আর সেখান থেকেই উঠে আসে " সায়ক" , হয়ত তুমি ---
"সায়ক" ১ থেকে ২১ পর্যন্ত কবিতা
সায়ক
নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে চাঁদ
আফিমখোর রাত খুলে ফেলেছে পোশাক
ক্যানভাস থেকে বেড়িয়ে দুধেলু গাই
নষ্ট হয়েছে চরিত্র ; বিজলী গেছে দুর্দিনে
উদ্ভ্রান্ত শব্দ- ঝড় সায়ক ইংরাজি'র ছাত্র
উলঙ্গ সেক্সপিয়ার থেকে ম্যাকবেথ ভেনিস
রাস্তায় , হ্যারিকেন আলোতে পাণ্ডিত্য ,বুকে
হাঁপরটান , শব্দ নির্বংশ পরীক্ষা খাতা জুড়ে
আঁধার , রূপটান শেষ করে এবার সূর্যের
প্রস্তুতি , সোজা হিলি বর্ডার জলপাই এঁকে
চরিত্র'রা স্বদলে হাত বদল নোট ,
প্রকাশ্যে বেড়িয়ে এলো রাজপুত্র অভিমানে
বলিউড হিরো , রঙ মশলা আকাশে উড়বার
ইচ্ছাপুরানে গম্ভীর , সায়ক টাই বাঁধছে
পৃথিবীর বুকে ----
সায়ক ২
অনেক খড় পেতে মাটিতে মশক চিৎকার পেছনে ফেলে ঘুমিয়েছে ;
এক নির্জন রাত্রি আছে পিকনিক পার্টি
আঁধারে পেটকাটি মেলা আছে জ্যোৎস্নার জাম্পেস
বিলাতী ওয়াইন ;
তীব্র দাহ থেকে ঘামাচির মুখে আছে চুম্বন দৃশ্য
সায়ক জেগে আছে
জেগে আছে নিশব্দ ক্যাপিটাল মেলের হুইচাল !
ঐ তো মালভূমি থেকে নেমে যাচ্ছে মুখচ্ছবি
নারী ছিল অথবা জননী
এই অস্পষ্ট রেখা ধরে জীবনের অন্ধগলি -- আমি
ছা- পোষ কবি
নায়কের মান ভঞ্জনে তাকেই ডাকি
সায়ক ০৩
নিষিদ্ধ গোপনতায় চোখ ছানাবড়া ,
প্রেম এখনো কি অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় খুলে ফেলে
আভরণ , বিদ্যুৎ চমকায় , কোন কোণে !
দ্যাখো , আরো পরিপক্ক এই জুহুরি , তবুও
তামা পিতল সোনার প্রভেদ খোঁজে না
গুপ্ত আঁধারে , রক্ত মাংসের উত্তাপে এযাবৎ
প্রেম ছিল না , এবার সাপে চুমু খেতে বেশ লাগে ।
তুমিও বেশ সুচারু চিকণ অঙ্গচালনায় অষ্টাদশী ,
কতখানি দিলে পরে প্রেমিকও দুধখোর মুখচোরা
বিড়াল , জানতে ,
পনেরো হাজার পুংতি চ্যাটিং বক্স এ আছে মুখীয়ে ,
সায়কের ইতিহাসে তুমি নাচবে কাঁদবে হাসবে মুখটিপে ,
নায়কের মুখ চোখে এযাবৎ শব্দ পোকা
অবসরে ঝরবে অঝোরে -- এখানে বৃষ্টি নাই !
সায়ক ৪
রায়গঞ্জ থেকে কু-ঝিক কু-ঝিক ট্রেন ছেড়েছে
পচাত্তর টাকা সম্বলে , এক কলকাতা বুকে আঁকা
যদিও তোমরা বল গ্রিন হাইসের ধোঁয়াশা শহর ।
আফিমের নেশা ঘোড়ে ট্রেন ছুটছে পল্লী গ্রাম যেন
স্বপ্ন রাজপুত্রের মতো টগবগিয়ে ঘোড়ায় পেরিয়ে
যাচ্ছে বাঁশঝাড় শ্যাওলা পুকুর মেঘেদের রাজ্য !
সায়কের বুকে এক তুফান আক্রমণ, ঝঞ্জা বাতাসের
রুদ্ধশ্বাস লড়াই , আঙ্গুলের ফাক-ফোঁকর গলে
এতদিন বেরিয়ে গেছে কলেজ কাল নারীর ঘ্রাণ
চিরকালীন যৌবনের মধুমাস !
শিয়ালদহ স্টেশন আস্ত এক পৃথিবী , প্রেম হিংসা
ক্ষোভ নিয়েও পিঁপড়ের তালে ছুটছে ছোট ছোট সুখের
সন্ধানে , প্রতীক্ষা করতে কতে প্রতীক্ষারাও এক সময়
ক্লান্ত হলে সেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত আসে , এসে দাড়ায়
যখন বিথিকাঞ্জলি কথা থাকে না !
সায়ক ০৫
তরুণ এক নির্ভেজাল করি , শব্দ ডাকছে আয় , তবুও
চাইবাসা নেই হারুন অল রশিদের রাজ্য নেই বেহেড মাতলামি
আছে চুল্লু ঠেকে , বাবার পেনশনের টাকাতে যেসব কবিতা আসে
মনে তাতে সমাজ নেই ,নিজে দাড়িয়ে আছে !
গভীর রাতে আনাগোনা শুরু হলে মিত্রাক্ষর ছন্দের
তাকে পাত্তা দেই না নাগরিক কবি
এক বিশ্ব হন্তক চেতনা কুড়ে কুড়ে মাষ খেয়ে গেলে আমাদের
সায়ক লেখেন " প্রেম এই জীবনে আর কত দুঃখ দিবি তুই ? "
সায়ক ০৬
তৃষ্ণা ভেঙ্গে আরো অদ্ভুত তৃষ্ণা
হেটে চলে আগুনের দিকে ; অলিভ পাতা জুড়ে
পেশাদারী অতীতের বিন্যাস আঁকা ; মরুপথে মেষ বালক
আর কিছু লোক বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ক্রুশ -
সায়ক এবার বিদ্ধ হবে - হয়েছিল অনেক জন্ম আগে !
থকথকে আঠালো রসে রাধিকা , জুলিয়েট বুকে অনেক রক্ত-ক্ষত
দগদগে উত্তর আধুনিক ,
সব কিছু লিপিবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে শব্দ অভিমানে নৈরাশ্যে ;
সায়ক ০৭
বাহারী রঙের পাজামা পরেছে সায়ক ;
"উজ্জীবনে" এসে মিশেছে রামধনু
জীবনের ছত্রছায়া থেকে প্রেম আর ফাগুণের
সোহাগী দুপুর মুখীয়ে আছে
মুখ লুকিয়েছে সব জটিল ষড়যন্ত্র !
হোলিতে মজেছে গাছ পাতা -- ঘাসে ঘাসে
আজ রাঙানোর আমন্ত্রণ ।
উত্তরবঙ্গের এই প্রাচুর্যের কাছে পৃথিবীও
বোধহয় শিশু , মহুয়া পলাশে
আহা , আজ শুধুই গ্রাম , ভালবাসার গান !
অতীতের ছায়ভস্ম মেখে আমি অন্তঃমুখী
এক শহুরে কবি , এই প্রথম আষাঢ়ে
আলোড়ন বৃষ্টি যেন - মাথার মধ্যে
গো মেরে আছে
এখন সায়কের প্রজাপতি হবার গল্প -
দেশী ভাঁটিখানা থেকে যতই উড়ে যাক দুর্গন্ধ
সায়ক ০৮
গভীর ঘুমিয়েছে যন্ত্রণা কামরঙা অভিমানে
ওধারে পাটীগণিত ঠাসা আছে রুপালী নায়িকার উন্মুক্ত চুম্বক
মোলায়ম পাতায় শিশিরের অবরুদ্ধ স্মৃতি
মদ মাংস মেয়ে নিয়ে সাইরেন পুলিশ অন্ধকারে পরে আছে
যুবতী গাঁদিকোট ;
না , ঘুমিয়ে থাক সায়ক , কতদিনের স্মৃতি বিস্মৃতির অন্তরালে !
এবার পারদ নেমে গেলে সাধারণত শীতলতায়
যূপ কাষ্ঠে দ্বিতীয় ছাগল তৈরি
এভাবে হারতে দেবে না চন্দ্রমুখী ;
নায়কের শোক নেই ত্যাগ নেই মুখাগ্নির সময় নেই --
আজো চমৎকার বিদূষক !
পাতা উল্টে এসেছে এ ভোর মোরগে মোরগে
তবুও
এই মিছিল জনতায় সুখ নেই ---------
সায়ক ০৯
তোমাকে ছোঁয়ার এতো উচ্চাশা আগে তো ছিল না মনে ;
আমিও এখন অহরহ ভুল করি প্রত্যয়েও গ্রামের নাম
ক্রেডিট কার্ডের গুপ্ত অক্ষর গুলি ,
বুকে তুফান খেলে নিয়মিত একাকী নির্জনে
আমিও ছুঁয়ে দিই অজান্তেই তোমার করবী খোঁপাপদ্ম নাভিমূলে !
ভুল হয়ে যায় সকল কাজের কাজ দিনেও বা রাতে ,
চেতনার অন্তঃমূলে সুসংহত তবুও বিস্মৃতি প্রলাপ ,
এভাবেই অবাক হয়ে অপূর্ব বিস্মিত বিস্ময়ে হতবাক
চারিত্রিক উপপাদ্যে কাটাকুটি কোণ বিচ্যুতি ,
আজ প্রাকাশ্য রাজপথে নামিয়েছি সায়ককে হাজার মুখের ভীরে
খুঁজে নিতে , জীবনের সংবহন তন্ত্রে লেগে থাক আজ থেকে
বীথি সুন্দরীর রক্তের যোগ ;
একদিন অভুক্ত সেবার স্বাধীন অনন্ত বিলীনের নির্দেশে
সায়ক ১০
জানি ভূমিকম্পের আগেও কম্পন ছিল , গুপ্ত ভাবে ,
মানুষও না জেনে সেখানে ঘর বেঁধেছেন , উপনয়ণ সত্যনারায়ণ সিন্নি
বঁধু নির্যাতনের আসর বসেছিল , সেদিনও , মানুষ অনেকখানি
অন্ধত্বে নির্ভরশীল ; কিম্বা হোঁচট খাওয়া পাঁথর রঙ পেলে
সিঁদুর বেলপাতা যজ্ঞডুমুরের মাথা নেমে আসে অনিবার্য
আকর্ষণে ;
সায়ক আধুনিক , বুকে সমগ্র কুলীনতা ব্রম্মত্ব নবগুণের দড়ি
উপড়ে অযথা ঈশ্বরের হৈচৈ থেকে সাইলেন্স ভ্যালি খোঁজেন ,
পাঁজরে পাঁজর লাগা হাড়ের মানুষ গুলো বড্ড ছোট
কাছে এলেও চোখে পরেনা আমাদের ---
আর আমরাও অহরহ তাদের না চিনে লম্বা লম্বা মানুষকেই ভাই
ভেবে ফেলি !
স্বপ্ন গুলো চিরদিন সাম্রাজ্যবাদ , আমার পাপে তোমার পুণ্য ,
সেদিন যখন চাঁদ গেছে পরিকিয়া সোহাগের খোঁজে ---
সায়ক ডাইরির পাতা জুড়ে লিখে চলছেন "তোমরা পাপ করো না --
এই জীবনে পুণ্য থাক উহ্য " !
সায়ক ১১
ঘণ্টায় ঘণ্টায় স্মৃতি বিড়ম্বনা চোখ উল্টায় সেই নগ্ন মেয়ে
পান্থশালা এবার সুরিখানার মর্যাদায় প্রেম বিলায় গেরুয়া কাপড়ে ;
অদৃশ্য পতনে সম্মুখে ত্যাগ গহরজানে হয়েছে মাতাল অতীত
ঝলকে ঝলকে কল্কে আগুন ব্যোম ভোলে ব্যোম সাই রাম ;
সায়ক যৌবনের ল্যান্ডস্কোপ খুলে বসে তিওরে খোলা পঞ্চমী
আকাশের নিচে ; অদৃশ্য কাল পরিযায়ী মেঘে উড়ছে স্বদেশ ,
এক সময় প্রেম ছিল "শ্বেত পত্রের " খোলামোলা আবেগের
আলোড়নে , জন্ম পরিচয় বৈভব সব কিছু নয় জেনেই পাখি আসে
দানার খোঁজে --- তখন উড়বার স্বাদ থাকে না মনে !
জীবন গৃহ হয়ে উঠবে এবার -- ফিস ফিস গৃহস্ত কথা ভাসে বাতাসে --
শোনা যায় স্ট্যাটাসে হারিয়ে যাচ্ছে বর্তমান --
খোলা রবীন্দ্র রচনাবলী --- ফোটা ফোটা জল -- হয়ত সায়কের !
সায়ক ১২
সন্ধ্যা নেমে এলে লেনদেনের খাতাতে
বিয়োগ চিহ্ন , অষ্টাদশী চাঁদ এলে জানালায়
মস্তিষ্কে লাভা স্রোত , হাজার প্রশ্ন মুখ উঁচিয়ে
ঠেলে দেয় খাতের কিনারে !
আগুনের চারপাশে কারা ছিল সে সময় ,
কারা ভেঙ্গেছিল অস্তিত্বের বন্ধন , কারা মাঠের
আগাছা তুলে বীজের স্বপ্ন দিয়ে যায় মনে !
সায়ক সিগারেট ধরিয়েছে বোধহয় -- নির্ভেজাল
ধোঁয়া কতখানি প্রতিদ্বন্দ্বী অ-সুখের ?
এখন তুল্যমূল্য লড়াই নেই জীবনের সঙ্গে
জীবনের , তবুও পরীক্ষার খাতায় মেধাবী প্রশ্ন ,
প্রাচুর্য থাকে প্রশ্নের সঠিক উত্তরে !
সরে গ্যালে চেনা মুখের সারি পরে থাকে মুখোশ ,
মানব রঙ মেখে সঙ সেজে আস্ত বাস্তব ।
আল্লার দরবারে হাজার কৈফিয়েত জমে হ'লে
মহানবী বৃষ্টি নামিয়ে দেন !
সায়ক ১৩
আর আকাশ আহরণে সুখ নেই ,
মাস্তুলে লেগে আছে শিশু মুখ অন্বেষণের দিশা -
এই সাগরে এই অদৃশ্য জলে
পতপত উড়ছে নাবিক প্রজন্মের ইতিহাস !
তেমন কোন অতীত নেই
তেমন কোন ভবিষ্যৎ নেই , নেই শ্রুতিধর -যে গল্প
করবে একদিন ঝিমুনি এলে সায়কের
বুকের পর্দা জুড়ে ছায়াছবি , এগুলো দৃশ্য , আর
কাল পিঁপড়ের মত সুড়সুড়ি দেওয়া অনুভব
তাকে নাকি লোকে বলে প্রেম --
এভাবেই আছে কফিনে-কবরে কোদালে যৌবন
সামগ্রিক যৌনাচার আষাঢ়ে ভাদ্রে ;
সায়কের রক্ত-মাংস- জল ছিল শরীরে তাই দেবতা হয়নি --
অথচ
কাল্পনিক শরীর নিয়ে যারা রাজত্ব করে গেলেন তারা
ঈশ্বর নচেৎ শয়তান !
সায়ক ১৪
৪৬- ৪৭ দ্যাখেনি সায়ক , যন্ত্রণায়
কুঁকড়ে যাওয়া হাড়ের বেদনায় ছিল কি তার
পূর্বপুরুষ ! কিম্বা আসামান্য প্রতিভা নিয়ে
কলকাতা পায়ে ভাঙ্গে যে বিহারী রিক্সাওয়ালা
খৈনী দস্তা পানের পিকে এঁকে দিয়ে গেলে স্মৃতি চিহ্ন
প্রেয়সী হেসে ওঠেন অনবিল আনন্দে- সন্তানই তো
মা'কে কাঁদিয়েছেন দশমাস থেকে আমৃত্যু !
কলকাতা শহর চেনাজানা নয় অনেকের --কলকাতা
শহর চেনে না কেউ ! লাল নীল সবুজের আস্তারনে
লিকলিকে পেটমোটা দেহাতী ব্যবসায়ী অন্ধকার
প্রেয়সী ধান্দাবাজ ফকীর ফিকিরি হাতছাপায় আর
অনেক শরীরের মধ্যে সেও আছে ---
উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা যথেষ্ট দূর নয় , একটা মুখ
সামনে রেখে দিলেই ফুরফুরে হাওয়া ---
গড়ের মাঠ নিয়ে কিবা করা যাই --
রাত আসুক , এবার ঠোঁটের গল্প হবে শুরু ---
কলকাতার দুঃখ মিটিয়ে নেবে সায়ক পল্লীমঙ্গল আঁধারে !
সায়ক ১৫
তৃষ্ণা ভেঙ্গে গেছে গভীর প্ররোচনায় ;
আসমুদ্র হিমাচল ভৈরবী বিদ্যা'র জতুগৃহ ,
প্রেম তুলে দিলে নিত্তিতে একপেশি সমাজ ;
কেরোসিন লাইনে ভীর বাড়ে
আগুন পোকা আগুন ভালোবেসে হ্যারিকেনে
মুখস্ত করেন ক্যাপিটালিজম ! তখন
প্রেম বলে এন আর আই শরীরে আশ্চর্য সুগন্ধ
অনেক চটকেছি তোমার নেবু পাতা শরীর
প্রথমে নেশাছিল বেশ -- এখন তিক্ত গন্ধ !
আজন্ম বেড়ে উঠেছে গ্রামে সায়ক , ধুলো গাছ
পাখি-পাখালি এখনও সবুজ আছে প্রেমে ---
এখনো বেহিসাবী জ্যোৎস্না আসে দুঃখ সুখে আবেগে
গ্রামকে গ্রাম অরন্ধন তবু প্রেমের কথা বলে --
সায়ক ১৬
পাতারা মুছে দেয় সম্পর্ক বিশ্ব বিলীনের আগে ,
অকারতে আত্মকথা ছড়িয়ে বৃক্ষ পাখির ডানায়
মাখিয়ে শীতলতা আগামীর পাতার অন্দরে ছড়িয়ে
দেয় বর্তমানের রহস্য ! একদিন বিলীনের চরিত্র
সব , নাটুকে পেটুক ভুঁইফোঁড় ক্রীতদাস প্রবর্তিত
বিশ্বাসে সব লব্ধিত স্বর্ণ ভাণ্ডার অথচ এক বক্ষ
রোদন নিয়ে সর্বহারা হাহাকার !
মুছে যাবে যেদিন সম্পর্ক , বুনিয়াদী কৃষিভূমি খড়ের
গাদা বিচুলি কাটা যন্ত্রে অন্য হাত শ্মশান আগুনে
ধুপ ধোঁয়া আগুনের প্রলেপ আর আকাশে উড়তে
উড়তে বলবে - বটেক জীবন --
আমিও অষ্টম আশ্চর্য বস্তু ছিলাম !
সব রহস্যে বুঝে নিচ্ছে সায়ক আঁধারের গালিচায়
জীবনের ধর্মে মিশে গেছে বাস্তবের ওয়াইন নেশা !
পাঁচশত বছরের ভূমধ্যসাগরীয় শ্যাম্পেন কারিগর
বুঝেছিলেন এক দিন নেশা বাড়বে পৃথিবীতে !
সায়ক ১৭
সায়ক রহস্য পুরুষ ! ব্যাঙ্গাচির লেজ খসে
ব্যাঙ হবার অনুক্ষণ মনে রাখেনা জল ,
বালু ঘড়ির বালু নিয়মে ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিলীন
অপূর্ব পারদর্শীতায় , তখন রাত গড়িয়ে এসে
দাড়ায় দিনের ভ্রান্ত কাল ; যুগান্তকারি প্রতিভা
বস্তিতে বস্তিতে ডাঙগুলি মার্বেল গুলিতে হাত
পাকালে সংবিধান থেকে মুছে যাই দারিদ্র্যর
সংজ্ঞা , এদিকে পিটুইটারি গ্রন্থি বোঝে না
সংবিধান নিয়ম কানুন , ক্ষরণ হলেই ছিনে জোঁকের
মত পিছু লেগে থাকে গার্লস স্কুলের গেটের বাইরে ,
প্রেম কে নিয়ন্ত্রণের ভূমিকার রয়েছে শারীরিক
সুস্থতা আর চোখের লাবণ্য প্রভা , গভীর অবচেতন
ইচ্ছাশক্তির বিরুদ্ধে পরাজিত সৈনিক মানবিক
সুস্থতার জন্য বুকের উষ্ণতা খুঁজতে গেলে - সায়ক
এর ঘুম ভেঙ্গে যাই --
দেখে বাস্তবের উপর শুয়ে আছে , প্রেম অনেক
জটিলক্রিয়া , অনেক স্তম্ভ তার বিরুদ্ধে , ভাঙ্গা সহজ নয় !
সায়ক ১৮
সায়ক,কোটি কোটি নক্ষত্র রাত্রি মুছে গেছে
লক্ষ লক্ষ উপসনা গৃহ বানের জলে
হাত বদলে ইতিহাস !
হৃদয় হৃদয়ের উত্তাপে সেঁকে নিয়ে মন
অগুন্তি জকি দৌড়ে গেল
পাশা উল্টে রাজা মাহারাজ
ভিখারি , শকুন ভাগাড় অন্বেষণে ,
রাতের প্রলাপে শরীরের প্রস্থান ---
সায়ক , দশ লক্ষ বছরের এই শরীর
চাঁদের গুপ্ত আঁধারে আমাদের জন্ম
সূর্যের থেকেও ঢের উষ্ণতার পেছনে ছুটছি
গোপনতায় ;
রাতের আকাশ গঙ্গা নিভে গেলে এক বিশ্ব নিঃস্ব
তবু সীমানা পেরুতে চাই
নারীর অহংকার ভেঙ্গে
সায়ক ১৯
একপেশি উড়ন্ত চাঁদ আমাকে নির্বান্ধব করো --
বর্ণান্ধ হতে শিখেছে সায়ক ।
সমগ্র একাকীত্বের গরিমা ভেদক ওরে গৃহস্ত
জ্যোৎস্না আয় আয় আজ টালমাটাল হই মহুয়া বনে
রাজ হাঁস পালকে
উড়ে গেলে নায়িকার আঁচল
সায়ককে হাঁড়িয়া দাও ; দাও বন মধু ; অথচ
তিন রাত্তির নির্জলা উপবাস ভেঙ্গে
মদে মদে মাদলে মাদলে মাতাল বলবে
আমাকে উড়াবি তুই প্রেম --
তোর সেই ডানা কই ?
একদিন প্রেম শূন্য সেই সাঁওতাল রমণীর মাটির কাল
ভাতের হাঁড়ির মত , তবুও মাছি আসে ভাতের হাঁড়ির
দিকে রোজকার নিয়মে ;
শূন্যস্থান পূরণের জটিল খেলা চলছে এখনো !
সায়ক ২০
শব্দ বৈচিত্রে সেই উদ্দীপনা নেই ,
ভাবলেশহীন মন , আক্ষেপে তবুও কিছু
মধ্যরাতের উপাখ্যান মন খারাপ গন্ধ !
অনন্তবার মধ্যরাতের কোমল গন্ধ্যায়
খোলা চুল ময় লিপস্টিকের বনেদী ঐতিহ্যে
এলো কেশে ঘুণখোর বিছানায় আরক্ত চোখের
ইতিহাসে এক দুই আউন্স লবণ ফেলে দিলে
এবার বিস্বাদ !
আত্মবিশ্বাস তো কিছু নিজস্ব আত্মধ্বনি অসময়ের ,
চক্রাকারে এই ঋতুর প্রবর্তন , অভিযোগ
জমা হলে নিজস্ব খাঁচার অন্তঃপুরে, সম্মুখের
দৃশ্য বলে না কথা গভীর দৃশ্যপটের !
সায়ক ও চিনেছে জল স্থল আকাশের দুর্বার
সঙ্কেত ; ক্ষয়ে ক্ষয়ে ভেসে ওঠার খেলা সোজা
নয় জেনেই খড়- কুটো আকরে ধরে কবিতা
লেখে , এই সব গৃহস্ত কবিতায় ডুবে গেলে কবির
ঝুলা -- সায়কের কবিতাও রূপ নেয় বর্শা ফলকে
সায়ক ২১
পাঞ্জা লড়ে একদিন পরাজিত হয়েছি প্রেমের কাছে ;
আর ইতস্তত ঘুরে ফিরে সেই মাছরাঙার মত
সেই এক আকাশ স্বপ্ন সন্ধানে ,ক্ষুধায় , পরপারের
সূর্য থেকে এভাবেই মশকের জন্ম , রক্ত নেশা -
বাঁচার আলোড়নে সব সত্ত্বা খেয়ে , আহাঃ তৃপ্তির
ঢেঁকুর ! আমাদের মুখের ভেতর মনের ভেতর
প'চা খাদ্য প'চা অনুভব যে ইতিহাস সৃষ্টি করে --
তারা গাঢ় স্বরে অথবা সুতীব্র ইশারায়
বলে ফিরে যা
সমস্ত অঙ্গুলিহেলনে বিব্রত থেকে সায়ক অনুমেয়
উষ্ণতায় কাঙ্ক্ষিত সূর্য বন্ধনায় ;
একদিন জ্বলে পিপাসারাও স্বাধীন , সেবার ভয়ও
ফিরে যাবে পলাতক সেনানীর মত চুপিচুপি
No comments:
Post a Comment