Thursday, 21 June 2012

কিছুমিছু ৮



অনুঘটক

তারপর অনেক বৃষ্টি হল
শ্রাবণ লিখে রেখে গেল লাল মাটিতে প্রেমিকের নাম
আমিও ছানি চোখে লাল আবর্তে
পদ চিহ্ন খোঁজার কাজে লেগে যাই !
আমার কোন অতীত ছিল না , না ছিল মনে হোগলার বন
সুন্দরী বৃক্ষের মায়া রাক্ষুসি বিঘা বিঘা রঞ্জিত ধান
প্রিয় পুরুষের ঘরদোর ----

তবুও , এখনও সময়ে অসময়ে বৃষ্টি এসে যাই ডাক দিয়ে
এখনও কোষ স্ফীত হয়ে বৃষ্টি অনুরাগে
গা ধুয়ে নিই
ঠাওর করা সেই মাতাল গন্ধ বাতাসে মেশে
শেষমেশ শেয়ালের ডাক
এখনও আগাছা তুলে নিলে এই পরন্ত বিকালে
তিন ফসলী ধানী জমি

কত জন্মের এই শরীর
কত জন্মের একাকীত্ব ; বিছানা জুড়ে সেই ঘাম নিজস্ব
অনুভুতিক গন্ধ
এখনও বৃষ্টিতেও ঘেমে যাওয়ার অনুঘটক ।







লম্বা মেয়ে

দুনের পাইন গাছটি থেকেও লম্বা হয়ে উঠেছে মেয়েটি
বিজলী খাম্বা থেকেও অনেক বেশি আগুন বইছে
খাড়া প্রপাত থেকে পরছে যে জল তার থেকেও অনেক শক্তিশালী
আর বিছানায় কচি আঙ্গুলে খেলছে যে ঈশ্বর
যে সে আমাকে ব্যাঙ্গ করে বলছে আমাকে জন্ম দিয়েছে ঈশ্বরী !

অথচ এতখানি কি সহজ ছিল সেই ইতিহাস ?
কাপর কাঁচতে কাঁচতে এঁটো বাসনের ডিব্বায়
সবার শেষে উচ্ছিষ্টে আধ পেটায় ছোট ভাই কে খাওয়ানো
দুধের বোতলে হ্যারিকেনের আগুন ভেঙ্গে আগুনের চাষ ---

সেই পথ জুড়ে শুধু তীক্ষ্ণ চোখের ঈশারা ভীর বাসের অস্বস্তি
মধু পিপাসী মৌ মাছি ---
অশুভ ইঙ্গিত বন্ধুত্বের নামে শারীরিক সান্নিধ্যে ----

মেয়েটি লম্বা হয়ে যাচ্ছে আরো , আর তোমার এক মনস্তাত্ত্বিক আক্ষেপ














যুদ্ধ

অনেক কিছু হারানোর ছিল ,
তোমার মুখ মৃগ কস্তূরীনাভ গন্ধ
খোলা চুলের গহন আমন্ত্রণ
নাভির অনুমত্যানুসারে রাত ।

আমিও সর্বশেষ ট্র্যাজিক চরিত্র
হাত তুললেই আঙ্গুলের ফাঁক গলে
সরেছে দুরন্ত সময় শরীরী বিদ্যা যত
অলঙ্কৃত অহংকার পৃথিবী !

অদ্ভুত দৃষ্টিতে সৃষ্টি দিকভ্রম নাবিকের কম্পাস
রাশি কৃত ঢেউ কূলের প্রতিদ্বন্দ্বী
নাবিকেরও কোথাও গোছানো সংসার ছিল
উষ্ণতায় ফিরবার ইচ্ছা ।

এঁকে গেছেন সুদক্ষ কারিগর জীবনের রঙে মনের প্রচ্ছদ
হাত তুলে দিলেই আত্মসমর্পণ কলা যুদ্ধে প্রেমে ;
যুদ্ধে শরীরে শরীরে যত বেশী বুকের বা' পাশে ঢের বেশি
কাঙ্গাল হতে গেলে একটা যুদ্ধই অনেকখানি !







প্রজন্ম ধরে

এখনও সঙ্কল্পে লেখা থাকে তোমার মুখ
পরজীবী হলে গেলেও এই আত্মা ;
আর গভীর অ-সুখ
নিত্য চাঁদ কলা ভেঙ্গে ভেঙ্গে ছড়িয়ে দিই
বিছানায় , অনবিল আনন্দে
আমিও উপাসক
প্রেম অপ্রেম জীবনের !

সমগ্র মন্থন খেলা জুড়ে
রোমকূপের অসহ্য তারুণ্য
বিগত ছায়া থেকে উঠে আসে কুণ্ডলী
পাকিয়ে ধোঁয়া
সেই ধোঁয়াশা জগত
ভীর করে অনাকাঙ্ক্ষিত শরীরী প্রভা , আমিও

এবার হারিয়ে দিই আমার অস্তিত্ব
নিস্তেজ হয়ে এলে পৃথিবী কোলাহল
সম্মুখে আবৃত ভবিষ্যৎ

আমিও চলে গেলে স্বস্থানে পৃথিবী গ্লোব --
তার রহস্য নিয়ে মজেছেন দ্বিতীয় প্রজন্ম







নিয়মের কথা

শূন্য হাড়ি থেকে উড়ছে জলীয় বাষ্প
আগুন বোঝেনা চালহীন হাড়ির ধর্ম !

একদিন এই মাঠের অধিকারে নাম লেখাছিল শ্রমের
আমার শরীর আমার খাদ্য !
কোদালের মাথায় জন্ম নিয়েছিল ভূমির অধিকার
ভূমিপুত্র আমি আমার ভূমির নেই আমার অধিকার !

বাতাসে বাতাসে একদিন বিষ এলো পরিযায়ী পাখির মত
এলো সংঘবদ্ধ হায়নার দল
বারুদের স্তুপে মুছে গেল আমার জন্মভূমি
নিজ ভূমিতে পরবাসী আমার সন্তান !

আগুন জ্বালো , আগুন জ্বালো ,
পুড়ে গেলে যাক সব দানব মাথা ,
খাক হয়ে যাক লোভের সিংহাসন
সাম্য পৃথিবী সাম্যতেই পেয়েছি এই জীবন !











বিদ্রোহী

সীমান্ত ভাঙলে থরে থরে পরিপাট লাশ ---
নিরুচ্চারিত শব্দে মহাধিরাজ বোরের প্রস্তুতিতে --

অম্লাম বদন মুখোশের প্রতিচ্ছবি
গহন ভাঙো , অভিমানী মন ---
থিক থিক জল আর রক্তের সংবহন --

প্রতিদিন একটা বিপ্লবীর জন্ম হয়
রক্ত ক্লেদ হতে উড়ে গেলে মাছি









একদিন নিঃস্ব যেদিন
কবিকুলে নেই যে আমি ---
অমর হয়ে যাবে তোমাদের লেখা
আমি তো এসব চাইনি







অষ্টমঙ্গলা

আমিও সন্ধ্যা হই তুলসী মণ্ডপে ঝোরে পরে
নিয়তির অশ্রুধারা শ্মশান পাড়া নিস্তব্ধতা ঘৃণা
করে , জন্মের বিচিত্রিতায় একদিন পাখি এসে
বৃন্দ গানে ভাসিয়ে হৃদ বলে না চললাম ,
উড়ে গেলে পাখি তেপান্তরের মাঠে রাতের আলেয়া
হাড়ি মুখ চেয়ে হেমন্তের ধান রাতের নিঃস্বতায়
বলে মনে মনে ফিরে এসো কৃষক আমার !

জানানোর কথা ছিল জন্মে আর এভাবে জাম্লামারি
বিল পেরিয়ে ছুটছে ঈশ্বর সন্তান , কথাছিল একদিন
এখানেই নবান্ন রান্নার রহস্য শিখবেন স্বয়ং তিনি
বৈদিক মন্ত্রে উঠে আসবে কিষাণী বঁধুর মুগ্ধতা !

ভাবিনি কোনদিন এভাবে সীমান্ত পেরুবেন সৈনিক
ফেলে রেখে অষ্টমঙ্গলার যাবতীয় উপাচার !











এক সত্য

এক সত্য ব্রহ্মা সত্য ঠোঁটের তৃষিত অঙ্গার
উপেক্ষিত মনুসংহিতায় জৈবিক ধ্রুবক ক্ষরণ
আর সক্রোধে হেটে চলা শরীরী পোকা নিষিদ্ধতার
আবেদন , বারোমাস্যে ধান বুনে স্বাদ নেই , প্রগাঢ়
আত্ম সমালোচনাতেও আসক্তিহীন দেবী মুখমণ্ডল
দর্শন নয় ধর্ষিত বুকেই আমার সমাজ !

অনেকখানি পয়মন্ত শরীরের আভরণহীন বিভা নচেৎ
কোন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে বুক কাঁপেনি সৈনিকের ! মৃত্যু
নয় সবখানি , তখনও জেগে থেকে শরীরের ভাঁজ
রক্ত মাংসের এক নিটোল গন্ধ !

এক সর্ব জ্ঞ্যানী ছিলেন নিরাকার অস্তিত্বে প্রাচীনতায়
এক হৃদ গোপনতায় ;
এবং চরিত্র হনন হয় রোজ রাতে সর্বগ্রাসী এক
শরীরের আমন্ত্রণে !









প্রেম যদি থাকে এ প্রাণে

আমার কিচ্ছু বলার ছিল না !

জানি না দেখেছি কিনা কোন অভ্রান্ত সুন্দরের ছবি
যে প্রেম চেনাবে , শেখাবে বাঁচার মানে ,
সকলের থেকে এই দূরের মানুষটা অর্ধমৃত , তবু
কিছু অনুরাগ অভিমান চোখে জ্বলছে
বার বার সতর্ক করে দিয়েছেন জীবন রেফারী
হয়তো এখনি ম্যাচিং অর্ডার পাবো !
জীবনের প্রবঞ্চনা প্রেম , দেখেছি
সামনের প্রেম সব সময় সত্যি নই , তাই
এই অন্ধত্বের দেহ কৃপণ থেকে কৃপণ হয়েছে আর
শুদ্ধ করে নেওয়া যাবে না তোমার কাছে ?
কই, কেউ পেরেছিলেন কি ?
আজীবন দেখে গেলাম
মানুষ ভীষণ পরিতৃপ্ত প্রেমে ; এর
ফাকেই
কোন অবকাশে ছিঁড়ে গেছে ভেতরের যোগসূত্র নাড়ি
হনুমানের নাড়িতে মানুষের রক্ত
আমিও গলা ফাটিয়ে জানিয়ে দিতে চেয়েছি
আমি আসতে চাই তোমার কাছে

দেবতাদের ক্ষুদার্থ মুখ কোন চিত্রকর আঁকেন নিই ?
কঙ্কালের হাড় গোনা হয় প্রতিরাতে ,
এরা এককালে নাকি দু'পেয়ি ছিল ----
সব অভিমান রেখে যাচ্ছি কাল পাণ্ডুলিপিতে অন্ধকার ঘরে ;
সব ভুল ! হয়ত আমার নিজস্ব , মনগড়া ,
আপনারা শুনুন
একবিংশ শতকের প্রথম অধ্যায় ছিল ধুসর প্রেমের
কিন্তু উত্তর প্রজন্ম , তোমরাই পারো
মিরা প্রেমে ভাসতে
প্রেম যদি থাকে এ প্রাণে









ফজর

অবিশ্রান্ত বৃষ্টি , সারারাত বন্যতা , তাঁরা মিলিয়ে
গেলে অন্য হৃদয়ে,টিনের চালে টুপটুপ নিঃসীম
দমকা হাওয়ার অভিঘাতে ;
চোখে চোখে লেখাছিল কিছু নাম আজ হারিয়ে ফেলেছি
বৃষ্টি রাত আর বজ্রের সহবস্থানে ,
রোজ গীতা মুখস্ত করেছিলাম নামতা ভেবে ছন্দ মনে আছে
সুর মনে আছে ভুলে গিয়ে সার
এই রাতে আমি আঁচল খুঁজি
শরীরের নব্যতায় খুঁজি শরীরের দাম্ভিক ঢেউ ---

দূরে কোথাও তামাম বৃষ্টির আক্রমণ উপেক্ষা করে ফজরের ধ্বনি
এক সুর আছে তাল আছে , আমি বুঝিনা মানে
তবুও ভাবি থাক আর কিছুক্ষণ
এই বৃষ্টি বৃষ্টি গন্ধ তো জীবনের ছায়াকল্প
অথবা বিকৃত অঙ্গচালনার অভিলাষে ,

এই মৌনতা থেকে দ্বিতীয় মৌনতায় যেতে পারলে ঈশ্বরের
প্রতিনিধি ; বৃষ্টি বৃষ্টি অনুভব উদাও হয়ে
জাগতিক শূন্যতা ----
প্রেম নয় , নয় স্বপ্ন , নয় গৃহ ,
এক আদর্শ আদিমতা , গুহা মানব ,
অতিরিক্ত মেধ ঝরলে বুঝে যাই একদিন মানুষ ছিলাম









রেজাল্ট
( প্রতিটি জীবন মূল্যবান , দোহায় , আর যায় করো মৃত্যুর কিনারে দাড়িও না , )

বুঝি এখন আকাশ ফর্শা হলে
পৃথিবীও হাত ধুয়ে নেই পাপ হতে
নপুংসক কামনার অন্তরালে দিন আসে
এসে মিশে যাই মনে এক বিপন্ন ভবিষ্যৎ !

হোমটাস্ক খাতায় জ্বলন্ত সূর্য আঁকা এক খানা
মোম হয়ে গেলে আমিও নিঃস্ব
বাবা বিন তুঘলকের মনস্তাত্ত্বিক পড়তে বলেননি
কিম্বা চর্যাপদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব
বলেছিলেন মুখস্ত কর
বই গুলে খেতে পারলে
পৃথিবী চুষতে কি বা আর দেরী !

যখন বুঝি কলেজে কলেজে ভর্তির লম্বা লাইনে আমি নেই
মা শোকাতুর চিত্রঙ্গাদা বাবা হাফানির রুগী হয়েছেন

তখন
বিশ্বাস করুন রশি খুঁজতে দেরী হয়নি ---













ভাত

এভাবে লিখে গেল কারা আগুনের ধারাপাতে ফসলের
ঘ্রাণ , আর ভেজা শ্মশান কাঠে রমণীয় জীবন , রমণ
ঘুড়ি গোত খাই কার ? অতীতের প্রচ্ছদ ঘোষে বর্তমানেও অনাহুত
খাল পাড় শ্যাপলা সেবন যাপন আমাদের , মেঘ সরে যায়
বৃষ্টি উপত্যকায় , আমাদের নয় , ভস্ম

এখানেই উপদ্রুত অঞ্চল অসীম জ্ঞ্যানের নিষিদ্ধতায়
বেহিসাবি জন্ম , পিটুইরারি খসে গেলে এক রাতে তুমিও
নবাব সিরাজ

এভাবেই লেখা আমাদের গ্রাম নাগড়া ধানের মুড়ি পিঠেপুলি
পৌষের হিম রাত শ্বাপদ দীর্ঘশ্বাস , এবার

আগুন নিয়ে গেলে হ্যারিকেনে কৌটিল্য'র রাজনীতি
মাটির হাড়ি আগুন জলে ভাত হয় না ---







মৃত্যুতে ভয় পেলেই দেখেছি
বাঁচার ইচ্ছা তীব্র হয় ;
যারা মৃত্যুতে অমর হয়েছিলেন , তারা
আমার মনে রেখে গেছে তার বাঁচার ইচ্ছাটা ---

দূর তারা দেখছেন আর বলছেন , কাপুরুষ একটা









এখন সম্পর্ক গুলো বন্ধু হয় না --
রংচঙে বিভিন্ন ফেস্টুন বুকে তুললেই
ভাইও আমার গণশত্রু ---
কিছু রঙ্গিন মুখ রেখে মাঝখানে --
ডুয়েল প্রতিদ্বন্দ্বী







শিকারিরাও মুগ্ধ
কম্পিত হৃদপিণ্ড দেখে
মরেও মরে না শরীর মায়া মায়া মায়া
শিকারিরাও শিকার হলে
সেই মায়া মায়া মায়া ---
আমাদের !





আমার কোন মৃত্যু নেই অথচ মৃত্যুও নয় অমর ;
বাসকাঁঠি ধানে আমাদের পরাগ মিলন
মাথালি গুলোর নিচে মৃত্যু উপরে জন্ম






ঈশ্বর বিশ্বাসী

গণিকা তিল চন্দন যজ্ঞডুমুর ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন --
আমিও -----

ঈশ্বরও তিল চন্দন যজ্ঞডুমুর গণিকাকে বিশ্বাস করেন
আমাকেও --

এবার নেমেগেছে একটু নিচের দিকে সপ্তসিমণ্ডল
নিঃশব্দে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে তপ্ততা
পাঠ্যপুস্তক হতে হা চোখে বৎসান্যায়
রাতি দ্বিপ্রহর ০১ টা \\ ০৪ গত \ ৩৭ শুভক্ষণ
গঙ্গাজলের ভাঁড় শূন্য ঝড়ের প্রতীক্ষায়
রজনীগন্ধা সু-সুবাসি মোলায়ম শ্বেতপদ্ম বিছানা
জলে নিঙরে শরীর লাবণ্যপ্রভা , দেরী কেন ?
না , না , নমস্কারের দরকার কি এই বেলা -- পা
লেগেছে লাগুক না --
সাতখুন মাফ এই রাতে ----
প্রিয়ে , শুভক্ষণ দেব পক্ষ বৃহস্পতি তুঙ্গে
ঈশ্বর নামতে কতক্ষণ !

এক ঈশ্বরের জন্ম !

তখন গণিকা গৃহ মুখে এক ঈশ্বর ---পথেই মৃত্যু ,

এর পর থেকে ঈশ্বর বিশ্বাস করেননা গণিকা --
আমি বিশ্বাস করি --
 ·  ·  · June 3 at 8:07pm · 






অচেনা মানুষ

নিজেই নিজের শান্তনা বড় দুর্দিনে ,
আমি নিজের বুকে যখন বুক রাখি ভুলে যায় বাস্তবিক
দুঃখ কলা ,হৃদয়ের ওম পেয়ে গেলে
অনেকটা শীতলতা মাড়িয়ে হাটা যায় নির্দ্বিধায় !

তারপর ব্ল্যাক কফি মুখে দিয়ে
নক্ষত্র শিকারি'রা দখল নিলে আকাশ , রোজনামচা নিয়ে
আমিও দাড়ায় অনন্তের সীমানায় ;
সাতশো স্কয়ার ফুটের আধুনিক স্বর্গে অভাব নেই কোন অভাবের
নিয়ম করে গা ধুয়ে নিই
প্যারিস সুগন্ধে ময় ময় বার্থরুম
দুর্গন্ধ ঢেকে পেট ফোলা কুমীর কোম্পানি
এবার মনের দুর্গন্ধ ঢাকার পরীক্ষানিরীক্ষায় !

বারোমাস্যে অভাবনীয় উষ্ণায়ণ ---
শিরদাঁড়া বেয়ে ঘামে ভেঁজে সফেদ বেডকভার
কি যেন হারিয়ে গেছে ---
ব্লাকবেরি'তে এতো ছোট পৃথিবী
ছোট হচ্ছে মানুষ , চেনা দায় ----







একদিন প্রতিদিন

উন্মত্ত হৃদ বলেছিল ভালোবাসি
শব্দ বিভ্রামে কেউ শুনেছিলো কেউ শোনেনি ,
আমি দ্বিতীয় বার গলা ফাটিয়ে চিৎকার করলাম যখন
ভালোবাসি , দেখি শব্দরা ফিরছে নিজের কানে ,
বুঝলাম নিবদ্ধ হয়ে আছি নিজের ঘরে !

এখন আর গলা ফাটানোর দরকার হয় না ;
এক টুকরো আঁধার এসে দাঁড়ালে মনে
১০ বাই ১০ ঘরে হাজার ওয়াটের বাতি জ্বলে
সিংহ রাও মিনমিনে গলায় গল্প করে পুরনো প্রেমিকার
নিস্তেজ অনুভূতির
খাবলে খাবলে জিভ দিয়ে চেটে মায়া বাড়িয়ে বলে
আমি তোমাকে ভালোবাসি ---
আজ এই শব্দটা ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ---
আমি হাতড়ে হাতড়েও ধরতে পারছিনা

জানেন ,
আমি গঙ্গা হতে চাইনি ,
না ইচ্ছা ছিল সমাজ সেবার ,
একদিন
আমাদের অবহেলাতেই বোধহয় ---
গঙ্গা পতিত পাবনী হয়ে উঠে







কবিতার জন্ম

কবিতায় , অজ্ঞনতায় হেটে চলা এক মুখ
পিশাসসিদ্ধ হয়ে গেলে ভালোবাসায় ; কথা
খুঁজতে গিয়ে ভাষার উৎপত্তিতে খাজুরহ কলা বিন্যাস
অবিন্যস্ত শরীরী খাঁজে রসকেলি করে ফিরেছে যে সময়
আমিও তখন পঞ্চদর্শী
আর ইতর ইঁদুর সরু দাঁতে কেটে নিয়ে সোনালী ফসল
এখন কুলোতে উড়ছে চিটে - ধান

জ্বালাময়ী অঙ্গ আভরণে প্রেমের অনিবার্য ভ্রুকুটি
পদচ্যুত গৈরিক স্বপ্ন বিলাসিতা ; অথচ পরে থাকে
বিকালের ঘ্রাণ ---
আমি শব্দকীট বসানোর কাজ খুঁজি !







রাত্রি -- নীরস বোর র‍্যাদার ফর্দ এবং অনেকে ---
বিজ্ঞান ও কবিতা হয়ে ওঠে কখনো কখনো

ভগ্নশয্যা , পাদদেশে গলিত অভিমান ; অংক
কষছেন স্রস্টা - অংক কষছেন স্রস্টা'র শ্রেষ্ঠ সন্তান,
চোখে চোখে তিমিরতা পশ্চাৎে গ্রিন হাউসের
ধোঁয়াশা জগৎ - এদিক ওদিক জন্ম পচা ঘা
রাতের কাব্যিক পেশাদার সম্ভোগ এবং ইতস্তত
অবিশ্বাস - স্বর্গারোহণের রণ বাদ্য ! এবার সুচারু
হবে মগজাস্ত্র - সব ইহুদী ক্যাম্প যেন বাংলার
মধ্যযুগীয় "অন্ধকুপ হত্যা " নাম নিয়ে বলে যায়
শুধুই অংক কষো , আর নির্মম আত্ম সমালোচনা
করে নিয়ে এসো মৃত্যু উপত্যকা

আর ঘন সন্নিভুত হয়ে এলে নিষাদের রাত্রি
ম্যানহাটনের উপর শকুনের সংসার
এরাও পরিযায়ী প্রতীক্ষায় স্বাদু ভাগাড়ের
পূবের অথবা পশ্চিমের ----

এখনো তাদের উত্তরপুরুষ -- অনবিল অনন্দে
ভুলে গিয়ে জীবনের ইতিহাস
জ্ঞ্যানী প্রজ্ঞ্যান নোবেল লরিয়েট ,
এদিকে নধরকান্তি ভেড়াও প্রস্তুত
শকুন অপেক্ষায় ----
দাড়া আর দুই মুহূর্ত , খেয়ে নিস জন্ম , শকুন ,
একবার উদ্বোধন হয়ে গেলে ধ্বংস বীজ
নোবেল পেক্ষাগৃহে ----
তুমি খুঁজো না ----
ওখানে পাবে না একটাও ঈশ্বর ...........................











চোখ

মুহূর্ত চলে গেল আর একবার ---
সৌন্দর্যের চোখ দিয়ে দেখি মেঘের পেছনে আলোর মেলা
সন্ধানী আবিল দৃষ্টিতে ধরা যায় পায়রার ঠোঁটে
প্রিয়ার খাবার , কত মনোরম ।
পৃথিবীর বুকে অভিরাম ধানের গুচ্ছ আর
গম ক্ষেত দোলায় মাথা , সক্রোধে ইঁদুরের ছুটোছুটি
মাঠকে মাঠ চেয়ে থাকেন সবুজ রাজা
রাতভোর বিকেল অবধি ; আর এখানে
কোন এক জ্যোৎস্না রাতে চাঁদ হোলি খেলে মাঠের সাথে
শ্যাওলা কাঁদা পুকুরে রাজহংসের পালক
সূর্য আলোয় রামধনু সাঁজে
একদিন পৃথিবী স্বপ্নের আবেশে মাথা
নেমে আসে সন্তানের বুকের ভেতর - অকৃত্রিম স্নেহ রসে !

দেখেছি তো সরে গেছে কত যুগ , কত মা চোখের
জলে সন্তানেরে ছেড়েছে
ঝরে গেছে শিউলি পাপড়ি কেটে গেছে
কত মিথ্যার রাত ,
অনেক গভীর ক্ষত আমাদের কষ্ট দিয়ে গেছে
বর্তমানে অতীতে ,
মিথ্যা অহংকার জঞ্জাল সংস্কার পোয়াতি মায়ের
পোসব যন্ত্রণা সব মিছে ? মিছে নয়
নক্ষত্রের আলো দেখানো পথ , ক্রোশ ক্রোশ
দূরের পরিযায়ী পাখি
তেল ডলারের সে সব ভণ্ড শেখদের মরুপেটে
বাজ নিয়ে হুবাট শিকার
কোন আলোর গল্প নয় , নয় এগোনোর গল্প !

যদি গভীর ঘুম আসে দু'চোখ জুড়ে --
ভাদ্রে শিমূলের দেহ থেকে ক্ষণিকের ঝড়ে
খসে পরে শান্তি নিশান , আর যমের দুয়ার হতে
বোন নিয়ে আসে ভাই এর বাঁচার অধিকার --
তবে আমি কেন যাবো ?
কোথায় দেখেছি যেন সূর্যের নব নব সংস্কার , নদীর
স্বচ্ছতায় আগুনের দু'পাশ জুড়ে সত্যর নিবিড় বন্ধন !
তাইএবার থেকে
প্রকাশের মধ্যে র'বে না কোন অন্তর বেদনা
সৃষ্টির মধ্যে ধ্বংসের বীজ ---









ষোলকলা চাঁদ

একা একা খেলে গেছে সে সমস্ত ষোলকলা চাঁদ
মুগ্ধতার আবেশে শয্যার প্রচ্ছদে থিক থিক জল
তখন দেখিনি --
তবে কি সুখের পরেও অলকানন্দা প্রবাহ ঘটে যায় জমিনে ?
লুটেরার চেতনায় অঢেল নিজস্ব সম্পদের নেশা
চুরি হয়ে গেলে মায়ের সম্পদ
চোর খোঁজে না , দ্বিতীয় মাকে তুলে এনে --

রোদ নেমে গেলে অন্ধকারের প্রস্তুতি ,
বিকৃত হবে এবার শরীরে শরীরে ফুটপাত ,
একটা শকুন থেকে আর একটা শকুনের জন্ম
জন্মদাত্রী ধর্ষিতা ধর্ষক সেই ষোলকলা চাঁদ !











প্রধান পুরুষ ২০

চমৎকার আত্মসংযম শিখে নিয়েছি তিতিক্ষায় !
বৈভবে বন্ধ হয়ে যায় যে সব কোমলতা মাটি মাতি গন্ধ
রেটিনায় দূষিত দৃষ্টি সেখানেই স্বপ্ন ছিল একদিন ;
অবাক হতে গ্যালে অনেক গুলো অবাক লাগে না
একাটাই শিকার দৃশ্য অনেকখানি , শিকার হয়ে গেলে
একবার শিকারির চোখে তাকাও -- দ্যাখো দু'টাকা
দামের ফটো ঈশ্বর নয় কিম্বা তোমার পিতাও নন ইনি
বিরুদ্ধ পক্ষ শত্রু শিবিরের , হন্তক !
চমৎকার ভাবে খেলে গেলে অফ সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
যতবার ভেবেছি সতর্ক রেফারী তোমাকে ম্যাচিং অর্ডার
ধরিয়ে দেবেন নির্দ্বিধায় --- আর আমি চিৎকার করে বলবো
ওটা গোল নয় ----

প্রধান পুরুষ , আমিও যদি শিখে যেতাম ফাঁকি দেওয়ার রহস্য ?
শরীর ছড়িয়ে দিয়ে শরীরে শরীরে মননে সাম্রাজ্যবাদ ---
পথসভা করতে তুমি করো , আমি তখন পশ্চিম রাজতন্ত্র !







স্বাধীনতা

আর যায় করো মৃত্যুর কিনারায় দাড়িয়ে থেকো না ।
শোকে রাগে অভিমানে - নিজেকে ঝড়ে পরিনত করো না কখনো ,
মরুভূমির মত হইও না কোনদিন
আর যায় করো নিজেকে তৈরি রেখো প্রতিঘাতের !
অমাবস্যার ভেতর যদি আর অমাবস্যা জেগে থাকে
দিনের মধ্যে চাপা অন্ধকার
ভালবাসার মাঝে হিংসা
মৃত্যুর পরে মৃত্যু সেও যদি থাকে কোথাও
তারে ফিরিয়ে এনো না দুয়ারে ।
ঘুমিয়ে রয়েছে যে নিস্পাপ দেহ নিয়ে
তাকে পাহারা দিও
শেয়াল কুকুরের হাত থেকে ( তবুও সে জেনে যাবে না
তার জন্য কেউ জেগে ছিল সারারাত ) যদি
প্রেমের মাঝে কিছু প্রেম আসে
তারে মিথ্যা মনে করে ফিরিয়ে দিও ন ----- তারপর ?
প্রয়োজনে বদলে যাক জীবনের মানে
শুধু বাঁচার সুস্থ স্বাধীনতা রেখে যাও
সন্তানের মাথার উপর !




































































No comments:

Post a Comment