Friday, 4 May 2012

কিছু কথা


অংক 

অহরহ দুই অংক পোড়ে আদিম উপত্যকা'র জমিনে ;
একদিকে নীল গহ্বর , সাপ-নেউল সন্ধি- বিচ্ছেদ
অপর প্রান্তে নীলাকাশ ধানের শৈশব জুড়ে মধুক্ষণ
পানপাত্র হাতে দাড়িয়ে গোটা দিগন্ত !
হিসাব মেলাতে বুঝি বেলা যায় , নবীন চন্দ্র দে ষ্ট্রীটের ৩৭বাই ৩
প্যালেসটার খসা নোনা দেওয়ালে অর্ধেক যৌবন
চালকুমড়ো ; বাদবাকি যা পরে আছে ষষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে'র
অপেক্ষায় আপেক্ষিকতার অলিন্দে
আমিও বেশ কুবেরে'র গচ্ছিত পাহারায় রাজ জেগে কালি চোখে
এক সাম্রাজ্যবাদ আকাশের নিচে
পাই পয়সা'র হিসেব মেলাচ্ছি
দ্বিতীয় বার তৃতীয় অণুচ্ছেদে কোমলত্বক হতে যে দৃষ্টি উড়ছে
আমি হাতরে হাতরে ধরতে পারছিনা ,
কানামাছি খেলা !

অংক কসতে কসতে কবে যে নিজেই অংক হয়ে সন্তানের তির্যক দৃষ্টিতে
আমি শুধু সূদে'র বুক বিদারক ..







হে হে হে কি আনন্দ

ক্ষ্যাপা দল গান গা না
মিছে নয় এই বায়না
মনে রাখিস না হায়না
বন্ধু হতে তোর কোন দোষ না ।

ক্ষ্যাপা দেখ লালন সঙ্গীতে
বিভেদের রাজনীতি ফাঁক ফন্দীতে
কাঁচকলা বিদ্যায় নেই অহং
যদি ভেতরে থাকে মনন ।

ক্ষেপুতে আয় ঝড় বৃষ্টি
দূরে সর যতো সব অনাসৃষ্টি
রামের উপনয়নে তোর নিমন্ত্রণ
কণে পক্ষ তুই রহিমের মেয়ের বিয়েতে ।

দল বেধেছি ঘর বেঁধেছি
পর কে দিয়েছি গৃহ অঙ্গন
ক্ষ্যাপার দলে নাম লিখিয়েছি
ছেড়ে এসে রাজকীয় সিংহাসন ।









‎......।পাগলি ...।

তাকে শান্ত হতে বলি ,
বলি আর খানিকক্ষণ চুপ থাক ,
তোর যোনীগর্ভে ফেলেছি ছত্রিশ লক্ষ শুক কীট
শুধু বাড়তে দে , পাগলি চুপ করে থাক খানিকক্ষণ !
জলপাইরঙা সিপাহী'র বুলেট
বর্ণান্ধ জন্মগত ,
না চেনে শরীর না চেনে মন ,
শুধু রক্ত ভালোবাসে জন্মলগ্ন থেকেয় , তুই জানিস না ?
পাগলি ?
পাগলি মনে পরে , মনে পরে , পাতা জল নক্ষত্রে'র বা
আকাশী রঙের আকাশে'র বর্ষা কালিন গল্প ?
টিনের চালে সারা দিন খেপে খেপে
শুধু তোকে সুখি রাখার
ভীষণ আড়ম্বর চিন্তা ধরিত্রীর সে সময় ,
পাগলি , আর খানিকক্ষণ ,
আমি পেয়েছি সংকেত ধ্বনি তার পদার্পণের
নিযুত যোনী গর্ভ হাসছে ,
সে আসছে জেনে পদটীকাসহ কোকিল গলা
খুলেছে এই বেলা
উলুধ্বনিতে মুখরিত লালন বাংলা , "সঙ্ঘরাম ঘুম থেকে"
উঠে আসছে মুকুল , মইদুল , করিম মিয়া
পাগলি , আর দশ মাস ,
মন বেধে রাখ শক্ত করে... সম্মুখ সমরে নামবো একসাথে
আমি , তুই , আর সন্তানে, এখানেই , আবার !







সাগরিকা ০৪

বাঁধানো স্নানঘাটে সিঁড়ি
ব্যস্ততা নিয়ে ব্যস্ত মানুষজন হাঁসের বিষ্ঠা
এক সময় এই কানাপুকুর
ভালবেসেছিল বিকেল
সঙ্ঘবদ্ধ মানবের ঠোঁটে মিরা প্রেম দেখে
খুলে দিয়েছিল
সবগুলি অলিন্দ ।

নেশায় আচ্ছন্ন মানুষ তবুও ঘৃণা করে বিষ
স্বপ্ন উঠে শ্মশান রাস্তায়
সেই ন্যাংটো পাগল চিৎকার করে বলে
দ্যাখ , দ্যাখ তোরা
পিশাচ যাচ্ছে যমুনায়
শালা ফিরবেই আবার ঐ বেলায় !

অনেক দিনের এই অঙ্গার জন্ম ছিল "রি" , অনেক দিনের প্রস্তুতি সেরে
দ্যাখ আদর্শ চন্দন কাঠ হয়ে উঠেছি
গন্ধদাতা কবেই বা বুঝেছেন তার গন্ধ ?
আমার চিতায় ছায়ে ছিটিয়ে দিস তোর অঙ্গ
দুর্গন্ধ বেদনাদায়ক
তুইও ঘৃণা করতিস দুর্গন্ধ , আমি জানতাম







নবেন্দু মরে বারবার

ভেবেছিলে প্রজাপতি রঙ্গে সব রঙ, অমাবস্যা
বনবাদাড় কি এসে যায় ; কম্পিত স্বরে ও লেগে
থাকে জীবনের কথা - ভুঁইফোঁড় এই আত্মা
নভেশচর হতে গিয়ে চৌধুরী তিন তলা ছাদে আটকে
গেল যেদিন চুলের গন্ধ্যে- বোঝা উচিত ছিল নবেন্দু ,
অনেক বেশী শক্তিশালী শরীর !
তারপর সিগারেট ব্রান্ড বদলে বদলে সব প্রকাণ্ড সৃষ্টি গৃহে
নোঙর ফেলার কি স্বাদ ! কামরাঙ্গাত্বক ঠেস দিয়ে
বসতো যখন হায়না হয়ে , নিশি'তে বুঝতে পেরেছিল
মোমক্ষরণ সবই ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া জতু গৃহের ।

নবেন্দু মরেছে শেষে শেষ আগুনের , ছায়ভস্ম মেখে রাখাল পাগল
একান্নপীঠে বিলিয়ে প্রেম সমাধিতস্ত আত্মবলিদানে
মহান যুগাতীর্ণ ভাস্বর প্রতিভায় ।

নবেন্দু মরে'ও অপ্রমাণিত সময় পাখি নীড় এর অভিমানে
খোঁজে'না ঠোঁটের রণকাব্য
নিজেকেই খুঁজে পেতে বিলিনের সূর্য ......
এই পথেই আসছে নবেন্দু'র দ্বিতীয় শব দেহ .........









শেষ তৃণ

অবশেষে অস্ত্র ভাণ্ডার হতে শেষ তৃণ নাগমুখী
পাংশুটে বিবর্ণ হৃদ এক আকাশ মন্দাকিনী
আর সেই সম্বলে নাতিদীর্ঘ গৈরিক গোধূলি
বিনুনি নদী'র সুরালোকে বিম্ব প্রতিবিম্ব ছায়া
মায়া হৃদয়খানি উচ্ছ্বাস ।
শেষ তৃণ ছুড়ে দিয়ে নিঃস্ব বিশ্ব পিতা'র অঙ্গীকারে
অন্য জন্ম যা আমার কোঠা দেওয়ালে হিসি করে
ভেজানোর মগ্নতাও হতে পারতো হয়তো , একবার ।
শেষ তৃণ ছুড়ে দিয়ে অববাহিকায় নতুন রোপণ বৃক্ষ
পৌরুষে'র আক্রমণে , মাত্রাতিরিক্ত উদ্বেগে
মনে বিজয়ী হাসি " হারিতে হারিতে হারিয়ে দেবা'র" সখ ...
আর গোপন কুঁড়ে ঘরে লুকিয়ে ছায়া প্রতিদ্বন্দ্বী ।

শেষ তৃণ খুলে দিয়েছি শব্দভেদী অভিমুখে এবার ...
ঈশ্বর সামনে শব্দ নেই
এদিকেই তৃণ ফিরছে তাই ...
চুপকথা তবে কি রামায়ণ থেকেও জোরালো মনে আমার ?

নেতিয়ে পরল শশীর ...
নিজের শক্তি নিজেকেই বধ করে বারবার !











সাগরিকা ০৩

শাদা ধবধবে কাপড়ে আঁতরে গন্ধ ছিটিয়ে ভীরবারে
শ্মশান পাড়ে , কে বলবে তিন ঘণ্টা আগেও ভীষণ উত্তাপে
জ্বালিয়েছিল সন্ধ্যামঙ্গল তুলসী , মৈথুনকৃত অভিমানে
বাবলা গাছ ঠাই একপায়ে , কাছে নিত্যপ্রবাহে পরিচলন স্রোতে
তির্যক বালিয়াড়ি সামনেই আরাবল্লি ... এদিকেই বৃষ্টিচ্ছায় ।
মরণে স্বাদ আছে , বেঁচে থেকে মরণে লোভ আছে , ছায় দিয়ে
ঢেকে রাখা যায় কতদিন আগুনভূমি ব্যাভিচারি চাঁদ ?

" রি" গুছিয়ে রেখে গেলাম পর্বতচুড়ায় তোমাদের ঘরদোর
শ্মশান শান্তিতা অবগাহনের সমগ্র বৈকালিক হ্রদ
পানসী নৌকা নিয়ে এই রাতে মেপে নিও সমুদ্র গভীরতা
চাঁদ জলের প্রতিবিম্বে তুমিভিন্ন রেখোনা একটাও মুখ
সূর্য বন্দনায় ঢের এসেছে জন্ম ফিরে গেছে সুদূর অতীতে আমাদের ...

অথচ একবারও বলোনি তুমি ঘৃণা করো এই জল হাওয়া মানুষের মুখ ...
আমাকেও ভালোবেসে ছিলে বোধহয় , তোমারই অজান্তে
শ্মশান ছায়ে তবে মেশে কেন জল.....................









সন্ধি

চুপ করে থাক আর মাত্র দুদণ্ড কালঘাম
রাজী তোর সন্ধি প্রস্তাবে , সিন্নি প্রসাদে পঞ্চভুত অবাক ,
এতো মায়া রেখে কি করে উরে যায় পাখি !
রাজী আছি শীতলায়নে , যে পথে পরে আছে গৃহস্ত ছাগল
মৃগ কস্তূরীনাভ গোলা সিঁথি রাঙিয়ে যে রমণী দুপুরে'র
"বিরাজ বৌ "এ বাঁধ ভেসে যায়
মোরগের ঝুঁটিকে চাঁদ ভেবে ন্যাংটো ঈশ্বর
খেলা করে
তাকেও শেষবার জানাবো না কারন ,
মহিষ তৈরি রেখো খোলা বারান্দায়... যাবো !

শুধু একটা কথা দিয়ে যাও
যাদের জল হাওয়া পরিচর্যায় বাড়বার কথা ছিল
আমাকে ভেবেছিলো আদর্শ কৃষক
আমার হাতেই ছিল যে ধানের ভবিষ্যৎ ... তাদের
পোকামাকড় থেকে রক্ষা করবে তুমি ?

আঁধার ঘৃণা করে দ্যাখো দাঁড়িয়েছি আলোর অনুপ্রেয়নায়
সন্ধি বিচ্ছেদ করে তোমার মানানসই শব্দ করে নিও তুমি ...
শুধু জীবনের অধিকার রেখো জীবনে ! 














No comments:

Post a Comment