদ করি নিদারুণ উদ্বেগে ; মৃত্যুও
আড়ষ্ট লজ্জিত মুখে - যেন বলে চুপি চুপি
প্রসিদ্ধ ছিলাম আমি - ঐ পারাপারে !
প্রতিটি দিনান্তেই শব ঘরে আমি তুমি সে আর
এক নিয়মানুগ চোখাচুখি ;
আমিও এক ব্যাধ হয়েছি ,মাংসের গায়ে সময়ের
চিহ্ন খুঁজে খুঁজে এবার হয়রাণ --
রাতে'র সুরেলু নিদ্রা স্বপ্নেও জেগে ওঠে ওঠে
আমি রহিম মিয়াঁ বর্ধমানের , আমাকে খুন করেছেন
তোমাদের চিকিৎসক , আমি হারান মণ্ডল
বা'পাশের বুলেট ক্ষত দ্যাখো ---
আমারই ভাই ছুড়েছিল জেনে ও শুনে --
দ্রুত পালিয়ে যাই আমি আমার অপারগ হৃদয় হতে ,
চক্রাকারে প্রবর্তিত সময়ের চক্রে জড়িয়ে ধরে
সম্পর্কের অন্তরালে পৃথিবী হন্তক সন্তান
গৃহস্ত সুখে'র অন্তরালে
এরূপ একাকীত্ব ভালো ; স্বপ্ন আহরণে
প্রজ্ঞ্যান স্রোতের মত ধীর অথচ অটল সংকল্পে
আমিও সেই বোধিবৃক্ষের নির্বাণ ! এযাবৎ ঘোষিত
সবাক জনতা'য় এক কাল্পনিক শব শহরে নির্বাসিত-
নির্যাসে আফিমত্ততায় ; তার চেয়ে এই স্বপ্নাচ্ছন্ন
নেশাতুর গভীর আবেশে মা মাটির ভাষাতে আমার
কবিতার রূপ রস গন্ধ - মদিরতায় বুদ্বুদে আমাকেই
খুঁজে নেব নির্জনে , প্রান্থজনে ;
শিশুর হাসির মত মায়া রেখে তুমিও মিলিয়ে গিয়েছো
উদ্বেগের কোন সাম্রাজ্যে ।
এখনও অনেক অপেক্ষা উপ্রেও অপেক্ষা করি
দ্বিরাগমনের সেই বঁধুর মুখের হাসির মত --
অথবা খুলে রেখে হাঁসের গৃহ গোধূলি নামলে গৃহবঁধু
রৌদ্রের সফর শেষ করে সেও ঘরে ফিরবে এখুনি !
অভিলাষ প্রত্যাশায় বিড়ম্বিত আত্মানুভুতি আর সুখি
বিরহ ব্যথায় আমাকে অবাক করে দাও --
সমস্ত নির্বাণ পথ দ্যাখো গৃহস্ত সুখের অন্তরালে ----
স্বাধীন
তোমাকে ছুঁয়ে থাকলে এখনও সাদা বক পথ ভুল করে ,
তোমাকে ছুঁয়ে থাকলে আমিও ভুলে যাই ব্যাধের জন্ম !
আমার সম্বল বলতে একটাই হৃদপিণ্ড তাকে জল হাওয়ায়
প্রস্তুত করি আর তোমার যেখানে ছায়া পরেছে খুঁজে চলি !
জানি একদিন যেবার স্বাধীন সমস্ত রটনাও ভুলে যাবে পড়শি
আগুনে বিকৃত মুখমণ্ডল ছায়ে আঁধার নেমে এলে নিমেশে
তুমিও ভুল করবে উপপাদ্য'র নিয়ম মেলাতে , কিন্তু আকাশে
একটাও সঙ্কেত নেই দুর্যোগের !
আমিও সেবার স্বাধীন -- তবুও অতৃপ্ত জীবনের স্বাদ মুছে যাই
ছায়ে ছায়ে আগুনের পরশে ?
মুছে যাই নদীর কলতানে পদ্মের ঈশ্বর প্রতিভা ?
দ্যাখো , এখনও ছুঁয়ে আছি তোমার নীল আঁচল
আর স্বাধীন হয়েছে দ্যাখো সমস্ত মিথ্যা অভিলাষ !
স্বাধীন
তোমাকে ছুঁয়ে থাকলে এখনও সাদা বক পথ ভুল করে ,
তোমাকে ছুঁয়ে থাকলে আমিও ভুলে যাই ব্যাধের জন্ম !
আমার সম্বল বলতে একটাই হৃদপিণ্ড তাকে জল হাওয়ায়
প্রস্তুত করি আর তোমার যেখানে ছায়া পরেছে খুঁজে চলি !
জানি একদিন যেবার স্বাধীন সমস্ত রটনাও ভুলে যাবে পড়শি
আগুনে বিকৃত মুখমণ্ডল ছায়ে আঁধার নেমে এলে নিমেশে
তুমিও ভুল করবে উপপাদ্য'র নিয়ম মেলাতে , কিন্তু আকাশে
একটাও সঙ্কেত নেই দুর্যোগের !
আমিও সেবার স্বাধীন -- তবুও অতৃপ্ত জীবনের স্বাদ মুছে যাই
ছায়ে ছায়ে আগুনের পরশে ?
মুছে যাই নদীর কলতানে পদ্মের ঈশর প্রতিভা ?
দ্যাখো , এখনও ছুঁয়ে আছি তোমার নীল আঁচল
আর স্বাধীন হয়েছে দ্যাখো সমস্ত মিথ্যা অভিলাষ !
আমি লিখিনি কিছু----
চন্দ্র বসু কে নিয়ে আমি কিছু লিখিনি আগে ,
এক দিন চার্চিলের দেশ থেকে এক বৃদ্ধ সাংবাদিক
এলেন এদেশে মু কমিশনে সাক্ষ্য দিতে
চন্দ্র বসু জীবিত কি মৃত ,
সঙ্গে কালো কুচকুচে গ্রে হাইন্দ কুত্তা ,
এয়ার পোর্টে নামার সঙ্গে সঙ্গে দেশীয়
সাংবাদিক'রা মৌমাছির মত ছেকে ধরলো
"স্যার টমাস , চদ্র বসু নিয়ে আপনার কি
অভিমত ? " সায়েব গটগট ভি আই পি গেট
বেরিয়ে যেতে যেতে বললেন " আই এম টায়ার্ড "
সাহেব কে দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে রাখা হল
জামাই ষষ্ঠীর আদরে -----
পরদিন কমিশন ঘর --
বৃদ্ধ প্রাক্তন বিচারপতি আর টমাস সাহেব
বিচারপতি " স্যার চন্দ্র বসু সম্বন্ধে আপনার কি ধারনা ?
তিনি কি বেঁচে আছেন ?
টমাস সাহেব কুকুর নিয়ে এসেছেন সঙ্গে
টমাস সাহেব বললেন " চন্দ্র বসুর ব্যবহারের
কোন পোশাক আছে এই ঘরে ?
দেখুন কুকুর এনেছি -- শুঁকে শুঁকে ঠিক বের করবে
চন্দ্র বসু লুকিয়ে কোথায় আছে ,
আপনি কি বুঝবেন মহাশয়
অর্ধেক সূর্য নিয়ে বাঁচা দুঃখ এখনো বয়ে বেড়াই " -----
সারগেট মাদার ০২
মিথ্যা বিক্রি হয়ে গেলে যৌবন তিন ওক্তের
আহার জোটে না ; অহেতুক রূপের দায়ভার
বয়ে নিয়ে অস্পৃশ্য প্রজাতি চরিত্র হরণ রাতে !
ওদিকে তোমারও অনাবাদীভূমি কাঁটা ঝোপ
ঝাঁর জঙ্গলে নেই মঙ্গল শঙ্খ ধ্বনি , নেই ভগবানের
সুতীব্র চিৎকার পসুতি মায়ের গন্ধ-বাতাস ;
লেট নাইট পার্টি কেরিয়ার স্লিম এর আদিম
উন্মাদনায় ভ্রূণখোর পিলের সৌজন্য তুমি সাময়িক
সৌভাগ্যবতি মনে মনে ক্লাব মহলে !
তবুও যেদিন জঠরের অপারগতায় গৃহস্ত হাঁস হাঁসফাঁশ
সব থেকেও শূন্য গৃহাঙ্গন , ঈশরি- ঈশ্বর হাসি দেখার
বিহ্বল হৃদয় -- নিরুপাই তুমি পয়সা ছুঁড়ে দাও
চোখের জলে ---- ; আমিও প্রস্তুত
আমিও প্রস্তুত এই খেলা ঘরে খেলতে, জন্ম বেঁচে জন্ম
বাঁচানোর লড়াই ---
শুধু ঈশ্বর জানেন ঈশ্বর বেচতে কতখানি ঈশ্বর মরে !
শ্মশানতত্ত্ব
শরীরের ঘাম মুছে গেলে শীতলতা--
আগুনও ঠাণ্ডা করে আগুন
পোড়া কাঠে যতখানি অতৃপ্তি লেগে থাকে
এবার তাও মুছে যাবে
ডোম বঁধুর গৃহে'র আলু বেগুন সিদ্ধে !
এখানে এক শ্মশানময় জীবন , এক শ্মশানময় মৃত্যু !
অথচ,
আমার গোপন শ্মশানে আমি কাঠ আমি ডোম আমি আগুন
নিজেকে পুড়িয়ে দাঁড়ালে সম্মুখে
জানি তুমি রুপ দ্যাখো ,
আসলে তুমিও অশরীরী , আমিও অশরীরী
মধ্যরাতের চিন্তা ভাবনা
দেখি একমুখী ঝড় তুমি উড়ছো খোলা চুলে
আমাকে নিয়ে মাতম করে গেলে এই আষাঢ়
আমিও পেয়ে যায় আমাদের সুখের সন্ধান !
যদি তুমি খুলে রাখো অলঙ্কার প্রসাধনী আবেগে
আমিও স্মিত হেসে রঙ মাখি মনে
তুমিও রাঙ্গবে আজ রাতে কদমে-মদনে-মন্থনে !
তারে প্রেম বলে জানি বা প্রিয়তমা বা আলোকের
পথিক দিশারী , আমিও ভিখারি প্রেমে-অপ্রেমে- স্নেহে ,
বন্দী ছিল যৌবন অনাহারে কু-আহারে- কু-সঙ্গে
রেড লাইট দশ বাই দশ বদ্ধ জলাসয়ে এযাবৎ !
পশুবধ করে এবার ক্লান্ত হয়েছে মন- প্রাণ -অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ,
শরীর চালনায় এবার আমি নির্বাণ অভিলাষী , তাই
ভালোবাসি তোমার মুখে লেগে থাকা শাশ্বত অভিলাষী
প্রেম - শিকারি পুরুষ থেকে এবার শিকার হবার পালা !
মনস্তাত্ত্বিক
অদ্ভুত ভাবে ঘুমিয়ে আছে ক্লান্ত দুপুর
প্রজাপতি রঙের অতীত মুক্তি পেয়েছে
অন্তরে সংগোপনে ; ঝাপসা দৃষ্টির ওপারে
বনেদী পরিবার চির বসন্ত জগত নির্বাক !
মথ ভাঙ্গে যেসব সুন্দর অভিরুপি জীবন
তাদের খোলসেও লেগে থাকে ছায়-ভস্ম
দুর্গন্ধ সময়ের স্মৃতিচিহ্ন , তারাও ভুলে গিয়ে
অতীতের বংশপরিচয় - বলে জন্মেছি আমি
দ্যাখো তোমাদেরই মাঝে !
যাদের জন্মে কোন গল্প থাকে না ,এলাম আর
জয় করে ফিরে গেলাম যারা সময়ের অগুন্তি
গ্রন্থি - তাদের প্রেমে পরাজয় নেই মধুতে
বৃতৃষ্ণা নেই সন্তানের অধিকারে নেই দ্বিতীয়
কোন পরপুরুষ , তাদের সত্যি কোন দুঃখ নেই !
অদ্ভুত বৃষ্টি খেলা করে শরীর ঘিরে প্রতিরাতে
বিছানা তবু ভিজে যায় ঘামে ; পাশে ঘুমন্ত শিশু
মুখে ঈশ্বরের ছবি , প্রেম নয় , অর্থ নয় , সমৃদ্ধি
নয় , তবুও গোপন অনুতাপে পুড়ে যাই একমাত্র
হৃদয় , বুঝি সুখি থাকা স্বপ্নেই সম্ভব !
এভাবেই আসে সে
ঘুমে সেই তো আদি কালীন মুখ
একটা গাঢ় অন্ধকার
ফুলে ফেপে শিরাউপশিরা অপ্সরা
চোষক ঠোঁট
অতৃপ্তির দুই লোভনীয় আপেল ফল
জঙ্ঘা'র শেষে
কাল জগতের "বটতলা" সাহিত্য সম্ভার !
ঘুণাক্ষরেও আকিনি একটা মেরুদণ্ড
দীর্ঘতর গ্রীবা'র উপর একটা মাথা
দুই সরল বাহুর মাঝখান দিয়ে
একটা মিষ্টি নদী
উপত্যকায় ভালবাসার ঘর !
কে ভাবে দ্যাখে নাকি কেউ চাঁদ ?
আমি শহুরে জঞ্জালে
লাইনে লাইনে ভীরে ভীরে
কাম খুজি
কাম চোর রাত এলে উলঙ্গ সত্তায়
বিসর্জিত আমার অস্তিত্ব --
ধোঁয়াশা জগত
একটা খোলা চিঠি লিখে যাই তোমাকে-----
সোনার চামচে জন্ম এসে খুঁজে দ্যাখে শুধুই স্বজাতি বীজ
পাশের আগাছায় দিকে দৃষ্টিতে উপেক্ষা'র অনল ,
তাদেরও মা থাকেন তবুও আমার মায়ের হাত ইঁদুরের গর্তে
মোটা চালে আলু ভাতে , আর আমি
অন্ধকারে পড়ে চলি আগুনের উৎস ভূমি কোথায় !
আমরা যারা এলাম অজ্ঞানতায় জন্মের পরম্পরায়
ইচ্ছা- অনিচ্ছার ঠোঁটের সন্ধিতে ; এলাম বলেই
মেঘের মঙ্গল শঙ্খধ্বনি আর কাপালিকের যূপ কাষ্ঠে
ছাগ শিশু ম্যা --
বলে গেল তুইও প্রস্তুত হ ?
জীবন- মরণের খেলা ঘরে দরকষাকষি রশি টানাটানি
এক দিকে দেশ একদিকে জনতা ; আমার জন্মান্ধ মা
(চোখ থাকলেই দেখা যাই না শুধু ) বোঝে না দেশ কারে কই,
শুধু বোঝেন চালে কাঁকর থাকে গুগলি তে অমৃত সুধা !
প্রিয়মতা , ক্ষমা করে দিও , অহেতুক বিড়ম্বিত কথা চালাচালি ,
আমিও ভেবেছিলাম একখানা প্রেমের পদাবলী লিখে যাবো
আর তোমার স্মৃতি রোমন্থনে তীব্র আষাঢ়ের মত ভিজে যাবে
আমার শরীর , দেহ থেকে তাপ উঠে গিয়ে আমি শীতল মানব !
এখন বুঝি -- অনেকেরই জীবনে প্রেম থাকে না ,থকথকে জিব্লি
আঠার মত একটা অতীত থাকে তাতে আটকে থাকে ফড়িং ভবিষ্যৎ !
রাক্ষস
ভুলে যাওয়া ভুলেরও মাশুল গোনে জীবন
চক্রবৃদ্ধি সুদে আসল উপ্রি পাওনা হলে
বুড়ো সাইলক বলেন গ্রাম খেয়েছি মা খেয়েছি
এবার তোর বৌটাকেও খাবো ;
সকালে কার্নিশে রোদ নাচে দুষ্টু বাছুরের মত ;
রোদের গর্ভ গৃহ ভেদ করে শুরু হয় লোকাল ট্রেনের সাইরেন ,
আমিও টাই বাঁধি কসে
এবার শরীর ঝালানোর খেলা বাস হাতলে
সময়ের ভগ্নাংশ ভেদ করে উঠে আসে যে প্রেম
তাতেই শরীরের সুস্থতা
মন থাকে রাঁচির পাগলা গারদে !
শান্ত গ্রাম্য নদীর মত ছিল এক সময় জীবন ;
তখন কড়ি আসেনি কিম্বা ধাতব মুদ্রা রাক্ষস ,
প্রত্যক্ষ হৃদয়ে ছিল হৃদয়ের কথা --
এখন পরোক্ষ আগুনে হাত সেঁকি ; বুকে হাঁপর টান এলে
তখন জাতিস্মর , পূর্বজন্মের প্রতি অনুরাগ !
আর কিছু অবশিষ্ট নেই ;
সেই অলৌকিক কান্নাও থেমেছে আজ --
বোধিবৃক্ষ অপলক দৃষ্টিতে
চেয়ে ;
দূরে , বহু দূরে সাম্য পুরুষ হেটে যান
একা , একা একা নির্জনে--
কেউ খোঁজেনি ---
তিনি দুঃখ নিয়ে যাচ্ছেন
No comments:
Post a Comment