বাবা ---
বাবা'কে ভাল বাসতে গিয়ে দেখেছি
আমি বাবা'র মত নই ,
বাবাও তার বাবার মত ছিলেন না ,
অথচ বাবা'রা বাবা'র মত হতে পেরেছেন বলে
বাবা হয়েছিলেন !
বাবা'রা একদিন বাবা হয়েছিলেন বলে থাকে না বেশি দিন ;
বাবা'দের বাবা হবার ওয়েটিং লিস্ট ঠাসা
অতএব নাগর দোলার চুতুর মাষ্টার
লোভে মাঝপথে থামিয়ে দেন দোলন
হুরমুরিয়ে অন্য বাবা'রা উঠে পরেন তাতে --
শুধু এই ভীরে আমি আমার বাবা খুঁজে পাই না !
আমিও তো বাবা'রই রক্তে জন্মে শ্মশানে ভ্রূণে ;
একদিন বাবা'রা পাহাড়ের কাঠিন্যে
একদিন আমিও বাবা --
পৃথিবীর স্থাবর- অস্থাবব দলে বাবা'র দলে আমি --
আমার কোন বাবা নেই !
মেয়ে
যাকে তুমি শরীর দাও প্রতিরাতে , উঠতে বসতে
চেতনা ইলপের ইচ্ছা শক্তি দাও বাড়িয়ে , তাকে
একবারও দেখিও না তোমার নন্দ দুলাল ; মানুষ
ঈর্ষান্বিত হ'লেই ভগবান মরে পরে থাকেন চাতালে ,
শকুন গন্ধ শুঁকে চলে যাই , মানুষের ভীর বারে ;
অথচ ভগবান উঠে বলেন না আমি অমর !
যাকে শরীর দিয়েছো বা মুখে কাঁচা মাংসের স্বাদ ,
তারা বন্ধু হ'লে হারিয়ে যাবে গোল্লাছুট চুলের খোঁপা
কবরী গন্ধ্যা কিম্বা প্রতিটি সন্ধ্যা আরতি থেকে মুছে
যাবে পয়মন্ত ঈশ্বর মুখ বাসরের স্মৃতি !
মেয়ে , একটা বিন্দু রেখো তোমাকে ;
তার একপাশে থাক পুরুষ সাম্রাজ্য ইচ্ছাতে অনিচ্ছায় --
একপাশে থাকো তুমি বিষাদে আত্মমর্যাদায়
বিপ্লবের জন্ম
আগুন্তি আগুনের মশাল আসছে এদিকে
পুলিশ সুপার উদ্বিগ্ন চোখে ; তারা আসছে
দল বেঁধে বিদ্রোহী বিপ্লবী ; প্রাণঘাতী অস্ত্র
জমা দিচ্ছে সব কৃষ্ণ প্রেমে অথবা কৌটিল্যে ;
সামরিক পোশাকের লোকগুলো কেউ সন্ধিহান
কেউ খৈনী টিপে দানব ছিলো এরা -এবার মানব !
বিপ্লবীরাও যেন সব মানত দরগায় , মনে মনে
লাল সুতো বাঁধছেন অস্ত্রের চারপাশে
অস্ত্র দেবতা হ'লে
মৃত্যুও অসহয় !
অস্ত্র জমা দিয়ে একটি ছেলে দ্রুত দৌড়ে বেড়িয়ে গেল
ভীর ঠেলে প্রকাশ্যে ; এবার নির্বান্ধব ;
ভীতু চাঁদ ওঠে মহুয়া বনে প্রেমিকার অভিমানে-
ছেলেটি হেসে ওঠে --
এখনো বিপ্লব !
ওরা জানে না .৯ মিমি পিস্তলের থেকেও ভয়ংকর অস্ত্র আছে
আমার সাথে ---
আমার চেতনা , আমার সমগ্র অস্ত্র !
একদিন , মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে
একদিন দুর্গন্ধ ছরালে ওয়াক ওয়াক
শব্দে ভাতের থালা থেকে মুখ তুলে নেবে-
পচা পশুর গন্ধ ভেবে ; একদিন অন্ধকার
নেমে এলে দৃষ্টিতে শ্লেষ্মা'তে ভোরে যাবে
উঠোন -- তুমি লজ্জিত মুখে প্রিয়তমা ,
তুমিও লজ্জিত মুখে বান্ধবীগনে ব্যাটা বুড়ো
ম'লেই বাঁচি , ঈশ্বর অন্ধ হয়েছ কি !
একদিন আমি দাঁড়ি কাটবো না ,স্নান ঘর
নিরালা উপবাস , কাঁদামাখা এ বিছানাপত্র
নাইট্রিক অ্যাসিডের ক্ষরণে ক্ষরণে
অভুক্ত পেটের নাড়ীর উদ্গিরন ক্ষণে ক্ষনে
সোকেসে সযত্নে বিবাহিত টোপর মুচকি হেসে
অতীতের আগুনের ধারক বাহক !
একদিন পূর্ণিমা আসে সিঁদকাটি চোরের মত
নিশুথি আঁধারে ; ঘুমিয়ে রয়েছে ওদিকে আমার
প্রেম -- ভালোবাসা বলেই জেনেছিলাম এক কালে ;
এবার নিঃসঙ্গ আমি বিলীনে পঞ্চভূতে ---
প্রেম নারী সময়---
তুমিও ? তুমিও পতনের কালে , জুডাস !
নির্ধারিত হ'য়ে গেছে যাবারক্ষণ , শাসনেই ছিল
প্রেম বেঁচে -এখন শেষ মুগল সম্রাট --
এবার প্রেম চিনেছি জীবনে নয় জীবন দিয়ে !
উদগ্রীব চিহ্ন
তুমি যেখানেই হাত রাখো স্পর্ধায় সেখানেই আমার
অষ্টাদশী অনুভব ; যখনি আকাশ ছোট হয়ে আসে
তোমার কাছে , হাতে হাতে খেলা করো অগুন্তি নারী
শরীর , রঙিন জলে ডুবিয়ে তোমার অতীত আর তুমি
একুরিয়ামের সেই ছট-ফোটে ঈর্ষান্বিত মাছ --
সেই সব দুর্লভ মুহূর্তে অনুভবে আমি তোমার থেকেও শূন্য !
যেখানে খুলে ফেলো তুমি নৈশ পোশাক অপরিসীম ক্লান্তিতে ,
প্যাঁচার মত ক্ষুধার্থ বুকে স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি অথচ ক্যানভাসে
তুলে নিচ্ছ সময়ের বিশ্বাসঘাতকতা ;
সেখানেই আমি আমি চুমি যদি হতে পারি বিষখোর নাগিনী !
যেখানে তুমি পরাজিত সৈনিক,খুলে পরে তোমার অস্ত্র অহংকার
প্রবল অনিহায় ঝরে যায় শিল্প- সম্ভবনা
আমি প্রবল অভিমানে বৃষ্টি ডাকি
গভীর রাতে মনে মনে তোমার ক্ষত চিহ্নে মলমের প্রলেপ আঁকি
তোমার পরাজয়ে আমি পরাজিত হ'য়ে
বিশ্ব চরাচরে আমার অভিমানী কান্না বেজে যাই !
তোমার পৌরুষের পাচন দিয়ে গরু তাড়ানোর মত তাড়িয়ে দিলে
আমার আত্মাভিমান তুলে রেখে তোমারই পায়ের কাছে দাড়াই ,
যেখানেই তোমার দুর্মূল্য মুহূর্তটা খেলা করে শোকে বিরহে আনন্দে
আমিও সেখানে নারীর উদ্দাম প্রাবল্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে
উদগ্রীব চিহ্ন রাখি ,
যেখানে আমি মন রাখি সেখানেই তুমি থাকো , শরীর থাকে না --
সেই সৃষ্টি বিশ্ব আর এক শূন্যতায় আমার জগত !
নাস্তিক
আমাকে শূলে চড়াতে পারো গিলেটিনে দিতে পারো
কতশত "লু" এর মত , অথবা দিতে পারো সর্বগ্রাসী
নরকের ভয় , আমিও দাম্ভিক,হেলেনা দ্বীপে বন্দী
সম্রাট , প্রবল ইচ্ছাধিক্যে রেখে যাবো আমার মত !
শুধু মুগ্ধতায় ঠাসা সনাতনী রঙিন মূর্তিকে বলবো না
ঈশ্বর ; অতীন্দ্রিয় অনুভবে অন্ধত্বে'র কৃপণ মনস্তাপে যে
আছে তোমার বিশ্বাসে থাক সে চেতনার ধারা মূলে ,
আমিও স্বাধীন ,অপার দৃষ্টিতে বিস্মিত জন্ম , আর তাদের
কর্মক্ষেত্রে ধরাতলে চাক্ষুষ ঈশ্বর !
আমিও মাথা নামিয়ে দিতে পারি নির্দ্বিধায় তারপায়ে, গ্রীষ্মের
তাপদাহেজলসত্রে যে উলঙ্গ বলক জল দেয় বাতাসার সুমিষ্ট রস--
আমার ঈশ্বর চরম অবজ্ঞায় আমার জন্মে তার জন্ম হয়
মৃত্যু চেতনা
আমার কোন মৃত্যু চেতনা ছিলো না কোনদিন ,
মাদক এর ব্যাপারেও সুনিদিষ্ট মতামত থাকে
এমন কি লিপস্টিকের রঙ বক্ষ সৌন্দর্য নিয়েও
দু'চার ঘণ্টা ভাষণ দিতে পারি নির্দ্বিধায় ;
শুধু মৃত্যু চেতনা ছিলো না কলুর বলদের মত !
মদের ফ্যানার মত অনেক জীবন দেখেছি
এখানকার চালচিত্রে ; খাজনা মকুব হয়েছে যেসব
কৃষকের তাদের নির্ভেজাল হাসি দেখেছি ; জু হুজুর
ক্রীতদাস অকৃতদার সময়খোর সুদখোর দালালের
ঘরে দেখেছি নিরিহ যৌবন ;
সত্যি মাইরি-- একটাও মৃত্যু চেতনা দেখিনি আমি !
পৃথিবী , সূর্য জ্যোতিষ্কপ্রভা বা তারাদের সংবেদনশীল
আকাশে প্রেমিক ভবঘুরে নিষ্পাপ শিশু
আর ছোট ছোট বিষাদ দেখে ---
আমি এবার শ্মশানমুখী -- আর থরে থরে গোছানো সব
জন্ম বফর মাছের মত নিস্পলক ;
এই প্রথম ভয় পেলাম ---
ঘাম বেড়িয়ে গেলে দেখি আমি শ্মশানযাত্রী অতীতের
এখনো কৃষক
কি প্রফুল্ল উদ্দমে সকাল হয়েছে বুঝে নেয় নাংলা ;
গোপনাঙ্গের মত চির সুরক্ষিত রাখে যারা "মা"
তারাও উদ্ভাসিত সূর্যের দিকচক্র প্রতিভায় !
এবার খননে খননে গোময়ে গোময়ে পায়ে পায়ে
জেগে উঠবে অহল্যা , এযাবৎ নিজের বুকে লিখে দিয়ে
গেছেন যেমন শিশুর বারাবত ভবিষ্যৎ , এবারও !
কৃষক প্রভাতের পয়মন্ত বায়ু সেবনে অপার বিস্ময়ে বুকে নিয়ে
দৈব ভূমির স্বপ্ন আষাঢ় ভাঙবেন আমনের শান্তি নিশানে ।
আমাদের কুটিল ষড়যন্ত্রে - ওসব দৃশ্য দৃষ্টিভ্রম নচেৎ
কল্প বিলাসী কোন শহুরে কবির মিথ্যা অহংকার ;
এবার জীবনের কথা ভাবো সহোদর আত্মিক বন্ধু
পুনরায় বন্ধ্যা হলে সৃষ্টি তোমার অহংকার তোমার মৃত্যু !
চাষি বন্ধু আমার , সমস্ত কাঁঠালি মাছির চিৎকার শান্ত হবে
নোনা বাতাস উঠে গিয়ে ফসলের সঙ্গীতে বিশ্বময়তা ;
সমস্ত রণাঙ্গনে সন্ধি প্রস্তাবে উঠে আসবে কৃষক দাও
নিলে নিয়ে যেতে পারো দেশ !
ঘুমাই এবার
তুমি ফিয়ে এসো , পুনরায় আমিও সমস্ত চক্রান্ত
খুলে দেবো কবিতা শেষ হয়ে এলে ; আশার পংক্তি'তে
আমাদের আগামী প্রজন্ম - দ্যাখো বর্ধিত এই হাতে
অনেক সূর্য ছোঁয়া অনুক্ষণ , হৃদয় প্রেমের গলনাঙ্কে
তরলীকৃত , এবার লীন হও আমার জন্ম চক্রে !
এতকাল কেবলি আবক্ষ জলে উষ্ণ চিন্তা এসে ডাক
দিতে থাকে , তারা শরীরের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠা চাই
ভয় দেখিয়ে নাম পাওয়া দেব- দেবীর মত ! ক্রমাগত
চাপ দিতে থাকে ফজরের নামাজের মত প্রতিবার
প্রতিদিন ; আমিও তো শরীরবদ্ধ জীব এবং জীবিকা
অন্বেষণে যদি ভুলেও গরম হয়ে উঠি ---
খেয়ে ফেলি আত্ম মর্যাদা যেমন করে দেশ খেয়েছি !
ছন্দিত নন্দন চর্যায় সমাপ্তি আনো শীর্ষ চিন্তনে , প্রেম ,
আমাদের দানবিক চিন্তাপাতে আসুরিক ক্ষমতা অথবা
ইগ খুলে যাক উস্নিব পরাজিত মহারাজের ---
চোখের আড়াল করো না মহানবী ঈশ্বর ভূমি
আমাদের কতকাল ঘুম নেই ঘুমাই এবার !
নাম তোমরাই দিয়ে দাও
আজো নিঃশব্দে হৃদয়ের ধ্বনি ভোটে বাজে আকাঙ্ক্ষা ,
তোমার নাম ; এবার শোনাবো না আমি চিরাচরিত
সেই সুর অথবা শান্ত ঢেউ ধরে গোধূলি নিমন্ত্রিত
অতিথির মত এসে বলে যাই যে কথা -- এই বিকাল , নীড়ে
ফেরার তৃষ্ণা চোখে শালিকের ভাষা'য় প্রিয়তম
কেমন আছো !
কবে দু'জনায় দ্বৈত চেতনায় লিখে গেছি ফুল ফল ঘাস
শিশির মেঘের লুকোচুরি , এখানে , অনেকবার ; অবশেষে
পাতা'ও ঝরে খুঁজে পাই আগামী সম্বন্ধিয় সমগ্র সত্যাচার ,
দ্যাখো , দু'জনায় কত কাছে - কত কাছাকাছি জন্ম
আমাদের , এখানে , বারবার , পুনর্বার --- তবুও
অন্ধের যষ্টি খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হ'লে তোমাকে,পৃথিবীর নিষ্কৃতি ,
আমিও ভালোবেসে যাই বহমানতায় শব্দে শ্মশানে অনিবার্যতায় ,
সম্মুখে তুমি থাকো , পৃথিবী থাকে না !
No comments:
Post a Comment