Thursday, 21 June 2012

কিছুমিছু ৬



জন্মদিন

এক পাহাড় তৃষ্ণা নিয়ে কালকে আবার এক অঙ্গীকার ---
ধুলোরও বেরে যাবে বয়স আরও একটি বছর --
আমিও পথ থেকে গলিত স্খলিত ব্যাঙ তুলে চুমু খাবো
জীবনের রহস্যে ; মাইক্রো ওভেনে জ্বলবে প্রজন্ম
জীর্ণ পাতা থেকে খুঁজে নেবে কৃষক জৈব সার --!

তারাও মরে গেলে রেখে যায় আমাদের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ --
জলকাদা ভেঙ্গে ভেঙ্গে পথ কাটি -- পাশাপাশি উড়ে যাই
বাসের সাইরেন গোধূলি আলপনা অথচ পরভোগী
রক্ত মাংসের এই ভবিষ্যৎ !

খেলাচ্ছলে যা লিখে গেছি আমার আমাদের তাহাদের কথা --
তুমি খুঁজে দেখো পাবে না তাতে কোনটা আমি কোনটাই বা
তোমাদের কথা ----

তবুও ফিরে ফিরে আসে আমার অজান্তে মাসের পর মাস
এই ধুলি মাথা পথে জন্ম --
আমিও উপেক্ষার দৃষ্টিতে লাল খুঁজি বিপ্লবে ক্রোধে !
যদি মৃত্যুর আগে আর কিছু জন্ম থাকে অচেনা গভীর রাজ্যে --
তবে যেন হয় আমি তোমাদের লোক !





‎" চমৎকার , ধরা যাক দু'একটা ইঁদুর এবার --"

লক্ষ লক্ষ পায়ের নিচে আমাদের ফুটপাত
নাগরিক ভবিষ্যৎ ; দূরে কাছে ঐ ছোট ছোট
মানুষ গুলো আমার রাত্রির প্রেম ! হিসাবী মানুষ
ফেলে রাখেনা জং ধরা সাইকেল থেকে ক্ষরণ
কোষের এক বিন্দু রস ,
এভাবেই গুছিয়ে নেওয়ার বড় তাদের শখ ।

অন্ধকার ভালোবাসে শ্বাপদ , অতর্কিত আক্রমণে
শিকার নাজেহাল হলে জীবন রক্ত রেখে যায় !
আচ্ছা , কলকাতাও সেদিন অন্ধকার ছিল ? না ?
হাসপাতাল থেকে সেই মেয়েও বেরিয়েছিল একা ?
আমাদের বিশ্বাসে ? ট্যাক্সি ড্রাইভারও ছিল মানুষে ?
অথবা পশুবধ বিশ্বাসে , নগরে নগরে ?

এর পর প্রহসন বিচার সভা মান্ধাতার কোলে বসে
অন্ধ কানুনের সম্রাট ; আমিও ভুলে যাবো আগামী
অভাবে আজকের ক্ষত চিহ্ন -----

বিচারে ব্যথা কমে ? মুছে যায় শোকের ইতিহাস --
রক্ত দাগ থেকে উবে যায় কাল রাত্রের দুঃস্মৃতি !







যদি ফিরে আসি তোমার গোধূলি নিমন্ত্রণে এখানে
পিছে ফেলে নিয়ন রাত্রি নারীর উষ্ণ সোহাগী চুম্বন ,
মিশে যেতে চাই যদি তোমার গোপন অন্দরে পরিমিত
শীতল অঙ্গখানি দিয়ে ঘাম মুছিয়ে দিও আমার !
কতকালের এই ধুলি জন্ম কতকাল একা বিনিদ্রায়
কতকালের শ্যাওলা ভাসমানটা ভেসে ভেসে চলা ,









পাখি কাব্য

নেমে যাচ্ছে কালান্তর এক রুপালী ব্যাধি
স্মৃতি বিস্মৃতির অতল গহ্বরে সঙ্গোপনে ;
মাটি জল বিচালি দিয়ে ঈশ্বর গড়ে পটুয়া
প্রিয়মতার চক্ষু এঁকে দেন মূর্তিতে , আমি
দেখি ঈশ্বর -- শুধু পটুয়া জানেন ঈশ্বর নন
তার থেকেও দামী বটে , প্রেমে জীবনে !
হাত উবুড় করতে শিখে গেলে কে বা রাজা
কে বা প্রজা অর্থ থেকে সম্পর্ক ময় অস্তিত্ব
নিমেষে হালকা হয়ে যায় , আমি, আমিও
পাঁঠার হাড়ের মত চিবিয়ে চিবিয়ে উপভোগ
করে নিই সময়ের রহস্য আঁধারের গান !
ফিরে এসো কথাটা শক্ত ছিল , অনাবাদী জমির
শক্ত ঢ্যালার চেয়েও শক্ত বলে মনে বলি ফিরে এসো
সকলের সম্মুখে স্থির ধিতস্তি থাকার আপ্রাণ
চেষ্টা করি যন্ত্রণায় !

আমিও জানি যে পাখি পেয়ে গেছে স্বাধীনতা স্বাদ স্বপ্নে
বাস্তবে আমারই প্রাচীন উপেক্ষায় , সে ফিরবে না --
যদিও ফেরে ভালোবেসে সন্তান মুখ ---
মুখীয়ে রইবে তবু অজানা আকর্ষণে !









পাগলী

শব্দের হুঙ্কারে আমি এঁকে চলি জীবনের চলচ্ছবি ,
তুমিও প্রেম চেন , শরীরে শরীরে একাকী নির্জনে ,
প্রলাপের সংজ্ঞা নিরুপমে বিকৃত আত্মার জয়ধ্বনি ,
মার্জার সমাজ , দুধ দাও স্বাদ কোরকে এবারও ,
কোমল ত্বক ছুঁয়ে নিম্নমুখী আন্দোলন অবিরাম অবিরত ,
শাশ্বত প্রলুব্ধকরণের চাঁদ কণা অপূর্ণতায় নিষেধের বেড়াজালে ,
গণ্ডূষ ভরে পান করে তুঁতবিষ ধুতরা ফল পাগলী ,
তবুও ,
তুমি তোমাদের নিয়মের ক্রীতদাস ,
লোভ লপুপ দৃষ্টি ভেঙ্গে এক নির্জন আঁধার ,
উজাড় করে কাম বাসনা
তবুও তোমাকে মানুষই বলে সর্ব লোকে ,
আর কত যুগে যুগে তোমারই সহোদর
হিম মন নিয়ে
রূপের অতলান্তিক গহ্বরে সজ্জিত পোশাকে ---
আমিও চিনিনি চোখ দেখে
কোন চোখে আছে প্রেম , কোন চোখে শরীরের ক্ষিদে











বিপ্লবে ও বিশ্বাসে

পা বাড়িয়ে রেখেছিলে এক হাত - চৌকাঠ বিপ্লবে ;
রাতের আঁধারে ভেঙ্গে পরেছিল
বিপ্লব, বুলিতে বুলিতে টপটপ ঝুলিতে
কাল বৈশাখী ঝড়ে আম কুড়ানি দুষ্টু
বালকের মত
তুমিও কুড়িয়ে নিচ্ছিলে ,
এখন নিগাঢ় রাত্রের সীমাহীন নিস্তব্ধতা
শঙ্কাহীন বুড়ো চাঁদ গেছে ডুবে
পৃথিবীর বুক চিরে
জোনাকির আলোড়ন
পেত , অশরীরী শুধু জেগে আছে
ক্ষুদার্থ নেকড়ের জিহ্বা লালসায়
অথচ
ঘুমিয়ে গেলে জনজাতি
প্রত্যেকেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঈশ্বর-ঈশ্বরী ঈশ্বর সন্তান সন্ততি
নিগুঢ় রহস্য উত্তাপে
আমাদের সন্তান ; তবুও
প্রত্যেকটি গাঢ় অন্ধকার ইশারায়
ভাতারখাগি বুলেটের ছত্রছায়ায় উড়ে যায়
লোকাচার - , সুপক্ক ধানের স্বাদ পটল ঝিঙের
প্রভাতী পরাগ ,
আর দুধের সরের মত ঘন হয়ে এলে তোমাদের প্রতিজ্ঞা
বিপ্লবে বিপ্লবে
স্বপ্নে স্বপ্নে শ্লোগানে শ্লোগানে
মাটি রাঙ্গানোর শপথ !

জানো নাকি , দ্যাখনি কি -----
এখনও , এখানে তুমুল উৎসাহে চড়কে চড়কে
লেগে থাকে শরীর রক্ত গ্রাম
আর বদ রক্ত কোলাহল থেকে কিছু চোখ
স্থির - ঈশ্বর প্রার্থনায় -- অথবা
গ্রামের চিরানিদ্রিত রঙ্গভূমি থেকে উঠে এসে
হাঁসান মিয়াঁ প্রফুল্ল মিস্ত্রী নাঙলে
জোঙ্গালে কাঁদা কাটে বিদে কাঠি'র প্রেমে--
আমনের বুক চিরে লিখে যাই
আমাদের পরিচয় ।
সকলেই ভালোবাসে ,
সকলেই ভালোবাসে - নিজস্ব অনুভূতি
শরীরের ঘ্রাণ , মাছের পেট থেকে ফেলে দিয়ে
প্যাঁটা - তোমারও খেতে লাগে বেশ
খেতে লাগে শর্ষেফুলী গুঁড় মোয়া-মুড়ি
লাল স্বর্ণ ধানের নিমন্ত্রণ !
তুমি দ্যাখনি
সে সব সময়ের তুমুল আন্দোলন ফড়িঙের ?
প্যাকাটিতে লাগানো আঠা থেকে
উড়বার তার বড় স্বাদ !
দ্যাখনি----
নাগর জোয়ান মাটি কাটাকাটি ঝুপ ঝুপ
ঝুড়িতে কোদালে ঘামে মাখামাখি
গুবরে পোকার বাঁচার সুতীব্র চিৎকার
এখানেই ,
অনেকবার এখনো , বন্ধু !

চাঁদ চলে গ্যালে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে
হ্যাচাকে তুমুল হাস্যধ্বনি
আসরে আসরে কাঁসরে কাঁসরে বৃন্দগান
নটি বিনোদিনী ,
রাধিকার দাঁড়ি গোঁফ গজালে প্রভাতে
যাত্রা পালায়
তুমি হাস'নি ? বলনিকো রাধিকা
পুরুষ বটে !
এবার বিপ্লবে বিপ্লবে স্বপ্নে স্বপ্নে
তোমাদের দেশ তোমাদের লোকজন --
তারাও কি ভুলে যাবে পূর্বপুরুষের বংশ তালিকার
পরিচয় ? ভুলে গিয়ে মায়ের পান দাঁত
বুলেট ভাঙবে দাঁতে সুপারি ভেবে ?
এখন সময় ভেঙ্গে ভেঙ্গে সময় আসে
এসে ভীর করে জানালায় এক অদ্ভুত
যূথ চারী স্বপ্নের মত
ঈশ্বরের অনুকল্পে বিপ্লব
আর
তুমিও ভুলে গিয়ে পরিচয় ইতিহাস
ভূগোলের নির্দেশ
রণংদেহী '
ওদিকে এখনও শকুনি
চোখ পাটকিয়ে দাবার কোটে কোটে
তোমাতে- আমাতে সাজিয়ে
রাজা বধের সংজ্ঞা খোঁজেন --
তবে
চমৎকার বিপ্লব !
তুমিও ;
দ্যাখো , আমিও আমাদের পিতা- প্রপিতামহের
সাজানো বাগানে অভাবে স্বভাবে অনাহারে
দ্বেষে - দেশে আছি ,
আমিও প্রস্তুত
খুলে ফেলে দিতে সমস্ত আভরণ লালিত্যকলা
লালিত সাঁজ শয্যা প্রচ্ছদ
অপূর্ব জীবনের মন্ত্রণায় ;
বিপ্লব ------
যদি আমিও তুমি হয়ে যায় আমার বিশ্বাসে ,
আর তোমার উঠোনে তোমার রক্ত
আমিও ইতিহাস হব কি তবে আমার বিশ্বাসে ?









তিন কথা

০১

সব সংকল্প গুলো দাগ কাটেনি তোমার মনে
আর দ্যাখো আমিও কেমন বোকা ;
পা দিয়ে ঘাস মারার লড়াই লড়ছি
আর পা তুলে নিলেই
সে কি দম্ভ মাথা তুলে --
আমিতো মাথা নোয়াতেই শিখেছি
নরম স্পঞ্জে !

০২

তোমার কোন দোষ ছিলো না ,
বজ্রাহত শরীর খোঁজে না হন্তক গৃহ ,
এদিকে আমিও হেমন্তের শূন্যতায় চেয়ে
পাখি হয়ে যায় যে জীবন
তাদের আস্তানা খুঁজি
একদিন প্রলাপ -- সর্বস্ব দিয়ে তারেই ডাকি
গৃহে মঙ্গল শঙ্খ
জীবনের আগমনে মৃত্যু

0৩

কেউ মনে রাখেনা ,
মনে রাখেনা হৃদয় ফুলশয্যার স্মৃতি
তোমার শোকসভার পরের দিন
পাঁঠার মাংসে মোচ্ছব ;
বন্ধুত্ব লেগে থাকা এক শব্দ
হৃদয়ে হৃদয়ে নয় শব্দের উজ্জল্য বাড়াই















শব যাত্রায় উড়ছে খই আমার জন্মের আগে
আর জন্মের পরে
খুচরো পয়সা খই ভাণ্ডার রেখে প্রস্তুত
আমিও নাগরিক
দ্যাখো বিলিয়ে দিয়েছি মর্যাদা ধুতির খুট
মেহেন্দি রঙের নেশাতুর আঁচল
রাত্রিকালীন সেই সব ঘামের শরীর
যদি বল নেবে তুমি
আমিও নিঃস্ব হয়ে যায় এবেলায় !

এখন হাড়ে হাড়ে মাষের সবস্থানে এক হৃদ
ধুকপুক খাবি খাওয়া গ্লাসকাপ
অনেক কু-খাদ্য গিলে
মস্তিষ্কে সংক্রমিত এক বিষাদ ঘণ্টা
ঢংঢং কাজে অকাজে কুকাজে---
তুমিও দেখছ তবে শরীর
কবেই মরে গেছে আত্মা
খই ছড়িয়ে শুধুই তোমাদের শান্তি প্রলাপ















শব্দরাও মিথ ভালোবাসে -- মরণের পর ;
আমার শোকসভা জুড়ে কবিতার আসর
স্তুতিতে ফুলবে ফুলের মালা ;
এই অনাহারী কবির কবিতা থেকে কেউ
খুঁজে পাবে ভাতের গন্ধ
লাল মাটিতে আশার ইন্ধন ---

কেউ জানে না -----
কবিতার প্রতিটি অক্ষরে আছে আমার একবিন্দু করে রক্ত









আপেক্ষিক

এক বিমর্ষ- মত্ততা মন ভোলানো আপেক্ষিক ,
মৌলিকতা শব্দ বন্দী হয়ে "ম" এ নিবদ্ধ হয়ে আধুনিক পাখি
আকাশের উপর ছানা পালন সংসার !

এখানেই কিছু বোধ আছে একা হয়ে এলে চরাচর
চিলের নিঃশব্দটায় নেমে এসে কাঁদিয়ে যায় ,
আর কিছু গভীর ক্ষত সেই অতীত হতে বর্তমানে
যুদ্ধাং ঢঙে এক হৃদপিণ্ড বিক্ষত হলে মেঘ নেমে আসে
জলে ভাসিয়ে দিতে চাই আমার অহংকার !

জীবনে সবখানি নয় প্রাচুর্য বৈভবের দিনরাত্রি - শীতল
পাটিতে মাথা রেখে কৃষাণ ভুলেছে রবি শস্যর গন্ধে
বিছানা জুড়ে জলের টুপটাপ ---
এরা ভালছিল না ?









শরণার্থী শিবির

সেই মেয়েটি হারিয়ে গিয়েছিল গণউদ্বাস্তু মঞ্চ থেকে
কেউ কেউ দেখেছিল কেউ দ্যাখেনি কারুর বা সম্মতিছিল
প্রকাশ্য বেশ্যালয় থেকে লাল কুঠিতে ঠায় পাই তো পাক না !
মেয়েটিতে কেউ বেশ্যা বলেছিল কেউ চরিত্রহীন কেউ লোভী
কেউ বাবা-মাকে গালাগাল দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়েছিল !

তার পর মেয়েটি সত্যি হারিয়ে গেল , পুলিশ রিপোর্টে তখন
কয়লা মাফিয়া বঁধু নির্যাতন ছাত্র বিক্ষোভ ভুখা মিছিলে গুলি
চালনা নিয়ে এতো ব্যাস্ত বলে একটা মিসিং ডাইরি'তে থেমে গেল !

মেয়েটি এবার স্বাধীন , দেশ দেখল , বুঝে নিল বেঁচে থাকার
নিয়ম , শরণার্থী শিবিরের দিকে তাকিয়ে বলল নোংরা জীবন !

এখন মেয়েটি বেশ আছে , ঘরে একখানা দয়াময় ঈশ্বরের প্রমান
সাইজের স্মিত ফটো , সারাদিন দর্শক ,
এক স্বপ্নাগার নিয়ে পৃথিবী ঘুরছে -- মেয়েটিও পাক খেতে খেতে
উপরে উঠছে নামছে যেন সময়ের পাক্কা খিলাড়ী ---
















































No comments:

Post a Comment