Friday, 22 June 2012

কিছুমিছু ১৩



ইট চিমনীতে উড়ছে ব্যথার ইতিকথা
পিতৃ হাড়ে বসত ঘর
শত মৃত্যু অজানা
খোঁজে না ইতিহাস !









প্রিয়

ইচ্ছা করে প্রত্যেকটা ভাঙাচোরা মুখে লেগে থাকুক চুম্বন স্পর্শ ,
ইচ্ছা করে ক্ষয়ে যাবার আগের চরিত্রে থাকবে না একটাও ম্লান হাসি ,
ইচ্ছা করে উবুড় করে দাও হাত ঝোরে পরুক সমস্ত প্রেম ,
ইচ্ছা করে রুটি গুলোতে মাখন মাখিয়ে সমস্ত অনাহারী ঘরে পাঠাই উপঢৌকন !

বাঁচার জন্য এতবার ঘুমিয়েছি আমি , আমরা
মরার জন্য এতোখানি নিচে নেমেছি আমি , আমরা
জীবনের জন্য খুঁজেছি শরীরী প্রেম আমি , আমরা
অথচ একবারও বলিনি তোমরা কেমন আছো !

এই দেশ ,এই সময় ,
প্রত্যেকটা গর্ভ নিরোধক আমাদের শত্রু ,
প্রত্যেকটা জন্ম আমাদের মিত্র
প্রত্যেকটা অনাহারী মুখে ভাষা দেবার আগ্রহ নেই আমার , আমাদের ...
প্রত্যেকটা চুনাব বক্স আমার অস্থাবর !

ক্ষতবিক্ষত দেশ !
একবার ফিরে এসো "লবণ সত্যাগ্রহ "
দিনরাত লবণ উৎপাদন ......
হিমালয় শিলা থেকে কন্যাকুমারী
ছিটিয়ে দাও লবণ
আমি জ্বলন দেখতে চাই !

প্রতিবাদ শুধু কবিতায় সম্ভব -----
আমি তুর্কি
আমি কামাল পাশা
আমি বাস্তিল
আমি বাস্তিল জনতা ......
উগ্র সুখে রাজ দম্ভ
ভাঙবো আমি ভাঙবে তুমি ...

যা লিখে যাচ্ছি তার মাথা নেই , লেজ নেই , নেই ভবিষ্যৎ !
তুমি এভাবে লিখনা প্রিয় ,
তুমি হাড় লিকলিকে শরীরের কথা বোল না প্রকাশ্যে -
জানো না তুমি
এখানে ক্ষিদে পেলে কাঁদতে নেই ...
বলতে নেই এই কি আমার দেশ ?
আমাদের শুধু দেখে যেতে হয় ,
রাত আঁধার হলে মুখ লুকিয়ে কেঁদে যেতে হয় !











কর্তা

তারপর নিরাপদে ফিরে আসে ব্যর্থ'রা
প্রশ্নাতীত প্রশ্ন নিয়ে ; সর্বদা বিব্রত থেকে
আত্ম হননের পন্থা , পর্দা জুড়ে লাশের ঢেউ
এরা সব ছোটখাটো মানুষ ছিল যুগের সহ
যাত্রিক ! অনেক কবিতা লেখালেখি পাতা
জুড়ে মরাকান্না , ছোটছোট দুঃখ নিয়ে ছিলেন
এরা রাতে বুকে মাথা দিয়ে নিশ্চিন্তে - এবার
ঘুমা শ্মশান শান্তি নিস্তব্ধতায় !

প্রশ্ন ছুড়ে দিলে নদীর দিকে , আরো কিছু প্রশ্ন
নিয়ে ফিরে আসে , স্বজাতি ভোগী প্রাণী
দুধের অমর্যাদায় মা'কেও গণিকা বানিয়ে
টপাটপ লাশ খাই , বিস্বাদে বোনের শরীরে
রেখে যায় সময়ের কালি - বেদখল হয়ে উঠে
উঠোনের স্নেহ-মায়া এরাও সন্তান !

স্থির দাড়িয়ে আছে একটা সময় ! রুচিহীন
সংখ্যাধিক্যে "অচলায়তন" ,
ক্লান্তিতে বিমগ্ন "কর্তা " এই প্রথমবার চিন্তিত
তবে কি ভুল ছিল নিজের সৃষ্টিতে !











শূলচক্রপাণি

ভগ্নস্তূপে দৃশ্য নেশা , বিলম্বিত সঙ্গমে নদী
বাঁক নিয়ে মিলন পিয়াসী , রাতে জেগে থেকে
শারীরিক মায়া -- জৈব লোকে কিলবিল ডিম্বাণু
অহেতুক উগ্রতায় স্থির ঘূর্ণন , জল খসে কিছু
স্বপ্ন-ক্লান্তি - নিস্তব্ধতার অভিঘাতে খান খান কুকুরের
ঘেউ ঘেউ , আপন নই ঘর , রাতের তাঁরা , শরীরের
মুগ্ধতায় নিঃশেষ কালের ঘোড়া !
দৈব লোকের সুনিদিষ্ট নেই ফরমান , ফোরম্যান
আখেরে লুটে অধিকার নির্দয় পাষণ্ড
সেই মা ( আমার মা ) কেঁদে উঠেছিলেন আর না -
হে ঈশ্বর চেয়ে দ্যাখো আমি আট মাসের ......

গৃহীত হয়ে যায় সীমাহীন পাপের ক্ষরণ কাল ...
এক মা কেঁদেছিলেন সেদিন ......
এক মা কাঁদছেন এবার ......
মহাভারতে পঞ্চবঁধুর ছিলেন শূলচক্রপাণি , এযুগের ?











বিশ্বাস বলতেই মনে আসে কিছু জন্মান্ধ রোগ
অথবা সংক্রমনিত
আমাদের আছে , আমাদের বাবাদের মায়েদের
ছিল আসছে পথে'র জনতারও !
অবিশ্বাস ও এক রোগ এবং উপরিউক্ত কথা
সাজিয়ে নিন আপনি ......

মোটামুটি একটা শব্দ আছে .........
মানে অচল সিকি ...

অথচ বিশ্বাস , অবিশ্বাস দুটোতেই ঠোকবার
সম্ভবনা ষোলো আনা ...

মধ্যম পন্থা যদি জানতাম !







বিনাশে ও দায়বদ্ধতা রুটিন ,
পুনজন্ম ক্ষয়ে --
সমগ্র ভাঙাচোরা
অমোঘ নির্দেশে !









সভ্যতা

আস্ত এক নগ্নতা নিয়ে নেমে এসো আপেল বাগানে -
সরীসৃপ খোলস বদলে পারদর্শী যেনেও থামিয়ে দেব
ওর রথ -লাইফ হেল করা জানে না শুধু বঙ্গীয় সেবক
আমিও ছাল ছাড়িয়ে সভ্যতায় মাখাতে পারি লবণ !

যতক্ষণ পারো হেসে নাও তুমি পাগল এই বেলা ......
সন্ধানী দৃষ্টি মেলেছি আমি কলি , আমি কলির "দ্রোণ "
শেকড়বাকড় উপ্রে নয়া সভ্যতার গোড়াপত্তন
টাইগ্রিস কিচ্ছু না , না হিন্দ কিচ্ছু্‌ , আমিই সভ্যতার শেষ কথা বলি !

বদলের মানচিত্র এঁকেছি মনে ভুলে যাও অনার্য রক্ত ...
বিশ্বাস অবিশ্বাস প্রেম মিথ্যা - যুগ এগোই ফাঁকি দিয়ে !







প্রতিদান

অদ্ভুত , বিশ্বাস ভেঙ্গে উঠে আসছে প্রতিদানের মর্মক্ষত ,
আমি তো অস্বীকার করিনি তোমার মহৎ কথা
নিজেকে নিঃস্ব করে আমাকে রাঙানোর আবেদন ;
এভাবে বললে তুমি
"কি দিয়েছি তোমাকে আর কি পেলাম এটাই ভাববো!! "

অদ্ভুত , যুগ সন্ধিক্ষণের কবি ...
তোমার জানার মধ্যে নেই কোন অজানা
তোমার পাওয়ার মধ্যে নেই অতৃপ্তি
আমি যা জানি সেখানে নেই বিশ্ব বিদ্যালয়ের কেতাবি ছাপ
আমি যা মানি সেখানে তবু রেখেছি আমার বিশ্বাস !

এভাবেই প্রতিদান চাইতে হয় কবি ...

আমার তো নেই ফিরিয়ে দেবার কোন সম্বল , কিন্তু
পেয়েছি পথ
দ্বিতীয় বার ভুল করছিনা আর ......
কেউ এলে আগেই দরজা বন্দ করে দেবো , জনতা
প্রতিদান দেবার নেই যে আমার ক্ষমতা !







কাটাকুটি

অপেক্ষা করেননি আর বাবা ; মখমলে শাদা ধুতিটা ছিল শুধু ,
তাও শেষ অবধি খুলে গন্তব্যে , উড়ানচণ্ডী বেহমিয়ান
হতে গেলে কবে কে সাজিয়েছেন নিজে !
বাবার সেই ফেলে যাওয়া বই-পত্রে অজস্য জিজ্ঞাসা
মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিয়ে এসে প্রশ্ন করি উত্তর দিই
আর প্রত্যেকটা বইএর শেষ পৃষ্ঠায় লিখে রাখি
"বাবারা কি কিছু প্রশ্ন রেখে যান সন্তানে ? "

ইদানীং অনেক পুঁচকে বসন্ত আসে ভিত নাড়ানোর অভিপ্রায়ে ;
ফিচেল হাসি মাখিয়ে " কেমন আছেন ?"
আমিও তো বাবার'ই সন্তান
উত্তাপ বুঝি , আর কতোখানি উত্তাপ এলে পুড়বে শরীর ,
তরিঘরি দরজা জানালা বন্ধ করে
নির্বাসিত করি বাবার ফেলে যাওয়া ঐতিহ্যর কাছে ...
না না
এই হৃদয় চাষযোগ্য ভূমি নয় কারুর !

আমিও যেদিন কোন অপেক্ষা না করে বেড়িয়ে যাবো ,
গোধূলিতে মাতোয়ারা আমাদের গ্রাম ...
গড়ুই নদী কূলে
বাবার বই নিয়ে বসবে অন্য পুরুষ
সেও কি আমার প্রশ্নের নিচে লিখে যাবেন ......
" প্রশ্ন অনেক , উত্তর নেই "







অণু - তবু নই অণু

10

প্রেম এক প্রকার ন্যাকামি
শুধুই অধিকার বোধ ;
আমার বাড়ি আমার গাড়ি
আমার সন্তান ভবিষ্যৎ

11

বৃহৎ ভাবতে গেলে --- মন খোলা হাওয়া ;
বিসর্জিত হয়ে যাক শ্বাপদের আস্তাবল
কিচ্ছু পারনি জীবনে
সন্তানের কল্যাণে দুটি গাছ লাগিয়ে যা ,
হতভাগা !

12

ভুলে গিয়েছি মানুষের নির্দেশিত নিয়ম \
ক্ষুধাকালে দেখিনা নিয়মের মানচিত্র

13

শব্দ কারিগর যারা তারা ঈশ্বরের জন্য লেখেন ,
আমি লিখি আমার জন্য তোমার জন্যও বা !

14

আধুনিকতা মার্কা মারা সিম্বল ভিন্ন কিচ্ছু নই
জামা যদি গলাই সামনের দিকে আধুনিক
হলাম কি করে ভাই ?
ইতস্তত কিছু শব্দ নিয়ে আমি আধুনিক ...
শুধু আমি জানি
আমি সাবেকীর চেয়েও সাবেকী

15

একবার মৃত্যুতে ফিরতে পারলে
জন্মে ভাস্বর মুখ
আঙ্গুলের ফাঁকে গলে স্বপ্ন
জাগতিক ভালোবাসা জোঁক !

16

জীবনের শোকসভা ঘিরে যতো কান্না ,
নিশুতি করে এলে জানালা খুলে দাও ,
উদ্বেগে পুড়ে গিয়ে যা কিছু আছে বেঁচে
তাকে খুঁজে নিক দ্বিতীয় পুরুষ !

17

ভাস্বর করে রাখো আমাকে তুমি
তোমার মর্মক্ষতে ;
আমার অভিরুচিতে শেষ হয়ে যাক
নিষাদের এই জন্ম !
ব্যথিত বক্ষে অনুজ্ঞাসূচক তোমার সম্মতি -
যতবার মরি
ততবার বাঁচি
তোমাকেই আঁকড়ে ধরে !

18

মৃত্যু অনিবার্য ; সত্য অথবা পাপে ,
হরিণ সেজেছি স্বখেদে
পতন বুঝেও মন
পতনকে ভালোবাসে !

19

ভুলছিল সব আত্মসন্তুষ্টি ,
তৃতীয় বিশ্ব রঙ্গিন আবর্ত ,
এক রোজ শ্যাওলা সরিয়ে ...
দুই রোজ শ্যাওলার জন্ম হয় !

20

অক্লেশে পেড়িয়ে এসেছি জন্ম পরিচয়
হরিরাম সোরেন আমি ;
মাকে বিক্রি করে
মাতৃহন্তা হয়েছি আমি ......

21

গৃহীত হয়ে যাক ঠোঁটে ঠোঁট রাখার ক্ষণ ;
গোলাপ প্রেম ভালোবাসা মিছে ...
কামানশালায় লোভী ভীতু কুত্তার দল
তারা দিয়ে দ্যাখো , লেজ গোটাবেই !

22

নগ্ন সভ্যতায় উমেদারি কবি
নিজেকে নিয়ে সারাক্ষণ ;
যা কিছু দুঃখ শুধু নিজের গায়ে মেখেছেন ...
ধান কুড়ানি মা হেসে উঠলে
পাগল নাম দিয়ে কবিতা লিখেছেন !

23

কবি , খুঁজে নিও তোমার রসিক বিদূষক
বাহ শাবাশের নাম কীর্তন ;
যা লিখছ তোমার কথা- ছাগলে যেদিন খাবে ...
এই বিদূষক হেসে উঠবে , সেদিন ?

23

দেশ আছে তাই পরিচয়ে নেই গ্রামের নাম ,
ধর্ম আছে বলেই বিধর্মী কাফের ম্লেচ্ছ ,
সময়ের সংবিধানে ঐতিহাসিক ভুল পরিচয়-
আমি যদি তোমার মায়ের কোলে আসতাম ?

24

তোমরা পড় না বলে আমি লিখি
তুমি পড়বে না জানলে আরো লিখতাম ,
বিসর্জিত হয়ে যাবে যেদিন কবিতার খাতা ...
মাকে মা বলে ডাকবো আমি মা ,







সাগর ০৮

সেই তো রেখে গেলে মানুষখেকো অনুক্ষণ ;
বহুল চর্চিত এই জনঅরণ্যে'র আস্তারনে
গৃহস্ত মেঘ , ফেটে চৌচির কোমল দৃশ্যপট ,
সাগর এখন আমার বৃষ্টি আড়ি কাল !
অগ্রদূত হয়ে প্রদর্শক নিয়তর , তারপর ঢের
শোষণ কাল অথচ আঁধার রাত আলো খুঁজতে
গিয়ে জড়িয়ে আরো আঁধারে ভুলে গিয়েছে ফিরবার
জানাশোনা পথ !
বিচ্ছিন দ্বীপে পাখি'র নিয়মতান্ত্রিক সংসার
নিজেকে ভেজানোর ঢেউ ফিরে গিয়ে গভীর আক্ষেপে ,
ওরা মানে না ...
এই হিমে বারবার স্নান করা যায় না !

সাগর , সেই ব্রান্ড সিগারেট গন্ধ উগ্রতা ছড়িয়ে
ফিরে গেলে পরে থাকে এক গভীর শূন্যতা ...







অন্য রামায়ণ ----- মার্জনা করবেন সকলে ...
তারপর যখন রামের সাথে সীতার প্রথম দেখা হল লঙ্কায় , কান্নাকাটি হল কিছুক্ষণ বুকে মাথা রেখে , হঠাৎ মনে হল সীতার ......

" ওরে আমার মর্যাদা পুরুষোত্তম
নবদুব্বাদল শ্যাম
ভুলে গেলি অগ্নিসাক্ষী কাল ?
এতো দিন বন্দী পররাজ্যে তুই
পারলিনা করতে উদ্ধার ?
এই তোর ত্বেজ ?
আর ভগবান , তুমিও ?
আমি তো সতিসাব্ধি স্ত্রী ,
আমার দৃষ্টিবর্ষণে ধ্বংস হওয়া উচিত ছিল
কামুক রাজার
তবুও দিব্যি হেসে-খেলে ,
অভিসম্পত ও তো কম দিই নি ...

তবে কি মন থেকে করিনি
মনে মনে আমিও তবে কি ? হি হি ,

ভাগ্যিস সর্বসমক্ষে এসব করিনি ...
তারপর যদি বিফলে যেত ...






































No comments:

Post a Comment