Friday, 4 May 2012

দুই কবিতা


দুই কবিতা 

০১

আজকাল যাদের যেখানে থাকার কথা , নেই ,
বান ডাকা সুন্দরবনে'র রাজা এই কোলকাতায়
বিশ্বাস হতো না প্রথম
এখন রোজ হুঙ্কারে লাল বিল্ডিং কেঁপে ওঠে
যখন
ভাবি
কতক্ষণ এভাবে পালিয়ে বাঁচা যায় !

০২

সেই মেয়েটাকে তুমিও চিনতে , ৬ টার বনগাঁ লোকালে
রঙ চাপিয়ে ঠোটে , বগলতলি সুগন্ধি আঁতরে
নামতো যখন -- সাক্ষাত লক্ষ্মী
১০-১২ এর খুপরিটায় বেশ সাজিয়ে নিয়েছিলো
ভগবানে ,
লাল লাল সর্বভুক চোখ যখন মা মা করে নমস্কার
দিয়ে গড়িয়ে বিছানায়
পাশের মহা নীমের বউ কথা কও পাখি
সেদিন বলে উঠলো বজ্জাৎ
অন্য মেয়েকে দেখলাম সেদিন ট্রেনে
চেনা চেনা





্‌,
আমি কবিতা লিখি

এযাবৎ যাপিত যাপনে উদ্বেগে
ভ্রূণখোরের নিষাদ দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে
ভালোবেসে শস্যগোলা দুধের মার্জিত অনুশাসনে
এনেই ফেললাম ;
তাদের জন্মে কি মায়া , স্ফিত বাঁটে জোঁক চোষক'কে
উজাড় করে রক্ত ক্লান্তি নেই
স্বর্গ কোথায় নেমেছিল এককালে খোঁজ রাখিনি
ঈশ্বরী হতে কার না স্বাদ জাগে ?
অনুশাসিত সামন্ত্রতান্ত্রিক দলগত ঐক্যে
ডিগ্রী ঝুলিয়ে পিঠে
বেণীমাধব শীল আকণ্ঠ পানে
দ্বিপ্রাহরিক রাত্রি গত\\ ০১ টা - ০৭ রাহুকাল নয়
মহেন্দ্রক্ষণ , তিল তুলসী গঙ্গাজল আছে আছে আছে
কূল গুরু স্মরণে
এসো সময় নেই
ধুস পা লেগেছে তোমার , বয়ে গেছে
আজ এসব ভাবতে হয় ?
স্মরণ করো প্রিয়ে কার্তিকেয়
বুঝছো তো হে হে হে বংশ টাকেও তো বাঁচিয়ে রাখতে হয় !

পারিনি হন্তক হতে ,
দশ মাস গল্প করে গেছেন যে সব অতীত মা
ঈশ্বর , সেখানে লিঙ্গভেদক কুটিলচক্রী দেখিনি
সৃষ্টি কবেই মান্যতা দিয়েছে বিভেদের ?
দ্যাখো আমি কবিতা লিখছি
ছাগলের ঘাস কাটছে কানাই !







একচল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ

৪১ ছুড়ে দেওয়া শব্দভেদী তৃণ ফেরেনা শূন্য হাতে
কিছুটা রক্ত তাতে লেগে থাকে ; রক্তই দিতে পেরেছে জীবনে
নেশা অথবা শান্তি নিশান , অশোক পেয়েছেন জীবন অ-সুখে

৪২ মনে রাখেনা কেউ কারুর অনাহারী দৃশ্য ; মনে রয়ে যায়
নিজস্ব একাকীত্ব সেই সব সোনালী ধানের গুচ্ছ , আমি সিওললিয়নের
এক প্রাণ আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি আমলাশোল , সাদা হাউসে মহাভোজ ।

৪৩ বরমিয়ামে স্তূপাকার জঞ্জাল ; এখানে ওখানে নরখাদকের বজ্জ্য ,
ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন ইতিহাস মন্দির চুড়ায় ভক্ত , আলী কালী
মিশে গেলে শকুনের ভাড়ার শূন্য , রক্ত হয়েছে পথ্য ।

৪৪ বধ্যিস্নু গ্রাম ছিল আমাদের আঁকরে স্বর্ণখনি ; হেসে খেলে
সন্তান উৎপাদন পুতুল নাচে মেতেছিল বেশ ; এখানকার স্বর্ণ দিয়ে কংক্রিটে
মাতল যখন নগর নাগরিক ; হাফানিতে ধুঁকছে তখন গাঁ ।

৪৫ মাঝে মাঝে নেমে আসেন কিছু ঈশ্বর মাটির প্রয়োজনে ; আর সেই অবকাশে
আমরা সমৃদ্ধ করে নিই কিছু কথা ; জনতাভীরে পাঠ করে পাড়ানি তুলে নিয়ে
সাজিয়ে নিই অঙ্গ ; ঈশ্বর বোঝেন সব ; ফাঁকি দিয়েছি নিজেকেই







০১

অবশিষ্ট মেঘ ঘর সন্ধানী, অকাতর ছিটানো আত্মকথন
পরিব্রাজকের তখন থেকে
চুরি হয়ে কিছু আগুনখোর মুখোশ
সাঁকোর ওপাড়ে সব , বুনো বাগদী বৌ
মহিষবাথান গীতবিতানের শিক্ষক যতক্ষণ
খাদ্যর লাইনে
এক দেশ এক দ্রোহকাল !

০২

শিলালিপি জ্যান্ত জ্যান্ত ইতিহাস
মোটা জীবনের দলিল ;
শাঁকচুন্নি উলঙ্গ ভুত
বলদের পায়ের ইতিকথা
আমার বাবার বুলেটক্ষত দেখিনি কোথাও ,
পরিমার্জিত সংস্করণে
ধুয়ে গেছে জীবন
বদন্যতার কথোপকথনে আমরা নেই
মঙ্গল শঙ্খধ্বনি
লিখে রাখেনি কেউ !

০৩

কোন শব্দ ইতিহাস হবে অনুগ্রহে "ধি"রাজের
শকুনও বোঝে না মরক
আঙ্গুলের ফাঁক গলে যে দুই চার টুকরো শস্য
ক্ষুধা বাড়ে
শ্মশান উপচে ভীরে
শেয়ালের পয়ান্ত মাস
দুই হাতা খিচুড়ি দিয়ে বালক সেবা
ঈশ্বর অন্ধ ছিলেন
সন্তান জন্মান্ধ এই অমাবস্যায় !







অদ্ভুত

অদ্ভুত ফারটিলাইজারের গন্ধে ময়ময় পুকুরপাড়
সাদা হাঁসের ডানা পেয়েছে রৌদ্রের বিজ্ঞাপনের
অধিকার......
আকস্মৎ গৃহস্ত সুখ ক্ষয়ে যাওয়া মোমবাতির নিস্তব্ধতায়
মৃতপ্রায় , অধিকারে জন্ম নেওয়া কাঠঠোকরা'র ঠোটে
চিরন্তন শাশ্বত বিশ্বাস ,
ভগ্নপ্রায় চিলেকোঠা ,রঙচটা জীর্ণ দরজা হাতল
এখানেই বাল্য বন্দী আছে সাতাস বছর ।
পশ্চিমের বারান্দায়
শীতের রোদ নাচে সুর তুলে
সূর্যারঙ মাখিয়েছে সামনের শিমুলের গায় ,
ছিনেজোকের সন্ধানী দৃষ্টিতে মিলন পিয়াসা জীবনও
একদলা রক্ত ......
সজীব কুয়াশার প্রলেপ ঢেকে গায়ে
জলের অনুচ্ছেদে ভালবাসার প্রাপ্তিস্বীকার
জীবনের ,
অন্ধ শীত ঘুম ছেড়ে স্বরোষে ডানা ঝাপটিয়ে
গাংচিল উষ্ণতা খোঁজে বৈতরণী তীরে ,
গুপ্ত ইতিকথা ইতিহাসের , ভগ্ন মন্দির চুড়ো ,
"দোহা " শুধু বানী নয়
যে পেয়েছে তার অধিকার সেই জেনেছে জীবনের মহিমায় !
কম্বলে শীত লাগা ভয়াল পৌষ দু'পায়ে ছুরে ফেলে
তিমির অন্ধকারে
একবার প্রাণভরে প্রশ্বাস - নিশ্বাস
বুকের হাপর টানা কমলো বোধহয় ... কোন সে রোগ এ , জীবনে'র ?
শুধু শরীর নয় মনের অভ্যন্তরস্ত
গুপ্ত স্থান থেকে উঠে আসে হাহাকার ...বলে যায় আনমনে
প্রেম'ই সব টুকুনয় ,
অতুলনীয় পারদর্শীতায় সৌভাগ্যবান কিছু জানোয়ার
প্রজাতিকে করেছে নিয়মের শিকার
হরিনের পা শেষবার পরিক্রমণ ... পরেছে চক্রব্যূহে ,
সুনিপুন হাতে মরণ ফাঁদ পাতা , রসদ আটকে ধাওয়া করা
নিয়মে , এক'ই পথ এক'ই গতি এক'ই আবেগে
এক'ই নিশ্চিত মৃত্যু ,
এই বিশ্বাসে নেই কোন মুক্তি , সৃষ্টি নিয়ম বৃদ্ধাঙ্গুলের
ব্যাঙ্গে আরক্ত হয়েও, রাগ ,অভিমান ,আক্রোশে
এক'ই তালে বইছে
বিবর্তনের এটাই কি
লুকানো অনন্ত সত্য !
পুত্র , মুত্র , বীর্য , সৃষ্টি আদিরস , এক ই অঙ্গে ত্রিধারা ?
যৌবন জ্বালিয়ে যোনী'তে
বার বার মন ঘসা শুকনো ঘাসে ?     









আধুনিক কবিতা ০৬
তিলোত্তমা ও এক নারী

পায়রার মন খারাপের ডানা থেকে ভেসে গেল
প্যারিস সুগন্ধি
ঝুল বারান্দায় আদর কান্না
পোয়াতি মেঘের ক্ষিদে নিয়ে
অদ্ভুত সোহাগী জ্যোৎস্না
মোরগ ঝুঁটিতে নিয়ে চাঁদ
আমি আস্ত মরদ
মহুয়া বন ধর্ষক
পয়ান্ত রতিকাল ।

মাধবীলতা
তুই জানিস
অস্ত্র বিদ্যাও শিখেছিল মুনি শকুনি
কুরুক্ষেত্রে উৎপাত
গভীরতা নয়
স্রোত চাই নদ
ভাসিয়ে নেবার কি ভয়ানক স্বাদ !

দাঁড়াসনি তুই ম্যাঘ দেখে , মেয়ে
চুম্বনে ঘাসফুলে কি পাস ?
মাষ নিয়ে থাক !

অবশেষ চার চাকার গাড়িগুলো চাকার
কান্না বোঝেনা
না বোঝে আর্তনাদ
ছুটে চলে কোলকাতায় মালিক পক্ষের ঈশারায় ...
বুড়ো আইনের কানঘেঁসে   














No comments:

Post a Comment